Logo
Logo
×

রাজনীতি

এমপি ইসরাফিল রক্তাক্ত জনপদ শান্ত করেছিলেন

Icon

আব্বাস আলী, নওগাঁ প্রতিনিধি

প্রকাশ: ২৭ জুলাই ২০২০, ০১:৪৫ এএম

এমপি ইসরাফিল রক্তাক্ত জনপদ শান্ত করেছিলেন

এমপি ইসরাফিল আলম। ছবি: যুগান্তর

রানীনগর ও আত্রাই উপজেলা নিয়ে গঠিত নওগাঁ-৬ আসন। জঙ্গি এলাকা হিসেবে একসময় এ দুই উপজেলা পরিচিত ছিল। আতঙ্কের অপর নাম বাংলাভাইয়ের অধ্যুষিত এলাকা। যার নেতৃত্বে ছিলেন সিদ্দিকুর রহমান ওরফে বাংলাভাই। চার জেলা নওগাঁ, নাটোর, পাবনা ও রাজশাহী জেলার সেন্টার পয়েন্ট এ আত্রাই উপজেলা।

আর এ কারণে এ উপজেলায় সবচেয়ে বেশি অপরাধ সংগঠিত হতো। প্রকাশ্যে দিবালোকে জঙ্গি নিধনের নামে নিরীহ মানুষকে হত্যা করে গাছে ঝুলিয়ে রাখা হতো। কুপিয়ে খণ্ড খণ্ড করে মরদেহ মাঠঘাটে ছড়িয়ে রাখার মতো বিভীষিকাময় ও লোমহর্ষক ঘটনা হয়ে থাকত। ভয়ে সবসময় আতঙ্কের মধ্যে থাকতেন এ দুই উপজেলার মানুষ।

তবে ইসরাফিল আলম বিজয়ী হওয়ার পর একসময়ের রক্তাক্ত জনপদ হিসেবে খ্যাত এ দুই উপজেলায় শান্তির সুবাতাস বইতে থাকে। সর্বস্তরের মানুষের জানমালের নিরাপত্তা নিশ্চিত হয়।

শান্তিতে ঘুমাতে পেরেছেন এ দুই উপজেলার মানুষ। সন্ত্রাস ও জঙ্গিবাদ নির্মূল করে এ দুই উপজেলাকে শান্তির জনপদে রূপান্তর করেছেন বলে জানিয়েছেন তার সমর্থকরা।

২০০১ সালে বিএনপি-জামায়াত জোট সরকারের সময়ে জামায়াতে মুজাহিদিন বাংলাদেশ (জেএমবি) উত্থান ঘটে। জেএমবি দখল করে জেলার আত্রাই, রানীনগর উপজেলা, নাটোরের বাগমারা ও রাজশাহীর একাংশ।

১৯৯১-৯৬ সালে বিএনপি থেকে মনোনয়ন নিয়ে নির্বাচনে বিজয় হন সাবেক গৃহায়ণ ও গণপূর্ত প্রতিমন্ত্রী আলমগীর কবীর। তার প্রতিদ্বন্দ্বী ছিলেন সাবেক এমপি মুক্তিযোদ্ধা ওহিদুর রহমান (১৯৮৬ সাল)।

২০০১ ও ২০০৬ সালে পুনরায় আলমগীর কবীর বিজয়ী হন। সেই সময় তার প্রতিদ্বন্দ্বী ছিলেন ইসরাফিল আলম।

২০০৬ সালে বিএনপি-জামায়াত জোট সরকারের শেষের দিকে আলমগীর কবীর এলডিপিতে যোগ দেন। একই বছরে এলডিপি থেকে তিনি পদত্যাগ করেন।

২০০৮ সালে আওয়ামী লীগ থেকে নৌকা প্রতীকে মনোনয়ন পেয়ে তৎকালীন ঢাকা মহানগর শ্রমিক লীগের সাধারণ সম্পাদক ইসরাফিল আলম সংসদ সদস্য হিসেবে বিজয়ী লাভ করেন। তার প্রতিদ্বন্দ্বী ছিলেন সাবেক প্রতিমন্ত্রী আলমগীর কবীরের ছোট ভাই বিএনপির কেন্দ্রীয় কমিটির সদস্য মুক্তিযোদ্ধা আনোয়ার হোসেন বুলু।

এর পর ২০১৪ সালে দশম জাতীয় সংসদ নির্বাচনে পুনরায় বিনা প্রতিদ্বন্দ্বিতায় নির্বাচিত হন ইসরাফিল আলম। এর পর একাদশ জাতীয় সংসদ নির্বাচনে সাবেক প্রতিমন্ত্রী আলমগীর কবীরকে পরাজিত করে বিজয়ী হন। মূলত এ আসনটি চারবার বিএনপির অধীনে ছিল।

২০০৮ সালের পর থেকে অদ্যাবধি এ আসনটি আওয়ামী লীগের দখলে রয়েছে। ইসরাফিল আলম বিজয়ী হওয়ার পর একসময়ের রক্তাক্ত জনপদ হিসেবে খ্যাত এ দুই উপজেলায় শান্তির সুবাতাস বইতে থাকে।

রানীনগর উপজেলা আওয়ামী লীগের যুগ্ম সম্পাদক রেজাউল ইসলাম বলেন, ১৯৭১ সালে বাংলাদেশ স্বাধীন হলেও ২০০৮ সালে নৌকার বিজয়ের মধ্য দিয়ে প্রকৃতভাবে রানীনগর-আত্রাই স্বাধীন হয়।

ইসরাফিল আলম নির্বাচিত হওয়ার পর এলাকার মানুষ স্বস্তির নিঃশ্বাস ফেলেছিলেন। তিনি মানুষের সঙ্গে মিশেছেন এবং ভালোবেসেছেন। এ কারণে সর্বস্তরের মানুষও তাকে ভালোবেসেছিলেন। আমি ১৯৯৮ সাল থেকে তার পাশে ছিলাম। তিনি একজন অমায়িক মানুষ ছিলেন।

সোমবার সকাল সোয়া ৬টার দিকে ঢাকার স্কয়ার হাসপাতালে চিকিৎসাধীন মৃত্যুবরণ করেন এমপি ইসরাফিল আলম। তিনি স্ত্রী, দুই মেয়ে ও এক ছেলেসহ অসংখ্য গুণগ্রাহী রেখে গেছেন।

১৯৬৭ সালে রানীনগর উপজেলার গোনা ইউনিয়নের ঝিনা গ্রামে জন্মগ্রহণ করেন।

Jamuna Electronics

Logo

সম্পাদক : সাইফুল আলম

প্রকাশক : সালমা ইসলাম