এমপি রতন থাকায় ঢাকার বৈঠকে যোগ দেননি মতিউর
যুগান্তর রিপোর্ট,তাহিরপুর
প্রকাশ: ২৬ নভেম্বর ২০১৯, ০৫:০২ পিএম
সুনামগঞ্জের বিভিন্ন উপজেলা ইউনিটের কাউন্সিল প্রসঙ্গে জেলা আওয়ামী লীগ নেতৃবৃন্ধ ও পাঁচ সংসদ সদস্যের অংশগ্রহণে এক বৈঠক অনুষ্ঠিত হয়েছে।
মঙ্গলবার সন্ধা ৬টা ৩১ মিনিটে ঢাকায় এ বৈঠক অনুষ্ঠিত হয়।
তবে এ বৈঠকে যোগ দেননি সুনামগঞ্জ জেলা আওয়ামী লীগের সভাপতি সাবেক সংসদ সদস্য মতিউর রহমান।
বৈঠকে মতিউর রহমানের অনুপস্থিতির বিষয়টি স্বীকার করে আওয়ামী লীগের যুগ্ম সম্পাদক ও সিলেট বিভাগের দায়িত্বপ্রাপ্ত নেতা মাহবুবউল আলম হানিফ এমপি যুগান্তরকে বলেন, শারীরিক অসুস্থতার কারণে বৈঠকে সুনামগঞ্জ জেলা আওয়ামী লীগের সভাপতি মতিউর রহমান যোগ দিতে পারেননি।
তবে ঘনিষ্ঠ সূত্র জানিয়েছে, বৈঠকে বিতর্কিত সুনামগঞ্জ-১ আসনের এমপি মোয়াজ্জেম হোসেন রতন উপস্থিত থাকায় শেষ পর্যন্ত মতিউর রহমান যোগ দেননি।
এ বিষয়ে জানতে মঙ্গলবার সন্ধায় মতিউর রহমানের সঙ্গে যোগাযোগ করা হলে তিনি যুগান্তরকে বলেন, ঢাকায় জেলা আওয়ামী লীগ নেতৃবৃন্দের অংশগ্রহণে বৈঠকে উপস্থিত না থাকার মত অসুস্থ আমি নই। বিতর্কিত এমপি রতন বৈঠকে থাকলে আমি সেই বৈঠকে যাব না বলে আগেই জানিয়েছিলাম। দলের ভাবমুর্তি রক্ষায় আমি আমার সিদ্ধান্তে অটল আছি। দুদকে’ অভিযুক্ত এমপি রতন ওই বৈঠকে উপস্থিত থাকায় আমি সেখানে অংশগ্রহণ করিনি। তাই প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনার চলমান শুদ্ধি অভিযানকে প্রশ্নবিদ্ধ না করতে ও রাষ্ট্রীয় আইনের প্রতি শ্রদ্ধাবোধ থেকে আমি ওই বৈঠকে যাইনি। ‘
তিনি বলেন, সোমবার কেন্দ্রীয় যুগ্ন সম্পাদক মাহববুব উল আলম হানিফ এমপি আমাকে জানিয়েছিলেন মঙ্গলবারের বৈঠক বাতিল করা হয়েছে, এরপর হয়ত তারা চা- চক্রে মঙ্গলবার ঢাকায় মিলিত হয়েছেন।
এদিকে বৈঠকটি অসম্পূর্ণ হয়েছে জানিয়ে হবুবউল আলম হানিফ বলেন, সুনামগঞ্জ জেলা আওয়ামী লীগ কমিটির মেয়াদ আছে, সার্বিকভাবে কমিটির মেয়াদ দুই বছর পূর্ণ হয়নি এখনো, তাই এখন কাউন্সিল করাটা যৌক্তিক নয়।
উল্লেখ্য ২০১৮ সালের ১৫ মার্চ সুনামগঞ্জ জেলা আওয়ামী লীগ কমিটিকে কেন্দ্রীয়ভাবে অনুমোদন করা হয়।
সুনামগঞ্জের বিভিন্ন উপজেলাসহ ১২ ইউনিটের কাউন্সিলের তারিখ ঘোষণা করা হয়েছিল। এসব কাউন্সিল ফের অদৃশ্য কারণে কেন্দ্র থেকে স্থগিত করা হয়।
এ প্রসঙ্গে জানতে চাইলে মাহবুবউল আলম হানিফ বলেন, মেয়াদ উত্তীর্ণ কমিটিগুলোর কাউন্সিল করার কথা। কিন্তু সুনামগঞ্জ জেলা কমিটির মেয়াদ আছে, তাই সেই কাউন্সিল (কমিটি) আমাদের জাতীয় কাউন্সিলের পরে হলেও সমস্যা নেই। তাদের মেয়াদ পুর্ণ হোক তারপর কাউন্সিল হবে।
তিনি যোগ করেন, আমরা সুনামগঞ্জের বিভিন্ন উপজেলার কাউন্সিল শেষ করার চেষ্টা করেছিলাম। যেহেতু জেলা কাউন্সিল হচ্ছে না সে কারণে উপজেলা নিয়ে তাদের মধ্যে হয়ত কিছুটা সমস্যা আছে। এই সমস্যাগুলোর সমাধান নিরসন করে আমরা কাউন্সিলগুলো করব।
তিনি বলেন, সভাপতি মতিউর রহমান অনেক বয়োজেষ্ঠ্য ও দলের জন্য ত্যাগী মানুষ। তিনি এখন অসুস্থ। তিনি কিছুটা সুস্থ্য হলেই আমরা একটা ফলপ্রসু আলোচনা করব ও স্থগিত হওয়া বিভিন্ন ইউনিটের কাউন্সিলগুলোর বিষয়ে সিদ্ধান্ত দেব।
সূত্র জানায়, বৈঠকে জেলা আওয়ামী লীগের সভাপতি সাবেক এমপি আলহাজ্ব মতিউর রহমান, পরিকল্পনা মন্ত্রী এমএ মান্নান এমপি, মহিলা সাংসদ শামীমা শাহরিয়ার উপস্থিত ছিলেন না।
ওই বৈঠকে যারা উপস্থিত ছিলেন- সুনামগঞ্জ-৫ (ছাতক-দোয়ারাবাজার) আসনের সাংসদ মুহিবুর রহমান মানিক এমপি, সুনামগঞ্জ -২ (দিরাই-শাল্লা) আসনের সাংসদ ড. জয়া সেনগুপ্ত, সুনামগঞ্জ-১ (তাহিরপুর, জামালগঞ্জ,ধর্মপাশা ও মধ্যনগর ) আসনের সাংসদ মোয়াজ্জোম হোসেন রতন এমপি, জেলা আওয়ামী লীগের সাধারন সম্পাদক ব্যারিষ্টার এম এনামুল কবীর ইমন।
প্রসঙ্গত সুনামগঞ্জ জেলার ১৪ ইউনিটের মধ্যে দুটি ইউনিটে সম্মেলন হলেও জেলার অন্য উপজেলাগুলোর সম্মেলনের তারিখ পেছানো হয়েছে। স্থানীয় সংসদ সদস্যদের উপস্থিত রেখে সম্মেলন করার জন্য ইউনিটগুলোর সম্মেলনের তারিখ পেছানো হয়।
এমন পরিস্থিতিতে ইউনিটগুলোর সম্মেলনের তারিখ পুননির্ধারণের জন্য মঙ্গলবার পরিকল্পনামন্ত্রী এমএ মান্নান এমপি, জেলার অন্যান্য আসনের এমপি, সংরক্ষিত আসনের মহিলা এমপি ও আওয়ামী লীগের কেন্দ্রীয় যুগ্ম সম্পাদক ও সিলেট বিভাগের দায়িত্বপ্রাপ্ত নেতা মাহবুবউল আলম হানিফ ও জেলা নেতাদের অংশগ্রহণে ঢাকায় বৈঠক আহ্বান করা হয়।