Logo
Logo
×

রাজনীতি

মোহাম্মদপুরে শহিদ পরিবারের সঙ্গে জামায়াতের মতবিনিময়

সবাইকে জামায়াতের পতাকাতলে ঐক্যবদ্ধ হওয়ার ডাক

Icon

যুগান্তর প্রতিবেদন

প্রকাশ: ০৪ অক্টোবর ২০২৪, ০৭:০৯ পিএম

সবাইকে জামায়াতের পতাকাতলে ঐক্যবদ্ধ হওয়ার ডাক

দেশে ন্যায়-ইনসাফের সমাজ প্রতিষ্ঠায় সবাইকে জামায়াতের পতাকাতলে ঐক্যবদ্ধ হওয়ার আহ্বান জানিয়েছেন বাংলাদেশ জামায়াতে ইসলামীর কেন্দ্রীয় নির্বাহী পরিষদ সদস্য ও ঢাকা মহানগরী উত্তরের আমির মোহাম্মদ সেলিম উদ্দিন।

এ ছাড়া আগস্ট বিজয়োত্তর খুনিদের চিহ্নিত ও বিচার করে অপরাধীদের দৃষ্টান্তমূলক শাস্তির মাধ্যমে দেশে মানবতাবিরোধী রাজনীতির অবসান ঘটানোর আহ্বান জানিয়েছেন তিনি।

শুক্রবার সকালে রাজধানীর মোহাম্মদপুরে জামায়াতে ইসলামী ঢাকা মহানগরী উত্তরের মোহাম্মদপুর পশ্চিম থানা আয়োজিত বৈষম্যবিরোধী ছাত্র-জনতার আন্দোলনে বীর শহিদ পরিবারের সঙ্গে মতবিনিময় অনুষ্ঠানে প্রধান অতিথির বক্তব্যে তিনি এসব কথা বলেন।

থানা আমির ডা. মু. শফিউর রহমানের সভাপতিত্বে অনুষ্ঠানে বিশেষ অতিথি হিসেবে উপস্থিত ছিলেন কেন্দ্রীয় মজলিসে শূরা সদস্য ও জোন পরিচালক জিয়াউল হাসান ও মোহাম্মদপুর দক্ষিণ থানা আমির সাখাওয়াত হোসেন। 

উপস্থিত ছিলেন থানা নায়েবে আমির মাহাদী হাসান, সেক্রেটারি মাসুদুজ্জামান, থানা কর্মপরিষদ সদস্য নূরে আলম সিদ্দিকী, রুহুল আমীন, আশরাফুল আলম ও আবুল কালাম আজাদ প্রমুখ।

প্রধান অতিথি ৪ শহিদ পরিবারের সদস্যদের খোঁজখবর নেন এবং আর্থিক সহায়তা প্রদান করেন।

জামায়াত নেতা সেলিম উদ্দিন বলেন, আগস্ট বিপ্লবের শহিদরা জাতির শ্রেষ্ঠ সন্তান। শাহাদত আল্লাহর ফয়সালা ও মহাসম্মানের। আমাদের সন্তানরা জালিম শাসকের উৎখাত ও জুলুমের অবসানের জন্য হাসিমুখে শাহাদতবরণ করেছিলেন। আল্লাহ রাব্বুল আলামীন পবিত্র কালামে শহিদদের মৃত বলতে নিষেধ করে তাদের জীবিত বলে আখ্যা দিয়ে এক অনন্য মর্যাদা দিয়েছেন। শহিদরা এতই মর্যাদাবান যে, আখেরাতে তাদেরকে ৭০ জনের পক্ষে সুপারিশ করার মহাসম্মানে সম্মানিত করা হয়েছে। 

তিনি আগস্ট বিপ্লবের কথা আবারও উল্লেখ করে বলেন, আমাদের বীর সন্তানরা বৈষম্যমুক্ত ও ইনসাফপূর্ণ সমাজ প্রতিষ্ঠার জন্যই অকাতরে জীবন বিলিয়ে দিয়েছিলেন। স্বৈরাচার ও ফ্যাসিবাদ জাতির ঘাড়ে জগদ্দল পাথরের মতো চেপে বসেছিল। রাষ্ট্রীয় বাহিনীকে দলীয় বাহিনীতে পরিণত করে পাখির মতো নির্বিচারে মানুষ হত্যা করা হয়েছিল। যা বিশ্ব ইতিহাসে নজীরবিহীন। তাই দেশ ও জাতির বৃহত্তর স্বার্থেই এসব অপরাধীদের বিচারের আওতায় আনতে হবে।

সেলিম উদ্দিন বলেন, শহিদরা আমাদেরকে নতুন করে স্বাধীনতা এনে দিয়েছে। তাদের জন্য তাদের পরিবারের সঙ্গে পুরো জাতিই গর্বিত। তাই রাষ্ট্রীয়ভাবে তাদের সম্মান ও মর্যাদা নিশ্চিত করতে হবে। শহিদদের স্মরণে দেশে স্কুল, কলেজ, বিশ্ববিদ্যালয়, মাদ্রাসা, হাসপাতাল, জনহিতকর ও দাতব্য প্রতিষ্ঠান প্রতিষ্ঠা করতে হবে। আহতদের সুচিকিৎসাসহ তাদের পরিবারসহ শহিদ পরিবারগুলোকে পুনর্বাসনের জন্য সম্ভব সবকিছুই করা দরকার।প্রয়োজনে আহতদের দেশের বাইরে চিকিৎসার ব্যবস্থা করতে হবে। এ কাজে জামায়াত সবসময় তাদের পাশে থাকবে, ইনশাআল্লাহ।

তিনি পতিত সরকারের জামায়াতের ওপর জুলুম-নির্যাতন প্রসঙ্গে বলেন, আওয়ামী লীগ রাজনৈতিক প্রতিহিংসা চরিতার্থ করার জন্য বিচারের নামে প্রহসন করে আমাদের শীর্ষনেতা মাওলানা মতিউর রহমান নিজামী, আলী আহসান মোহাম্মদ মুজাহিদ, মোহাম্মদ কামারুজ্জামান,আব্দুল কাদের মোল্লা, মীর কাসেম আলীকে ফাঁসিতে ঝুলিয়ে নির্মমভাবে হত্যা করেছে। অপচিকিৎসায় নির্মমভাবে শহিদ করা হয়েছে বিশ্ববরেণ্য মুফাসসির আল্লামা দেলওয়ার হোসাইন সাঈদীকে। একইভাবে পরিকল্পিতভাবে হত্যা করা হয়েছে অধ্যাপক গোলাম আযম, মাওলানা একেএম ইউসুফ ও মাওলানা আব্দুস সোবহানকে। মূলত জলিমকে মোকাবিলা করতে গিয়ে সবচেয়ে বেশি জুলুমের শিকার হয়েছে জামায়াতে ইসলামী।

মহানগরী উত্তর আমির বলেন, মূলত বৈষম্যমুক্ত সমাজ ও সব ক্ষেত্রে জাস্টিস প্রতিষ্ঠার জন্যই ছাত্র-জনতা ফ্যাসিবাদের বিরুদ্ধে অপ্রতিরোধ্য আন্দোলন গড়ে তুলেছিল। কিন্তু এই আন্দোলন মোটেই নির্বিঘ্নে হয়নি বরং শত-সহস্র প্রাণের বিনিময়ে এই আন্দোলন বিজয় লাভ করেছে। তাই এই আন্দোলন দমাতে গিয়ে যারা মানবতাবিরোধী অপরাধে লিপ্ত হয়েছেন তাদের জন্য অবশ্যই শূন্য সহনশীলতা দেখাতে হবে। খুনিদের আইনের আওতায় এনে বিচারের মুখোমুখি করতে হবে।এজন্য দেশে মানবিক রাজনৈতিক দল দরকার। সে শূন্যতা পূরণের জন্য জামায়াত দীর্ঘ পরিসরে কাজ করে যাচ্ছে। মানুষের মুক্তি, কল্যাণ ও উন্নতির জন্য আমরা শপথবদ্ধ। তাই জামায়াতকে রাষ্ট্র পরিচালনার দায়িত্ব দিলে মাত্র ৫ বছরের মধ্যেই দেশকে দুর্নীতিমুক্ত কল্যাণ রাষ্ট্রে পরিণত করা সম্ভব।

তিনি সেই স্বপ্নের সমাজ প্রতিষ্ঠায় সবাইকে ঐক্যবদ্ধ প্রয়াস চালানোর আহ্বান জানান।

Jamuna Electronics

Logo

সম্পাদক : সাইফুল আলম

প্রকাশক : সালমা ইসলাম