Logo
Logo
×

রাজনীতি

আ’লীগের পূর্ণাঙ্গ কমিটি ঘোষণা হতে পারে সন্ধ্যায়

Icon

যুগান্তর রিপোর্ট

প্রকাশ: ২৪ ডিসেম্বর ২০১৯, ০৩:০১ পিএম

আ’লীগের পূর্ণাঙ্গ কমিটি ঘোষণা হতে পারে সন্ধ্যায়

আওয়ামী লীগের ৮১ সদস্যের কার্যনির্বাহী কমিটির ৪২ পদের নাম ঘোষণা করা হয়েছে। বাকি রয়েছে ৩৯ পদ। এর মধ্যে সম্পাদকমণ্ডলীতে ১০, কোষাধ্যক্ষ ও নির্বাহী কমিটির ২৮টি পদ শূন্য আছে। এর বাইরে উপদেষ্টামণ্ডলীতে ফাঁকা আছে ১০টি পদ। এই পদগুলোতে কারা আসছেন তা জানা যেতে পারে আজ। সন্ধ্যায় গণভবনে আওয়ামী লীগ সভাপতি ও প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনার সভাপতিত্বে নতুন সভাপতিমণ্ডলীর সভা শেষে এ কমিটি ঘোষণা করা হতে পারে।  

আওয়ামী লীগের এবারের কমিটিতে ছিল না তেমন চমক। তবুও আগ্রহের কমতি নেই অবশিষ্ট ৩৯ পদ ঘিরে। কি হয় তা দেখার জন্য অপেক্ষায় সবাই। কেন্দ্রীয় কার্যনির্বাহী কমিটির ২৮ সদস্যপদে বেশ কিছু নতুন নাম আসতে পারে।

একই সঙ্গে ৯ সম্পাদক ও দুই উপ-সম্পাদক পদেও দেখা যেতে পারে নতুন মুখ। এমন ইঙ্গিত দিয়েছেন দলের সাধারণ সম্পাদক। রোববার এক সংবাদ সম্মেলনে ওবায়দুল কাদের বলেন, মঙ্গলবার ঘোষণা করা হতে পারে আওয়ামী লীগের কেন্দ্রীয় পূর্ণাঙ্গ কমিটি। সে পর্যন্ত সবাইকে অপেক্ষা করতে হবে। 

রেওয়াজ ও গঠনতন্ত্র অনুযায়ী কাউন্সিলের পর প্রেসিডিয়াম সদস্যদের সঙ্গে বৈঠক করে আওয়ামী লীগের কার্যনির্বাহী কমিটির সদস্যপদে নেতা মনোনীত করার বিধান আছে। গঠনতন্ত্রের ১৯ ধারায় এ বিষয়ে বলা হয়েছে- ‘বাংলাদেশ আওয়ামী লীগের সভাপতি গঠনতন্ত্রের ১৮ ধারায় বর্ণিত কার্যনির্বাহী সংসদের ২৮ জন সদস্য সভাপতিমণ্ডলীর সহিত আলোচনাক্রমে মনোনয়ন দান করিবেন এবং উক্ত মনোনয়ন কাউন্সিল অধিবেশন সম্পন্ন হওয়ার ২১ দিনের মধ্যে ঘোষিত হইবে।’

দলীয় সূত্রে জানা গেছে, কার্যনির্বাহী কমিটির সদস্যসহ কেন্দ্রীয় কমিটির ফাঁকা রাখা অন্যান্য পদে মনোনয়ন দিতে আগামীকাল সন্ধ্যা সাড়ে ৬টায় প্রধানমন্ত্রীর সরকারি বাসভবন গণভবনে আওয়ামী লীগের নতুন কমিটির বৈঠক ডাকা হয়েছে।

এতে সভাপতিত্ব করবেন দলীয় সভাপতি শেখ হাসিনা। ওই বৈঠকের পর পূর্ণাঙ্গ কমিটি ঘোষণা করা হবে। পূর্ণাঙ্গ কমিটি ঘোষণা হওয়ার পর নবনির্বাচিত নেতারা টুঙ্গিপাড়ায় যাবেন জাতির পিতা বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিবুর রহমানের সমাধিতে শ্রদ্ধা জানাতে।

এ বিষয়ে আওয়ামী লীগের প্রেসিডিয়ামের নতুন সদস্য আবদুর রহমান রোববার বিকালে যুগান্তরকে বলেন, প্রেসিডিয়ামের প্রথম বৈঠকে মূলত কমিটি সংক্রান্ত ব্যাপারেই আলোচনা হবে। এ ছাড়া দায়িত্ব বণ্টন এবং কীভাবে টিমওয়ার্ক গড়ে তোলা যায়, তা নিয়ে আলাপ-আলোচনা হবে। সংগঠনকে কীভাবে তৃণমূল থেকে নতুন উদ্যমে সাজিয়ে-গুছিয়ে আনা যায় সে আলোচনা হবে।

নীতিনির্ধারণী পর্যায়ের নেতারা বলছেন, যারা দীর্ঘদিন দলে কাজ করেও গুরুত্বপূর্ণ দায়িত্ব পাননি, তারা এবারের কেন্দ্রীয় কমিটিতে সদস্যপদে দায়িত্ব পেতে পারেন।

এ বিষয়ে জানতে চাইলে আওয়ামী লীগের প্রেসিডিয়ামের এক সদস্য যুগান্তরকে বলেন, ঘোষিত আংশিক কমিটিতে খুব বেশি পরিবর্তন না হলেও কার্যনির্বাহী সদস্যপদে বেশ কিছু নতুন মুখ আসবে। কারণ কার্যনির্বাহী কমিটির সদস্য হচ্ছে আওয়ামী লীগের কেন্দ্রীয় নেতৃত্বের প্রথম ধাপ।

আওয়ামী লীগের ৫১ সদস্যের উপদেষ্টা পরিষদের মধ্যে ৪০ পদের নাম ঘোষণা করা হয়েছে; বাকি রয়েছে ১১টি পদ। উপদেষ্টামণ্ডলীতে স্থান পেতে বাদপড়া জ্যেষ্ঠ নেতারা নানাভাবে দেনদরবার করছেন। অনেকে এটিকে প্রেস্টিজ ইস্যু হিসেবে নিয়েছেন। 

বর্তমান মন্ত্রিসভার দুই মন্ত্রী, চার প্রতিমন্ত্রী, দুই উপমন্ত্রীসহ আগের কমিটির ১০ প্রভাবশালী নেতার নাম নেই ঘোষিত আংশিক কমিটিতে। এটি নিয়ে দলীয় ফোরামে আলোচিত হচ্ছে। কেউ কেউ বলছেন, সরকার ও দল আলাদা করার অংশ হিসেবে তাদের বাদ দেয়া হয়েছে কমিটি থেকে। তাদের সরকারে মনোযোগী হওয়ার বার্তা দেয়া হয়েছে। আবার কেউ কেউ বলছেন, পূর্ণাঙ্গ কমিটি এখনও ঘোষণা করা হয়নি। পূর্ণাঙ্গ কমিটিতে তাদের রাখা হতে পারে। সে কারণে তারাও পূর্ণাঙ্গ কমিটিতে তাদের নাম দেখার অপেক্ষায়।

এদিকে আওয়ামী লীগের সভাপতিমণ্ডলীর এক সদস্য জানিয়েছেন, পূর্ণাঙ্গ কমিটির সাংগঠনিক সম্পাদক পদে কোনো মন্ত্রী, প্রতিমন্ত্রী কিংবা উপমন্ত্রীকে রাখা হবে না। কারণ সাংগঠনিক পদে যারা দায়িত্ব পান, তাদের সারা দেশ চষে বেড়াতে হয়। মন্ত্রিত্বের গুরুদায়িত্ব পালনের পর এই পদে সঠিকভাবে দায়িত্ব পালন করা সম্ভব নয় বলে মনে করেন তিনি।  

সম্মেলনের আগে বারবার বলা হয়েছে, এবারের কমিটিতে তরুণ ও সাবেক ছাত্রলীগ নেতাদের স্থান দেয়া হবে। কিন্তু আংশিক কমিটিতে সে কথার প্রতিফলন ঘটেনি। তাই পাঁচটি বিষয়ভিত্তিক সম্পাদক, তিনটি সাংগঠনিক সম্পাদক এবং উপদফতর ও উপপ্রচার সম্পাদকের পদ পেতে সাবেক ছাত্রলীগ নেতারা আশায় আছেন। তারা রীতিমতো দৌড়ঝাঁপও করছেন। 

এর মধ্যে সামাজিক যোগাযোগের মাধ্যমে ছাত্রলীগের কেন্দ্রীয় সাবেক নেতারা নিজেদের ‘অবদানের’ কথা প্রচার শুরু করেছেন। বিশেষ করে এক–এগারোর সময় কার কী ভূমিকা ছিল, সেসব ফেসবুকে প্রচার করা হচ্ছে। 

আওয়ামী লীগের কেন্দ্রীয় নির্বাহী সদস্যদের ২৮ পদের মধ্যে আগের কমিটিতেই দুটি পদ শূন্য ছিল। এবার সেই কমিটি থেকে তিন নেতার পদোন্নতি হয়েছে। ফলে পাঁচজন নতুনকে নেয়ার সুযোগ আছে। ২০১৬ সালে ১২ জন নির্বাহী সদস্য প্রথমবার গঠিত কেন্দ্রীয় কমিটিতে স্থান পান। বাকিদের একটি বড় অংশই গুরুত্বপূর্ণ সংসদ সদস্য।

আওয়ামী লীগের একাধিক নেতার সঙ্গে কথা বলে জানা গেছে, জেলা পর্যায়ের কিছু ত্যাগী ও প্রবীণ নেতাকে সব সময়ই কেন্দ্রীয় কমিটিতে স্থান দেন দলীয় প্রধান শেখ হাসিনা। বিশেষ করে যেসব জেলা নেতার দলে ভূমিকা আছে, কিন্তু মন্ত্রী–এমপি করা সম্ভব হয়নি। এবারও তাদের মূল্যায়ন করা হতে পারে।

এ বিষয়ে আওয়ামী লীগের সভাপতিমণ্ডলীর সদস্য কাজী জাফরউল্যাহ বলেন, নবীন–প্রবীণের সমন্বয়েই আওয়ামী লীগের কেন্দ্রীয় কমিটি পূর্ণ করা হবে। ৩৯ পদ শূন্য আছে, সেগুলোতে তরুণ মুখ থাকবে। সাংগঠনিক সম্পাদক পদে কোনো মন্ত্রী থাকবেন না বলে জানান তিনি। 

এদিকে আলোচনা থাকলেও এবারও শেখ হাসিনা ছাড়া আওয়ামী লীগের কেন্দ্রীয় কমিটিতে আসছেন না বঙ্গবন্ধু পরিবারের অন্য কোনো সদস্য। এ বিষয়ে এক প্রশ্নের জবাবে রোববার ওবায়দুল কাদের বলেছেন, শেখ রেহানা, রেদওয়ান মুজিব সিদ্দিক ববি, সায়মা ওয়াজেদ পুতুল, সজীব ওয়াজেদ জয়- কেউই এখনই রাজনীতিতে আসতে আগ্রহী নন। শেখ পরিবারের অন্য কেউ রাজনীতিতে আসবে বলেও ইঙ্গিত পাওয়া যায়নি।  

Jamuna Electronics

Logo

সম্পাদক : আবদুল হাই শিকদার

প্রকাশক : সালমা ইসলাম