এই মুহূর্তে সংঘাতে জড়াতে চাই না: মির্জা ফখরুল
যুগান্তর রিপোর্ট
প্রকাশ: ১০ ডিসেম্বর ২০১৯, ০২:৩৩ এএম
‘র্যালির অনুমতি নেই, এমতাবস্থায় র্যালির চেষ্টা করলেই আইনানুগ ব্যবস্থা নেয়া হবে’— পুলিশের এমন বক্তব্যের পর বিএনপির মহাসচিব মির্জা ফখরুল ইসলাম আলমগীর বলেছেন, ‘আমরা এই মুহূর্তে কোনো সংঘাতে জড়াতে চাই না।’
যদিও কিছুদিন আগে রাজধানীর নয়াপল্টনে আয়োজিত এক সমাবেশে বিএনপির মহাসচিব বলেছিলেন- ‘এরপর আমরা আর অনুমতির অপেক্ষায় থাকব না। আমরা আমাদের মত করে কর্মসূচি পালন করব।’
মির্জা ফখরুল অনুমতি না নেয়ার কথা বললেও আন্তর্জাতিক মানবাধিকার দিবস উপলক্ষে আজ র্যালি করার অনুমতি চাওয়া হয়। এদিন সকাল ১০টায় র্যালি শুরু হওয়ার কথা থাকলেও এর আগেই কয়েক শ’ পুলিশ সদস্য নয়াপল্টন কারযালয়ের সামনে অবস্থান নেয়। পুলিশের পক্ষ থেকে জানানো হয়, আজ র্যালি করা যাবে না।
পুলিশের এই বিপুল উপস্থিতি সম্পর্কে মতিঝিল জোনের এডিসি এনামুল হক মিঠু গণমাধ্যমকে বলেন, ‘আন্তর্জাতিক মানবাধিকার দিবস উপলক্ষে তারা (বিএনপি) র্যালির জন্য আবেদন করেছিল। আজ সব অফিস আদালত খোলা। রাজধানীতে তীব্র যানজট। এর মধ্যে র্যালি করলে মানুষের দুর্ভোগ হবে। পরিপ্রেক্ষিতে আগে থেকেই বিএনপিকে জানানো হয়েছে আজ কোনো কর্মসূচির অনুমতি দেয়া হবে না।
‘এরপরও যদি তারা র্যালি করতে চায়, তাহলে আইনানুগ ব্যবস্থা নেয়া হবে’— যোগ করেন এনামুল হক মিঠু।
পুলিশ কর্মকর্তার এই বক্তব্যের পর নয়াপল্টন কার্যালয়ে সাংবাদিকদের ব্রিফ করেন বিএনপির মহাসচিব মির্জা ফখরুল ইসলাম আলমগীর।
তিনি বলেন, ‘আপনারা নিজেরাই দেখেছেন যে, বিএনপির অফিসের সামনে কী রকম একটা যুদ্ধাবস্থা তৈরি করে রেখেছে পুলিশ। আমরা জাতিসংঘ ঘোষিত আন্তর্জাতিক মানবাধিকার দিবস উপলক্ষে এখান থেকে একটি র্যালি করার ঘোষণা দিয়েছিলাম। আমরা সেইভাবে প্রস্তুতিও নিয়ে রেখেছি। আমাদের বলা হয়েছে- নিচে নামলেই আপনাদের বিরুদ্ধে ব্যবস্থা নেব এবং আইনানুগ ব্যবস্থা নেব।’
বিএনপি মহাসচিব বলেন, আমরা এই মুহূর্তে কোনো সংঘাতে জড়াতে চাই না। আমরা আমাদের অধিকারগুলোর কথা বলছি।
মিডিয়াকে উদ্দেশ্য করে তিনি বলেন, আপনারা দেখেছেন যে, বিভিন্ন জায়গায় সভা করতে গেলে আমাদের অনুমতি নিতে হয়, সভা করতে দেয়া হয় না। এমনকি আমাদের সাংগঠনিক কার্যক্রম করতে গেলেও বাধা দেয়া হয়। কিন্তু আজকের বিষয়টি তো দলীয় রাজনীতির ঊর্ধ্বে, আন্তর্জাতিকভাবে স্বীকৃত একটি বিষয়। সেই মানবাধিকারকে রক্ষা করবার জন্য, সোচ্চার হওয়ার জন্য আজকের এই কর্মসূচি দিয়েছিলাম।
বাংলাদেশে প্রতি মুহূর্তে মানবাধিকার লংঘন হচ্ছে অভিযোগ করে মির্জা ফখরুল বলেন, ‘গত ১০ বছরে প্রায় দেড় হাজারের ওপরে বিচারবহির্ভূত হত্যাকাণ্ড হয়েছে। এটা ওরা নাম দিয়েছে বন্দুক যুদ্ধে। আমাদের হিসাবমতে এটা প্রায় ২ হাজারের বেশি।’
মির্জা ফখরুল বলেন, ‘শুধু রাজনৈতিক ভিন্নমত থাকার কারণে ৩৫ লাখ লোকের বিরুদ্ধে মামলা দেয়া হয়েছে। গুম হয়ে গেছে প্রায় ১ হাজার মানুষ। আজকে সমগ্র বাংলাদেশে মানবাধিকার বিষয়টি সব চেয়ে বড় চ্যালেঞ্জ হয়ে দাঁড়িয়েছে। এখানে ভিন্ন মত যিনিই পোষণ করবেন, তারই অধিকার ক্ষুন্ন করা হয়, গ্রেফতার করা হয়, গুম করা হয়।’
সংবাদ সম্মেলনে বিএনপির সিনিয়র যুগ্ম মহাসচিব রুহুল কবির রিজভী, যুগ্ম মহাসচিব সৈয়দ মোয়াজ্জেম হোসেন আলাল, সাংগঠনিক সম্পাদক এমরান সালেহ প্রিন্স, সহ-সাংগঠনিক সম্পাদক অ্যাডভোকেট আব্দুস সালাম আজাদ, মহিলা দলের সাধারণ সম্পাদক সুলতানা আহমেদ প্রমুখ।