Logo
Logo
×

রাজনীতি

টিকিট মাস্টার থেকে যেভাবে ওয়ার্ড কাউন্সিলর হন মনজু

Icon

যুগান্তর রিপোর্ট

প্রকাশ: ০১ নভেম্বর ২০১৯, ০৫:০৩ এএম

টিকিট মাস্টার থেকে যেভাবে ওয়ার্ড কাউন্সিলর হন মনজু

সন্ত্রাস, চাঁদাবাজি ও দখলবাজির সঙ্গে জড়িত থাকার অভিযোগে কাউন্সিলর ময়নুল হক ওরফে মনজুকে গ্রেফতার করেছে র‌্যাব।

বৃহস্পতিবার রাজধানীর টিকাটুলির শহীদ নজরুল ইসলাম রোডের কার্যালয়ে অভিযান চালিয়ে তাকে গ্রেফতার করা হয়।

এ সময় তার অফিস থেকে দুটি পিস্তল, মদ, গাঁজা, ইয়াবা, ফেনসিডিল ও যৌন উত্তেজক সামগ্রী উদ্ধার করা হয়েছে। রাতে মনজুর বিরুদ্ধে ওয়ারী থানায় অস্ত্র ও মাদক আইনে আলাদা দুটি মামলা করেছে র‌্যাব।

মনজু গ্রেফতার হওয়ায় টিকাটুলির রাজধানী মার্কেটের ব্যবসায়ী ও স্থানীয়রা আনন্দ মিছিল এবং মিষ্টি বিতরণ করেছেন।

জানা গেছে, আশির দশকে জীবন ও জীবিকার তাগিদে গ্রাম ছেড়ে ঢাকায় আসেন মনজু। ঠাঁই নেন গোপীবাগের এক আত্মীয়ের বাসায়। এক বড় ভাইয়ের মাধ্যমে সায়েদাবাদ বাস টার্মিনালে বাসের টিকিট মাস্টারের কাজ পান। 

একপর্যায়ে তিনি সায়েদাবাদ টার্মিনালে চাঁদাবাজি শুরু করেন। এসময় স্থানীয় বিএনপি দলীয় এক এমপির সঙ্গে তার সম্পর্ক গড়ে উঠে। 

কিন্তু রাজনীতির হাওয়া বদল হলে বোল পাল্টিয়ে তিনি ওয়ার্ড কাউন্সিলরের পদ বাগিয়ে নেন। সম্পর্ক গড়েন আওয়ামী লীগের প্রভাবশালী নেতাদের সঙ্গে।

ওয়ার্ড কাউন্সিলর নির্বাচিত হওয়ার পর তাকে আর পেছনে তাকাতে হয়নি। কাউন্সিলর ও সরকার দলীয় নেতা পরিচয়ে প্রভাব খাটিয়ে শুরু করেন দখলদারি ও চাঁদাবাজি। গড়ে তুলেন নিজস্ব ক্যাডার বাহিনী।

রাজধানীর টিকাটুলি এলাকার রাজধানী সুপারমার্কেট ও নিউ রাজধানী সুপারমার্কেটের ‘স্বঘোষিত’ সভাপতি ছিলেন কাউন্সিলর মনজু।

মুক্তিযোদ্ধা কল্যাণ ট্রাস্টের আওতাধীন এই দুই মার্কেটের এক হাজার ৭৮৮টি দোকান থেকে প্রতি মাসে চাঁদা আদায় করতেন দোকানপ্রতি ৯৫০ টাকা। এর বাইরে ঈদে বা পূজায় দিতে হতো বাড়তি চাঁদা। জেনারেটর, বেয়ারসহ অন্যান্য খরচের নামেও দিতে হতো চাঁদা।

তার বেপরোয়া চাঁদাবাজি ও দখলবাজির বিরুদ্ধে ভুক্তভোগী ব্যবসায়ীরা স্বরাষ্ট্র মন্ত্রণালয়, পুলিশ ও র‌্যাব সদর দফতরসহ বিভিন্ন স্থানে অভিযোগ, এমনকি মামলা করলেও পাননি প্রতিকার।

টানা আট বছর মনজু আর তার ক্যাডার বাহিনীর কাছে জিম্মি ছিলেন সাধারণ ব্যবসায়ীরা। অবৈধ টাকায় আঙুল ফুলে হয়েছেন বটগাছ।

দুই মার্কেট থেকে প্রতি মাসে প্রায় কোটি টাকার চাঁদা তুলে হুন্ডির মাধ্যমে পাঠাতেন যুক্তরাষ্ট্রে থাকা পরিবারের কাছে। মাদক সেবন ও কারবারে জড়িত মনজু মাতাল অবস্থায় ব্যবসায়ীদের হুমকি দিতেন। তার কথার অবাধ্য হলে ক্যাডার বাহিনী দিয়ে ধরে এনে টর্চার সেলে চালাতেন নির্যাতন।

Jamuna Electronics

Logo

সম্পাদক : সাইফুল আলম

প্রকাশক : সালমা ইসলাম