
প্রিন্ট: ০৭ এপ্রিল ২০২৫, ১২:৪৯ পিএম
পাকিস্তান থেকে আফগান শরণার্থীদের প্রত্যাবাসন শুরু

আন্তর্জাতিক ডেস্ক
প্রকাশ: ০১ এপ্রিল ২০২৫, ০৬:২৭ পিএম

আরও পড়ুন
পাকিস্তানে অবৈধভাবে বসবাসরত আফগান শরণার্থীদের স্বেচ্ছায় দেশে ফেরার সময়সীমা ৩১ মার্চ শেষ হয়েছে। ওই ডেডলাইন পার হওয়ার পর মঙ্গলবার (১ এপ্রিল) থেকে তাদের প্রত্যাবাসন প্রক্রিয়া শুরু হয়েছে।
মঙ্গলবার জিও নিউজ এক প্রতিবেদনে এ তথ্য জানিয়েছে।
সূত্রের বরাত দিয়ে পাকিস্তানি গণমাধ্যমটি জানিয়েছে, খাইবার পাখতুনখোয়ার (কেপি) স্বরাষ্ট্র দপ্তর নিশ্চিত করেছে, আজ থেকে আফগান শরণার্থীদের দেশে ফেরত পাঠানো শুরু হচ্ছে।
সময়সীমা বাড়ানোর সুযোগ নেই
পাকিস্তান সরকার তালেবান প্রশাসনের অনুরোধ সত্ত্বেও ডেডলাইনের মেয়াদ না বাড়ানোর সিদ্ধান্ত নিয়েছে।
এর আগে শাহাবাজ শরিফ সরকারের নির্দেশে খাইবার পাখতুনখোয়া প্রদেশে অধ্যয়নরত আফগান শিক্ষার্থীদের তথ্য সংগ্রহ করে ফরেন ন্যাশনাল সিকিউরিটি সেল-এর ডাটাবেস আপডেট করার জন্য ২৭ মার্চের মধ্যে রিপোর্ট চাওয়া হয়েছিল।
নিরাপত্তার স্বার্থে অবৈধ অভিবাসীদের বহিষ্কার
পাকিস্তানে সাম্প্রতিক সময়ে সন্ত্রাসী হামলা বৃদ্ধি পাওয়ায় দেশটির সরকার নিরাপত্তা ব্যবস্থা জোরদার করতে অবৈধ অভিবাসীদের বহিষ্কারের নীতি গ্রহণ করেছে। ইসলামাবাদ দীর্ঘদিন ধরেই দেশটিতে সন্ত্রাসী হামলার জন্য আফগান ভূখণ্ডে সক্রিয় জঙ্গি গোষ্ঠীগুলোর দিকে আঙুল তুলে আসছে।
রেডিও পাকিস্তানের তথ্য অনুযায়ী, এ পর্যন্ত ৮,৭৮,৯৭২ জন অবৈধ আফগান শরণার্থী পাকিস্তান ছেড়ে স্বদেশে ফিরে গেছেন।
আমনেস্টি ইন্টারন্যাশনালের উদ্বেগ
এদিকে আমনেস্টি ইন্টারন্যাশনাল পাকিস্তান সরকারের এই অবৈধ অভিবাসী প্রত্যাবাসন পরিকল্পনাকে ‘অস্বচ্ছ’ বলে উল্লেখ করেছে। সেইসঙ্গে এ নিয়ে উদ্বেগ প্রকাশ করেছে।
এক বিবৃতিতে সংস্থাটি বলেছে, ৩১ মার্চের সময়সীমা আফগান শরণার্থীদের দুর্ভোগ আরও বাড়াবে।পাশাপাশি পাকিস্তান সরকারকে এই নীতি প্রত্যাহার করার আহ্বান জানিয়েছে।
পাকিস্তানে বসবাসরত আফগানদের পরিসংখ্যান
এই মুহূর্তে পাকিস্তানে ২.১ মিলিয়ন নথিভুক্ত আফগান শরণার্থী বসবাস করছে। এর মধ্যে ১.৩ মিলিয়ন শরণার্থী প্রুফ অব রেজিস্ট্রেশন (PoR) কার্ড পেয়েছেন। যার মধ্যে ৫২ শতাংশই খাইবার পাখতুনখোয়ায় বসবাস করছেন।
অন্যদিকে আনুমানিক ৮,০০,০০০ আফগান তাদের দেশের নাগরিকত্ব কার্ড পেয়েছেন। যাদের বেশিরভাগই খাইবার পাখতুনখোয়া প্রদেশে বসবাস করছেন।
পাকিস্তানে জন্ম নেওয়া আফগানদের ভবিষ্যৎ
এদিকে এসব বসবাসকারী আফগানদের থেকে পাকিস্তানে অসংখ্য আফগান শরণার্থী জন্মগ্রহণ করেছেন। যারা কখনো তাদের মাতৃভূমিই দেখেননি। অনেকেই পাকিস্তানেই ব্যবসা পরিচালনা করেন বা দীর্ঘদিন ধরে চাকরি-বাকরি করছেন।
পাকিস্তান সরকার ২০২৩ সালে একবার ওই বছরের ৩১ অক্টোবরের মধ্যে অবৈধ অভিবাসীদের ফেরার নির্দেশ দিয়েছিল। যার ফলে বিপুল সংখ্যক শরণার্থী তোর্খাম এবং অন্যান্য সীমান্ত দিয়ে আফগানিস্তানে ফিরে যায়।
এ বছরও চামকানি, নওশেরা ও অন্যান্য এলাকায় বিশেষ ক্যাম্প স্থাপন করা হয়েছে। যেখানে আফগান শরণার্থীরা তাদের দেশে ফেরার প্রস্তুতি নিচ্ছেন।