বিআইডব্লিউটিসিতে ‘বঙ্গবন্ধু কর্ণার’ উদ্বোধন
‘দেশ গঠনে বঙ্গবন্ধু পরিবারের আত্মত্যাগ বিশ্বে অদ্বিতীয়’
যুগান্তর প্রতিবেদন
প্রকাশ: ০৯ আগস্ট ২০২১, ০৯:১২ এএম
নৌপরিবহন প্রতিমন্ত্রী খালিদ মাহমুদ চৌধুরী বলেছেন, বঙ্গবন্ধুর সাড়ে তিন বছর শাসনামল উন্নয়নের এক বিস্ময়। সেই সাড়ে তিনবছর সময়কালকে স্বাধীনতাবিরোধীরা সব সময় কলঙ্কিত করার চেষ্টা করেছে। বঙ্গবন্ধুর শাসনামলের সেই সাড়ে তিন বছরের সময়ের গবেষণায় রাষ্ট্রবিজ্ঞানীরা বিস্ময় প্রকাশ করেন। কোন শাসনতন্ত্র ছিলনা। রক্তাক্ত বাংলাদেশ। রাস্তাঘাট, ব্রিজ, কালভার্ট নাই। ধ্বংসস্তুপে দাঁড়িয়ে বঙ্গবন্ধু বাংলাদেশকে শাসনতন্ত্র দিয়েছেন।
তিনি বলেন, ৪৭ সাল থেকে বঙ্গবন্ধুর সিদ্ধান্তের কোন ভুল নেই। ’৭০ এর নির্বাচনে বাংলার মানুষ স্বাধীনতার পক্ষে ম্যান্ডেট দিয়েছে। বঙ্গবন্ধুর নেতৃত্বে ’৭১-এ মহান মুক্তিযুদ্ধের মাধ্যমে বাংলাদেশ স্বাধীন হয়েছে। সাম্প্রতিক সময়ে স্পেনের কাতালিয়ানরা স্বাধীনতার পক্ষে ভোট দিয়েছিল। কিন্তু তাদের নেতা পালিয়ে গেছে। বঙ্গবন্ধুর কারণেই আমরা স্বাধীন সার্বভৌম বাংলাদেশ পেয়েছি।
প্রতিমন্ত্রী সোমবার রাজধানীর বাংলাদেশ অভ্যন্তরীণ নৌপরিবহন কর্পোরেশন (বিআইডব্লিউটিসি) কার্যালয়ে জাতীয় শোক দিবস উপলক্ষে ‘বঙ্গবন্ধু কর্ণার’ উদ্বোধন ও বৃক্ষরোপণ শেষে জাতীয় শোক দিবসের আলোচনায় সভায় প্রধান অতিথির বক্তৃতায় এসব কথা বলেন।
খালিদ মাহমুদ চৌধুরী বলেন, দেশ গঠনে জাতির পিতা বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিবুর রহমানের পরিবারের আত্মত্যাগ বিশ্বে অদ্বিতীয়। বঙ্গবন্ধু পরিবারের মতো পৃথিবীর দ্বিতীয় কোন রাজনৈতিক পরিবার দেশ গঠনে এত আত্মত্যাগ করেনি।
জিয়া, এরশাদ ও খালেদা জিয়া বঙ্গবন্ধু পরিবারের বিরুদ্ধে বিভিন্ন গুজব রটিয়েছে। জিয়ার প্রথম কাজই ছিল বঙ্গবন্ধু পরিবারের চরিত্র হনন করা। মুক্তিযুদ্ধের বিজয় যেন প্রতিষ্ঠিত না হয়, তার জন্য কত ষড়যন্ত্র, প্রতিবিপ্লবের চেষ্টা করা হয়েছে। পঁচাত্তর পরবর্তী সময়ে গুজব ছড়িয়ে দেয়ার ক্ষেত্রে তারা ব্যাপক পারদর্শিতা দেখিয়েছে। যার খেসারত দিতে হয়েছে বাংলাদেশকে।
এ কারণে বাংলাদেশ অন্ধকার থেকে অন্ধকারতম হয়েছিল। দারিদ্র্যে জর্জরিত হয়েছিল। এই দারিদ্র্য বিক্রি করে অনেকে পদক পেয়েছে। কিন্তু বাংলাদেশের মানুষের ভাগ্যের উন্নয়ন হয়নি। গুটিকয়েক মানুষের ভাগ্যের উন্নয়ন হয়েছে।
প্রতিমন্ত্রী বলেন, বঙ্গবন্ধু বেঁচে থাকলে ৩৫ বছর আগেই বাংলাদেশ স্বপ্নের জায়গায় পৌঁছে যেত। বাংলাদেশকে যে জায়গায় নিয়ে যাবার সংগ্রামে এখন লিপ্ত, ১৫ আগস্টের ঘটনা না হলে এ সংগ্রাম করতে হতোনা। পঁচাত্তরে ১৫ আগস্টের ঘটনার মধ্য দিয়ে উন্নত বাংলাদেশের স্বপ্নকে অন্ধকারে ঠেলে দেয়া হয়েছে।
সম্ভাবনার দরজা বন্ধ করে দিয়েছে। দারিদ্র্য ও বৈষম্যের কোলে ঠেলে দিয়ে, ইতিহাসকে বিকৃত করে বাংলাদেশকে লন্ডভন্ড করে দেয়া হয়েছে। বঙ্গবন্ধুকে যখন হত্যা করা হয়, বাংলাদেশ তখন স্বল্পোন্নত দেশ ছিল। জিডিপি এখনকার চেয়ে বেশি ছিল।
খালিদ মাহমুদ চৌধুরী বলেন, বঙ্গবন্ধুকে হত্যা করে দেশে বিশৃঙ্খলা সৃষ্টি করা হয়েছিল। বাংলাদেশের মানুষের জীবনের কোন নিরাপত্তা ছিলনা। জেলখানায় নিরাপত্তা নাই, প্রকাশ্য জনসভায় গ্রেনেড হামলা। তখন আইনের শাসন ছিলনা; বাংলা ভাই, শায়খ আব্দুর রহমানরা নিজেদের শাসন ব্যবস্থা কায়েম করেছিল। এরকম একটা জায়গা থেকে গত ১২ বছরে বঙ্গবন্ধু কন্যা দেশরত্ন শেখ হাসিনা বাংলাদেশকে সফলতার চূড়ায় নিয়ে গেছেন। বঙ্গবন্ধু যে লক্ষ্য নিয়ে দেশ গঠন করেছিলেন, সে সুন্দর জায়গায় আমরা পৌঁচাচ্ছি।
তিনি বলেন, প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা আজকে বাংলাদেশ বা আঞ্চলিক না; আন্তর্জাতিক নেতায় পরিণত হয়েছেন। প্রধানমন্ত্রী বিশ্বে মেধাবী নেতৃত্বে আসন করে নিয়েছেন। অনেক বড় বড় ধনী দেশ এ করোনার সময়ে তাদের দরজা বন্ধ করে দিয়েছিল। বাংলাদেশের দরজা বন্ধ হয়নি। শেখ হাসিনার এ নেতৃত্বই আমাদের স্বপ্নের গন্তব্যে পৌঁছাবে।
বিআইডব্লিউটিসি’র চেয়ারম্যান সৈয়দ মো. তাজুল ইসলামের সভাপতিত্বে অন্যান্যের মধ্যে নৌপরিবহন সচিব মোহাম্মদ মেজবাহ্ উদ্দিন চৌধুরী, বিআইডব্লিউটিসির এজিএম খন্দকার মহিউদ্দিন রতন, সিবিএ নেতা মহসিন ভূঁইয়া এবং মির্জা মোস্তাফিজুর রহমান বক্তব্য রাখেন। পরে বঙ্গবন্ধুসহ ১৫ আগস্টে শহীদদের আত্মার মাগফেরাত কামনা এবং দেশ ও জাতির অগ্রগ্রতি জন্য দোয়া করা হয়।