Logo
Logo
×

রাজনীতি

ভারতের কাছে সবসময়ই গুরুত্বপূর্ণ ছিলেন এরশাদ

Icon

যুগান্তর রিপোর্ট

প্রকাশ: ১৪ জুলাই ২০১৯, ১২:৫২ পিএম

ভারতের কাছে সবসময়ই গুরুত্বপূর্ণ ছিলেন এরশাদ

টানা ৯ বছর রাষ্ট্রক্ষমতায় ছিলেন হুসেইন মুহম্মদ এরশাদ। এই সময়ে মাটি ও মানুষের সঙ্গে নিবিড় সম্পর্ক গড়ে তোলেন সাবেক সেনাবাহিনীপ্রধান।    

গ্রামের মানুষের প্রতি এরশাদের একটা বিশেষ টান ছিল। ক্ষমতায় এসেই গ্রাম-বাংলার উন্নয়নে মনোযোগী হন এরশাদ। তিনি বলেন, ৬৮ হাজার গ্রাম বাঁচলে বাংলাদেশ বাঁচবে।

দেশের জনগণ তাকে পল্লীবন্ধু হিসেবে বুকে জড়িয়ে নেন। আপামর জনতার সঙ্গে সুসম্পর্ক গড়ে ওঠে তার।

পাশাপাশি প্রতিবেশী দেশগুলোর সঙ্গে বরাবরই সুসম্পর্ক গড়ে উঠেছিল এরশাদের। বিশেষ করে ভারতের কাছে এরশাদের আলাদা একটি কদর ছিল। মধ্যপ্রাচ্যের দেশগুলোর সঙ্গেও তার নিবিড় সম্পর্ক গড়ে উঠেছিল। এ বিষয়ে রাজনৈতিক বিশ্লেষকরা একমত।

বিশ্লেষকরা মনে করছেন, ১৯৯০ সালের ৬ ডিসেম্বরে হুসেইন মুহম্মদ এরশাদ ক্ষমতা ছাড়ার পর আর রাষ্ট্রক্ষমতায় যেতে না পারলেও বাংলাদেশের রাজনীতিতে তার গুরুত্ব ছিল অসীম। আর সে কারণেই আওয়ামী লীগ ও বিএনপির পর দেশটির তৃতীয় রাজনৈতিক শক্তির প্রতিনিধি হিসেবে ভারতের রাষ্ট্রীয় অতিথি হয়েছিলেন জাতীয় পার্টির চেয়ারম্যান এরশাদ।

এ বিষয়ে গত বছরের জুলাইয়ে বিবিসির সঙ্গে এক সাক্ষাৎকারে দিল্লির অবজারভার রিসার্চ ফাউন্ডেশনের সিনিয়র ফেলো জয়িতা ভট্টাচার্য ভূয়সী প্রশংসা করেন।

তিনি ওই সাক্ষাৎকারে বলেন, ‘বাংলাদেশে এরশাদের জাতীয় পার্টি গুরুত্বপূর্ণ একটি তৃতীয় শক্তি এবং আপনি চান বা না চান তারা পার্লামেন্টে প্রধান বিরোধী দল। এর ওপরে এরশাদ নিজে একজন সাবেক রাষ্ট্রপ্রধান।’

২০১৮-এর নির্বাচনে মুহম্মদ এরশাদ ও তার দল জাতীয় পার্টির ভূমিকা গুরুত্বপূর্ণ হয়ে উঠতে পারে বল সেই সময় জয়িতা ভট্টাচার্যের মতো অন্যান্য ভারতীয় রাজনীতি বিশ্লেষকরাও মনে করেন।

গত বছরের ৩০ ডিসেম্বর অনুষ্ঠিত একাদশ জাতীয় সংসদ নির্বাচনের ওপর গভীর নজর ছিল প্রতিবেশী দেশ ভারতের। কূটনৈতিকগত কারণেই ভোটের আগে দেশের বড় দুই রাজনৈতিক দল আওয়ামী লীগ ও বিএনপির শীর্ষ পর্যায়ের নেতারা ভারত সফর করেন।

ওই সময় ভারত সরকারের আমন্ত্রণে সফরে যান সাবেক রাষ্ট্রপতি ও জাতীয় পার্টির চেয়ারম্যান হুসেইন মুহম্মদ এরশাদও। তিনি ভারতের শীর্ষপর্যায়ের মন্ত্রী, নেতাদের সঙ্গে সেই সময় সাক্ষাৎ করেন।

এ বিষয়ে জয়িতা ভট্টাচার্য বলেন, ভারতের কাছে এরশাদ বেশ গুরুত্বপূর্ণ। এর পেছনে যে কারণ বলেছিলেন তিনি তা হলো- ‘ভারত এখন জামায়াত ছাড়া বাংলাদেশের সব রাজনৈতিক শক্তির সঙ্গে একটা সম্পর্ক রাখতে আগ্রহী। জাতীয় পার্টিকে আমন্ত্রণ সেই প্রক্রিয়ারই অংশ।’

ভারতের ওই সফরে এরশাদ ও তার সফরসঙ্গীদের সঙ্গে বৈঠক করেছিলেন দেশটির বর্তমান স্বরাষ্ট্রমন্ত্রী ও ক্ষমতাসীন বিজেপির সভাপতি রাজনাথ সিং, পররাষ্ট্রমন্ত্রী সুষমা স্বরাজ।

সফরে ভারতের পক্ষ থেকে জানানো হয়, বাংলাদেশের গণতন্ত্র শক্তিশালী করতে জাতীয় পার্টি তথা হুসেইন মুহম্মদ এরশাদ অত্যন্ত গুরুত্বপূর্ণ ভূমিকা রাখছেন।

সফর শেষে জাতীয় পার্টির প্রেসিডিয়াম সদস্য জিয়াউদ্দিন আহমেদ বাবলু জানিয়েছিলেন, ‘বাংলাদেশে গণতন্ত্র বিকাশমান। তবু আমাদের কিছু সীমাবদ্ধতা রয়েছে, যা নির্মূল করে যাচ্ছে বর্তমান সরকার। আর যেকোনো অবস্থাতেই আমরা গণতান্ত্রিক প্রতিষ্ঠানগুলোকে আরও শক্তিশালী করতে চাই। এ ব্যাপারে ভারতও আমাদের সঙ্গে পুরোপুরি একমত। মূলত এ বিষয়েই দুপক্ষের মধ্যে কথাবার্তা হয়েছে।’

 

Jamuna Electronics

Logo

সম্পাদক : আবদুল হাই শিকদার

প্রকাশক : সালমা ইসলাম