রাশেদ খান মেনন এমপি। ফাইল ছবি
‘আমি সাক্ষী দিচ্ছি, গত একাদশ জাতীয় সংসদ নির্বাচনে প্রধানমন্ত্রী এবং আমিসহ কাউকেউ জনগণ ভোট দেয়নি’- সম্প্রতি দলীয় এক সম্মেলনে দেয়া এমন বক্তব্যে দুঃখ প্রকাশ করেছেন ওয়ার্কার্স পার্টির সভাপতি রাশেদ খান মেনন এমপি।
বুধবার দোহারে ঢাকা জেলা ওয়ার্কার্স পার্টির সম্মেলনের উদ্বোধনীতে প্রধান অতিথির বক্তৃতায় তিনি এ দুঃখ প্রকাশ করেন।
যদিও এর আগে দলীয় এক বিবৃতিতে মেনন বলেছিলেন, তিনি বরিশালে দলীয় সম্মেলনে যে বক্তব্য দিয়েছেন তার সেই বক্তব্য অংশবিশেষ পরিবেশন করায় ভুল বার্তা গেছে।
এদিকে বরিশালে দেয়া মেননের ওই বক্তব্যের পরই তুমূল বিতর্কের সৃষ্টি হয়। তবে বিএনপি মেননের ওই বক্তব্যকে সাধুবাদ জানিয়ে বলেছে, দেরিতে হলেও মেনন সত্যি কথা বলেছেন।
আবার আওয়ামী লীগ প্রশ্ন রেখেছে, মেনন যে সংসদ সদস্য নির্বাচিত হয়েছেন কীভাবে হয়েছেন?
আওয়ামী লীগ সাধারণ সম্পাদক বুধবার এক দলীয় সভায় বলেন, ‘রাশেদ খান মেনন সাহেব এখন উল্টো সুরে কথা বলছেন। তিনি ইউটার্ন নিয়ে ফেলেছেন অলরেডি। তিনি বলেছেন তিনি এভাবে বলেননি, তার বক্তব্যটা খণ্ডিতভাবে প্রকাশ করা হয়েছে। তিনি (মেনন) একটা দলের সভাপতি। পত্র-পত্রিকায় নানা ধরনের খবর আসছে। এর প্রতিক্রিয়া ও অন্যান্য বিষয়ও আছে। তাদের দলের মূল্যায়নে তার অবস্থান কোথায় গিয়ে দাঁড়াবে আগামী দিনগুলো সে বিষয়ে আমার মন্তব্য করা সমীচীন নয়।‘
এদিকে বুধবার ঢাকার দোহার উপজেলার করম আলীর মোড়ে ঢাকা জেলা ওয়ার্কার্স পার্টির সম্মেলনে বোল পাল্টে ফেলেন মেনন। তিনি জানান, বরিশালে দলীয় সম্মেলনে দেয়া তার বক্তব্যে যে বিভ্রান্তি তৈরি হয়েছে, তাতে তিনি দুঃখিত।
এ সময় মেনন আরও বলেন, ‘সন্ত্রাস, মাদক, দুর্নীতি, বৈষম্য সাম্প্রদায়িকতা ও জঙ্গিবাদ রুখতে ১৪ দলীয় জোট গঠন হয়েছিল। যার ফলে প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনার সুযোগ্য নেতৃত্বে দেশ আজ উন্নয়নের রোল মডেলে পরিণত হয়েছে।’
প্রসঙ্গত, গত শনিবার বরিশাল নগরীর টাউন হলে দলীয় সম্মেলনে মেনন বলেন, ‘আমি ও প্রধানমন্ত্রীসহ যারা নির্বাচিত হয়েছি- আমাদের দেশের কোনো জনগণ ভোট দেয়নি। কারণ ভোটাররা কেউ ভোটকেন্দ্রে আসতে পারেনি।’
‘গত জাতীয় সংসদ নির্বাচনে আমিও নির্বাচিত হয়েছি। তার পরও আমি সাক্ষ্য দিচ্ছি, ওই নির্বাচনে জনগণ ভোট দিতে পারেনি। এমনকি পরবর্তীকালে উপজেলা এবং ইউনিয়ন পরিষদ নির্বাচনেও ভোট দিতে পারেনি দেশের মানুষ।’
পরদিন বিবৃতিতে মেনন বলেন, ‘আমার বক্তব্য সম্পর্কে জাতীয় রাজনীতি ও ১৪ দলের রাজনীতিতে একটা ভুল বার্তা গেছে। আমার বক্তব্য সম্পূর্ণ পরিবেশন না করে অংশবিশেষ পরিবেশন করায় এই বিভ্রান্তি সৃষ্টি হয়েছে।’