Logo
Logo
×

অন্যান্য

‘সরকার ও রাজনৈতিক দলের মুখোমুখি অবস্থানে আ.লীগ পুনর্বাসিত হবে’

Icon

যুগান্তর প্রতিবেদন

প্রকাশ: ২৫ জানুয়ারি ২০২৫, ০৯:৫৮ পিএম

‘সরকার ও রাজনৈতিক দলের মুখোমুখি অবস্থানে আ.লীগ পুনর্বাসিত হবে’

গণঅধিকার পরিষদের সভাপতি নুরুল হক নুর বলেছেন, ‘অন্তর্বর্তী সরকার ও রাজনৈতিক দলগুলোর মুখোমুখি অবস্থান চলমান থাকলে স্বয়ংক্রিয়ভাবে আওয়ামী লীগ পুনর্বাসিত হবে। আওয়ামী লীগ নিষিদ্ধের বিষয়ে একমত হতে হবে সবাইকে।’

শনিবার বিকালে ঢাকা রিপোর্টাস ইউনিটির নসরুল হামিদ মিলনায়তনে বাংলাদেশ পেশাজীবী অধিকার পরিষদ এর আয়োজনে ‘গণঅভ্যুত্থান পরবর্তী প্রত্যাশা ও প্রাপ্তি’ শীর্ষক আলোচনা সভায় প্রধান অতিথির বক্তব্যে তিনি এসব কথা বলেন।

অন্তর্বর্তী সরকার জনআকাঙ্ক্ষার বিপরীতে ধাবিত হচ্ছে অভিযোগ করে নুরুল হক নুর বলেন, গঠনের পর থেকে ব্যর্থতার পরিচয় দিচ্ছে সরকারের উপদেষ্টারা। অন্তর্বর্তী সরকারের মধ্যে পরিবর্তন এনে রাজনৈতিক দলগুলোর সমন্বয়ে জাতীয় সরকার গঠনের আহ্বান জানান তিনি।

ছাত্রনেতারা কলঙ্কিত হলে ভবিষ্যতের বাংলাদেশ বিনির্মাণে তরুণ নেতৃত্ব প্রশ্নবিদ্ধ হবে উল্লেখ করে ডাকসুর সাবেক এই ভিপি বলেন, অতীতে যারাই সরকার গঠন করেছে তারা ক্ষমতা কুক্ষিগত করার চেষ্টায় লিপ্ত হয়েছে।

তিনি বলেন, শোনা যাচ্ছে- সৌদি আরব গিয়েও মিটিং হয়। একটি সংগ্রামের ইতিহাসের মধ্যদিয়ে গণঅধিকার পরিষদ রাজনৈতিক ভিত্তি গড়েছে। আমরা অনেক আগেই বলেছি, একই ব্যক্তি দুইবারের বেশি প্রধানমন্ত্রী থাকতে পারবে না। এখন সংস্কার কমিশনের একই সিদ্ধান্ত আমরা সাধুবাদ জানাই। আমরা ভারসাম্যমূলক সংসদ ও সংখ্যানুপাতিক নির্বাচনের কথা বলেছি। যা নিয়ে এখন আলোচনা চলছে। সরকারি চাকরিতে বর্তমান গ্রেডে বেতনের যে বৈষম্য রয়েছে তা দূর করা প্রয়োজন। ২০টি গ্রেডের প্রয়োজন নেই, ৪ থেকে ৫টি গ্রেড থাকতে পারে। সরকারি সব অফিসে ঘুস, দুর্নীতি বন্ধে চাকরিজীবীদের বেতন বাড়ানোর প্রয়োজন হলে, তা বাড়াতে হবে। নির্বাচনে কালো টাকার ছড়াছড়ি বন্ধ করা উচিত। পেশিশক্তি প্রদর্শন বন্ধ করতে হবে। সেগুলো নিয়ে আলোচনা না করে যারা আন্দোলন করেছে সবাই যার যার ধান্দা নিয়ে ব্যস্ত হয়ে পড়েছে। আওয়ামী লীগকে দেশে ফেরাতে অনেক আন্তর্জাতিক সম্প্রদায় কাজ করছে। ফ্যাসিবাদি রাজনৈতিক ব্যবস্থা বিলুপ্তির জন্য আমরা এবার নতুন রাজনৈতিক বন্দোবস্ত চেয়েছি। অন্তর্বর্তী সরকার নিয়ে রাজনৈতিক দল ও সরকার মুখোমুখি অবস্থানে। এই বিভাজনেই দেশে আওয়ামী লীগের পুনর্বাসন হতে পারে। 

জাতীয় সরকার ছাড়া কোনোভাবেই সংস্কার সম্ভব নয়। জনগণ কাউকে এককভাবে ক্ষমতায় বসাতে চায় না। জাতীয় সরকার গঠনের বিষয়ে উপদেষ্টা নাহিদ বলছে, তারা জাতীয় সরকার চেয়েছিল তবে বিএনপি জাতীয় সরকার চায় না। তবে আমরা প্রথম থেকেই জাতীয় সরকার গঠনের বিষয়ে বলে এসেছি। অন্তর্বর্তী সরকার গত পাঁচ মাস ব্যর্থতার পরিচয় দিয়েছে। অবিলম্বে উপদেষ্টা পরিষদ পুনর্গঠন করে জাতীয় সরকার গঠন করার আহ্বান জানাই। 

গণঅধিকার পরিষদের সাধারণ সম্পাদক মো. রাশেদ খাঁন বলেন, ড. মুহাম্মদ ইউনূস স্যার ২০০৭ সালে নাগরিক শক্তি গঠন করেন। পরবর্তীতে সফল হতে না পেরে কয়েক মাসের মাথায় সেই দল বিলুপ্ত করেন। এখন বাজারে গুঞ্জন আছে, নতুন রাজনৈতিক দল গঠনে তার আশীর্বাদ আছে। কিন্তু আমরা এটি বিশ্বাস করি না। ড. ইউনূস স্যারকে অনুরোধ করব, বিষয়টি খোলাসা করার জন্য। কারণ, জনগণ কিংস পার্টি চায় না। যে কেউ দল গঠন করুক, এতে আমাদের শুভকামনা থাকবে। কিন্তু গণঅভ্যুত্থান পরবর্তী সরকারের সুযোগ-সুবিধা নিয়ে দল গঠন কেউ মানবে না। কারণ, এই গণঅভ্যুত্থানে সবার ভূমিকা আছে। কেন উপদেষ্টারা বিএনপিকে বলছে, তারা ১/১১ চায়? বিএনপি তো ১/১১ এর সবচেয়ে বড় ভুক্তভোগী। বরং শোনা যাচ্ছে এই সরকারের কোনো কোনো উপদেষ্টার আশপাশে ১/১১ এর কুশীলবরা ঘুরাফেরা করছে। বরং মানুষের মনে উদ্বেগ যে, এই সরকার ব্যর্থ হয়ে আরেকটি ১/১১ সৃষ্টি করে কিনা। 

তিনি বলেন, আমরা সরকারকে বলব, ব্যর্থ হইয়েন না। সব রাজনৈতিক দল ও গণঅভ্যুত্থানের শক্তিকে নিয়ে বসুন। আলাপ-আলোচনার মাধ্যমে রোডম্যাপ প্রকাশ করুন। রাজনৈতিক দলগুলোর সঙ্গে দূরত্ব সৃষ্টি করার ফলাফল ভালো হবে না।এই সরকার গত সাড়ে ৫ মাসে সফলতার মুখ দেখতে পারেনি। বরং পদে পদে ব্যর্থ হয়েছে। এখনো কেন শেখ পরিবার, আওয়ামী হাইকমান্ড ও তৃণমূল থেকে আওয়ামী পাণ্ডাদের গ্রেফতার করা হচ্ছে না? কেন শহিদ পরিবার ক্ষতিপূরণ পাচ্ছে না, শহিদ ও আহতদের সঠিক তালিকা প্রকাশ করা হচ্ছে না? কেন নিত্যপণ্যের দাম না কমিয়ে ভ্যাট ট্যাক্স বাড়ানো হলো? সরকারের এসব ব্যর্থতা রাজনৈতিক দলগুলোর ওপর চাপানোর চেষ্টা করছে উপদেষ্টারা। 

রাশেদ আরও বলেন, মির্জা ফখরুল ইসলাম আলমগীর যে বক্তব্য দিয়েছেন, জামায়াতে ইসলামীর আমিরসহ তো অনেক রাজনৈতিক নেতারা এমন বক্তব্য দিয়েছেন। গণতান্ত্রিক রাষ্ট্রে সরকারের সমালোচনা করা, রোডম্যাপ ও নির্বাচন চাওয়া কি অপরাধ? বরং সরকার যৌক্তিকভাবে সবকিছুর সমাধান না করে জটিলতা সৃষ্টি করছে। এভাবে জটিলতা সৃষ্টি করলে আরেকটি ১/১১ তৈরি হবে।

সিনিয়র সহ-সভাপতি এবং উচ্চতর পরিষদ সদস্য মো. ফারুক হাসান বলেন, বিপ্লবের পর জনগণের চাহিদা ছিল একটি জাতীয় সরকার, কিন্তু আজ তা অর্জিত হয়নি। কেন হয়নি তা আজ জনগণের প্রশ্ন। যারা ক্ষমতায় আছে এটা তাদের ব্যর্থতা।

বাংলাদেশ পেশাজীবী অধিকার পরিষদের সভাপতি ডা. জাফর মাহমুদের সভাপতিত্বে ও সাধারণ সম্পাদক অ্যাডভোকেট খালিদ হাসানের সঞ্চালনায় আরও বক্তব্য দেন- গণঅধিকার পরিষদের উচ্চতর সদস্য আবু হানিফ, অ্যাডভোকেট নুরে এরশাদ সিদ্দিকী, হাবিবুর রহমান রিজু, বাংলাদেশ পেশাজীবী অধিকার পরিষদের সিনিয়র সহসভাপতি মো. শামসুল আলম, গণমাধ্যম ও প্রকাশনা সম্পাদক সাংবাদিক জিএম রোকনুজ্জামান, যুগ্ম সাধারণ সম্পাদক এসএম সুমন, দপ্তর সম্পাদক রেজওয়ান রূপ দীনেশ, আন্তর্জাতিক ও নিরাপত্তা বিষয়ক সম্পাদক সৈয়দ তানভীর ইউসুফ, সহ-সাংগঠনিক সম্পাদক আতাউর রহমান রনি, শ্রমিক অধিকার পরিষদের সাধারণ সম্পাদক সোহেল রানা সম্পদ প্রমুখ।

Jamuna Electronics

Logo

সম্পাদক : আবদুল হাই শিকদার

প্রকাশক : সালমা ইসলাম