
প্রিন্ট: ১৭ এপ্রিল ২০২৫, ০১:০০ এএম
বিশ্ববিদ্যালয়ে ভর্তি প্রক্রিয়া যেমন হওয়া উচিত

মেজর জেনারেল মো. মাহবুব-উল আলম
প্রকাশ: ১৩ এপ্রিল ২০২৫, ১২:০০ এএম
প্রিন্ট সংস্করণ

আরও পড়ুন
একটি দেশের সার্বিক উন্নয়ন ও জাতি গঠনে বিশ্ববিদ্যালয়ের ভূমিকা অত্যন্ত গুরুত্বপূর্ণ। বিশ্ববিদ্যালয় জ্ঞান সৃজন ও বিতরণের কেন্দ্র হিসাবে কাজ করে, যা মানবসম্পদ উন্নয়ন, দক্ষ কর্মশক্তি গঠন, গবেষণা ও উদ্ভাবনের মাধ্যমে নতুন ধারণা তৈরি এবং প্রযুক্তির আধুনিক ব্যবহারের মাধ্যমে অর্থনৈতিক উন্নয়নকে ত্বরান্বিত করতে প্রত্যক্ষ ভূমিকা পালন করে। পাশাপাশি বিশ্ববিদ্যালয় শিক্ষার্থীদের মধ্যে নৈতিক মূল্যবোধ, নেতৃত্বগুণ ও সামাজিক দায়িত্ববোধ জাগ্রত করে, যা একটি শক্তিশালী জাতি গঠনের মূল ভিত্তি। একটি দক্ষ, সমৃদ্ধ ও সুশিক্ষিত জাতি গঠনে বিশ্ববিদ্যালয় জাতীয় উন্নয়নের চাবিকাঠি হিসাবে কাজ করে। সুতরাং বিশ্ববিদ্যালয়ে শিক্ষার্থী ভর্তির প্রক্রিয়া অত্যন্ত গুরুত্বপূর্ণ বিষয়, কারণ এটি নির্ধারণ করে কে উচ্চশিক্ষা লাভের সুযোগ পাবে এবং জাতি গঠনে উল্লেখযোগ্য ভূমিকা রাখতে উপযুক্ত হয়ে উঠবে। এ কারণে ভর্তির প্রক্রিয়াটি অবশ্যই যোগ্যতাভিত্তিক, স্বচ্ছ ও ন্যায়সংগত হওয়া উচিত। কেননা এর মাধ্যমে শিক্ষার্থীদের জ্ঞান, দক্ষতা, মেধা এবং সৃজনশীল সম্ভাবনার যথাযথ মূল্যায়ন নিশ্চিত করে তাদের বিশ্ববিদ্যালয়ে উচ্চশিক্ষার জন্য নির্বাচন করা হয়।
বাংলাদেশের বিশ্ববিদ্যালয়গুলোতে ভর্তির জন্য ইতঃপূর্বে প্রতিটি শিক্ষাপ্রতিষ্ঠানে স্বতন্ত্র ভর্তি পদ্ধতি চালু ছিল। এতে শিক্ষার্থীদের দেশের বিভিন্ন স্থানে ভর্তি পরীক্ষায় অংশগ্রহণ করতে ছোটাছুটি করতে হতো। এমনকি কোনো কোনো বিশ্ববিদ্যালয়ের প্রতিটি বিভাগ/ইনস্টিটিউটের জন্য পৃথক আবেদনপত্র সংগ্রহ ও জমা দেওয়ার পাশাপাশি নির্ধারিত ভিন্ন ভিন্ন তারিখে পরীক্ষার জন্য নির্ধারিত কেন্দ্রে উপস্থিত হতে হতো। এ পুরো প্রক্রিয়াটি ছিল সময়সাপেক্ষ এবং অসচ্ছল শিক্ষার্থীদের ক্ষেত্রে অর্থনৈতিকভাবে ব্যয়বহুল। পরীক্ষার জন্য যাতায়াত, আহার ও আবাসন ব্যবস্থার খরচের কারণে অনেক পরিবারকেই অর্থ সংকুলানে হিমশিম খেতে হতো। তদুপরি নিরাপদ যাতায়াত এবং নিরাপত্তার অন্যান্য বিষয় নিয়ে অভিভাবকদেরও উদ্বিগ্ন থাকতে হতো। সংগত কারণেই এ ভর্তি প্রক্রিয়ায় নিুবিত্ত পরিবারগুলো এবং গ্রামাঞ্চল থেকে আসা শিক্ষার্থীদের জন্য উচ্চশিক্ষার সুযোগ প্রচণ্ডরকম বাধাগ্রস্ত হয়ে পড়ত।
সামগ্রিক বিষয়গুলো বিবেচনায় নিয়ে বিশ্ববিদ্যালয়ে ভর্তিতে এসব জটিলতা ও অসুবিধা দূর করতে একটি সমন্বিত, সাশ্রয়ী ও সহজতর ভর্তি পদ্ধতি প্রয়োজন, যা সব শিক্ষার্থীর জন্য সমান সুযোগ নিশ্চিত করতে পারে। এ উদ্দেশ্য সামনে রেখে দেশের পাবলিক বিশ্ববিদ্যালয়গুলোতে স্নাতক পর্যায়ে ২০২০-২১ শিক্ষাবর্ষ থেকে নির্দিষ্ট পরিসরে গুচ্ছ পদ্ধতিতে শিক্ষার্থী ভর্তির কার্যক্রম শুরু হয়। কিন্তু বিভিন্ন সীমাবদ্ধতার কারণে এ পদ্ধতি প্রত্যাশিত সফলতা অর্জন করতে পারেনি। অনেক শীর্ষস্থানীয় বিশ্ববিদ্যালয়; যেমন-ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়, চট্টগ্রাম বিশ্ববিদ্যালয়, রাজশাহী বিশ্ববিদ্যালয়, জাহাঙ্গীরনগর বিশ্ববিদ্যালয়, বাংলাদেশ প্রকৌশল বিশ্ববিদ্যালয় (বুয়েট) এবং বাংলাদেশ ইউনিভার্সিটি অব প্রফেশনালস (বিইউপি)সহ বেশ কয়েকটি বিশ্ববিদ্যালয় গুচ্ছ পদ্ধতিতে অংশগ্রহণ থেকে বিরত থেকেছে; আবার অনেক অংশগ্রহণকারী বিশ্ববিদ্যালয় নতুন করে এ পদ্ধতি থেকে বের হয়ে যাচ্ছে। তাদের অংশগ্রহণ না করার কারণ হিসাবে নিজস্ব একাডেমিক নীতিমালা, প্রশাসনিক কাঠামো এবং অভ্যন্তরীণ ব্যবস্থাপনার যুক্তিসংগত কারণগুলো উল্লেখ করা হয়েছে।
গুচ্ছ পদ্ধতির ভর্তি প্রক্রিয়ায় দীর্ঘসূত্রতা, সেশনজট, মাইগ্রেশন জটিলতা এবং নির্ধারিত সময়ে ক্লাস শুরু না হওয়ার মতো সমস্যা প্রকট হয়ে উঠেছে। অংশগ্রহণকারী বিশ্ববিদ্যালয়গুলোর মধ্যে কিছু বিশ্ববিদ্যালয় পর্যাপ্ত শিক্ষার্থী পাচ্ছে না, আবার কোনো কোনো ক্ষেত্রে শিক্ষার্থী পেতে দেরি হচ্ছে, যা তাদের কার্যক্রমে নেতিবাচক প্রভাব ফেলছে। এ পদ্ধতির বিভিন্ন স্তরে যেমন-প্রশ্নপত্র তৈরি, মডারেশন, প্রুফরিডিং এবং প্রশ্নের গোপনীয়তা রক্ষায় সমন্বয়হীনতা বড় চ্যালেঞ্জ হিসাবে দেখা দিয়েছে। এছাড়া গুচ্ছ পদ্ধতি পরিচালনার জন্য স্থানীয়ভাবে প্রয়োজনীয় দক্ষ জনবল, কার্যকর ব্যবস্থাপনা এবং উপযুক্ত কাঠামো এখনো পুরোপুরি প্রস্তুত নয় বলে অনুমিত। ফলে গুচ্ছ পদ্ধতি শিক্ষার্থীদের ভোগান্তি কমানোর পরিবর্তে তাদের জন্য নতুন চ্যালেঞ্জ তৈরি করেছে। এ সীমাবদ্ধতাগুলো কাটিয়ে ভবিষ্যতে কার্যকর ও সুশৃঙ্খল কেন্দ্রীয় ভর্তি পরীক্ষার জন্য সমন্বিত উদ্যোগ গ্রহণের প্রয়োজনীয়তা অত্যন্ত জরুরি।
অন্যান্য দেশের ভর্তি প্রক্রিয়া
উন্নত দেশগুলোর বিশ্ববিদ্যালয়ে ভর্তি প্রক্রিয়া সাধারণত শিক্ষার্থীবান্ধব ও সময়োপযোগী। অনেক দেশেই ভর্তির জন্য আলাদা কোনো ভর্তি পরীক্ষা নেওয়ার প্রয়োজন হয় না। উদাহরণস্বরূপ, যুক্তরাজ্যের বিশ্ববিদ্যালয়গুলোতে ভর্তির জন্য শিক্ষার্থীরা কেন্দ্রীয়ভাবে Universities and Colleges Admissions Service (UCAS)-এর মাধ্যমে আবেদন করে থাকে। সেখানে শিক্ষার্থীদের মাধ্যমিক ও উচ্চমাধ্যমিক পরীক্ষার ফলাফল (যেমন, A-Level বা সমমানের) বিবেচনা করা হয়। পাশাপাশি শিক্ষার্থীদের ব্যক্তিগত বিবৃতি (Personal Statement), শিক্ষকদের সুপারিশপত্র এবং ক্ষেত্রবিশেষে সাক্ষাৎকারের মাধ্যমে তাদের যোগ্যতার মূল্যায়ন করা হয়। একইভাবে কানাডা ও অস্ট্রেলিয়ার বিশ্ববিদ্যালয়গুলোতে মাধ্যমিক ও উচ্চমাধ্যমিক ফলাফলের ভিত্তিতে শিক্ষার্থীদের ভর্তি করা হয়, যেখানে শিক্ষার্থীর আগ্রহ এবং আগের একাডেমিক সাফল্যকে গুরুত্ব দেওয়া হয়।
যুক্তরাষ্ট্রের অনেক বিশ্ববিদ্যালয়ে স্ট্যান্ডার্ডাইজড টেস্ট (যেমন, SAT বা ACT) নেওয়া হলেও সাম্প্রতিক বছরগুলোতে অনেক শিক্ষাপ্রতিষ্ঠানে এ পরীক্ষাগুলোকে ঐচ্ছিক করা হয়েছে। বরং সেখানে শিক্ষার্থীর একাডেমিক পারফরম্যান্স, সহপাঠ কার্যক্রমে অংশগ্রহণ, লিডারশিপ স্কিল এবং ব্যক্তিগত নৈতিকতাকে বেশি গুরুত্ব দেওয়া হয়। ইউরোপের দেশগুলোর মধ্যে জার্মানি, ফিনল্যান্ড ও নেদারল্যান্ডসের মতো দেশে ভর্তির জন্য কেন্দ্রীয়ভাবে পরিচালিত অনলাইন আবেদন ব্যবস্থা রয়েছে। শিক্ষার্থীরা একসঙ্গে একাধিক বিশ্ববিদ্যালয়ের জন্য আবেদন করতে পারে, যা সময় ও অর্থ সাশ্রয় করে। জার্মানিতে কিছু কিছু কোর্সে সরাসরি মাধ্যমিক পরীক্ষার ফলাফলের ভিত্তিতে ভর্তি নেওয়া হয়। অন্যদিকে, নেদারল্যান্ডসে শিক্ষার্থীদের একটি কেন্দ্রীভূত প্ল্যাটফর্ম (Studielink) ব্যবহার করে আবেদন করতে হয়, যা পুরো প্রক্রিয়াটিকে সহজ ও কার্যকর করে তোলে।
তাহলে আমাদের করণীয় কী
বাংলাদেশের বিশ্ববিদ্যালয়গুলোতে উচ্চশিক্ষায় ভর্তির প্রক্রিয়া সহজ, সাশ্রয়ী ও শিক্ষার্থীবান্ধব করার লক্ষ্যে উন্নত দেশগুলোর আদলে এদেশের প্রেক্ষাপট বিবেচনায় নিয়ে একটি নতুন পদ্ধতি প্রণয়ন করা যেতে পারে। এ পদ্ধতিতে শিক্ষার্থীদের এসএসসি ও এইচএসসি পরীক্ষার ফলাফলের ভিত্তিতে ভর্তি প্রক্রিয়া সম্পন্ন করা যেতে পারে। শিক্ষার্থীদের দুটি পাবলিক পরীক্ষার ফলাফলের ওপর গুরুত্বারোপ করে একটি কেন্দ্রীয় মেধাতালিকা তৈরি করা যেতে পারে, যা পুরো প্রক্রিয়াকে স্বচ্ছ ও নির্ভুল করবে। এ পদ্ধতিতে একটি কেন্দ্রীয় অনলাইন প্ল্যাটফর্ম তৈরি করতে হবে, যেখানে শিক্ষার্থীরা আবেদন করতে পারবে। উন্নত দেশগুলোর মতো এ প্ল্যাটফর্মে শিক্ষার্থীরা সর্বোচ্চ নির্দিষ্টসংখ্যক বিশ্ববিদ্যালয় এবং পছন্দের বিভাগ বেছে নিতে পারবে। একটি আবেদন প্রক্রিয়া বিভিন্ন বিশ্ববিদ্যালয়ের জন্য প্রযোজ্য হবে, যা আবেদন প্রক্রিয়ার জটিলতা এবং ব্যয় হ্রাস করবে, পুরো প্রক্রিয়াকে সহজ করবে এবং শিক্ষার্থীদের একাধিক স্থানে ভর্তি পরীক্ষায় অংশগ্রহণের বিড়ম্বনা দূর করবে।
বাংলাদেশে বর্তমানে উচ্চমাধ্যমিকে ভর্তির ক্ষেত্রে মাধ্যমিক পরীক্ষার ফলাফলের ভিত্তিতে মেধাক্রম তৈরি করে শিক্ষার্থীদের পছন্দক্রম ও মেধাক্রমের ভিত্তিতে কলেজ নির্ধারণ করা হয়। আর এ পুরো কাজটি তত্ত্বাবধান করেন শিক্ষা মন্ত্রণালয়ের আওতাধীন একটি বিশেষায়িত কমিটি। বিশ্ববিদ্যালয়ে ভর্তির ক্ষেত্রে ইউজিসি অথবা ইউজিসি নিয়ন্ত্রিত কোনো প্ল্যাটফর্ম এ ভূমিকা পালন করতে পারে। তবে এ পদ্ধতিতে কিছু অতিরিক্ত বিষয় অন্তর্ভুক্ত করা যেতে পারে। যদি কোনো কারণে নির্ধারিত আসনের জন্য যোগ্য প্রার্থীর সংখ্যা বেশি হয়, অর্থাৎ কয়েকজন শিক্ষার্থীর স্কোর একই হয়, সেক্ষেত্রে ভর্তিচ্ছু বিষয়ের সঙ্গে সংশ্লিষ্ট বিষয়ে যাদের প্রাপ্ত নম্বর বেশি, তাদের নির্বাচিত করা যাবে, যা বর্তমানে উচ্চমাধ্যমিকে ভর্তির ক্ষেত্রে চলমান রয়েছে। এ ধরনের উদ্যোগ শিক্ষার্থীদের সামগ্রিক যোগ্যতা যাচাই করতে সাহায্য করবে। তবে অবশ্যই খেয়াল রাখতে হবে, যেন পদ্ধতিগত ভুলের জন্য কোনো যোগ্য শিক্ষার্থী বঞ্চিত না হয়।
ভর্তি প্রক্রিয়া পরিবর্তনের ইতিবাচক দিকগুলো
বাংলাদেশে এ পদ্ধতিটি সময় ও অর্থ সাশ্রয় করার পাশাপাশি শিক্ষার্থীদের জন্য বিশ্ববিদ্যালয়ে ভর্তিতে একটি সমান সুযোগ সৃষ্টি করবে। উচ্চমাধ্যমিক পরীক্ষার ফলাফল প্রকাশের পরপরই বিশ্ববিদ্যালয়ের ভর্তি প্রক্রিয়া শুরু করা যাবে বিধায় বর্তমানের মতো বিশ্ববিদ্যালয়ের ভর্তি প্রক্রিয়ার কারণে সময়ক্ষেপণ হবে না এবং শিক্ষার্থীদের নির্ধারিত সময়ে একাডেমিক কার্যক্রম শুরু নিশ্চিত করা যাবে, যা সেশনজট হ্রাস করতে সহায়ক হবে। যেহেতু শিক্ষার্থীরা মাধ্যমিক ও উচ্চমাধ্যমিকে প্রাপ্ত নম্বরের ভিত্তিতে ভর্তি হবে, যা কিনা সবার জানা থাকবে, সেহেতু এ পদ্ধতিতে ভর্তি প্রক্রিয়ার স্বচ্ছতা নিশ্চিত করা সম্ভব হবে। তাছাড়া এ পদ্ধতি বাস্তবায়ন হলে শিক্ষার্থীদের বিশ্ববিদ্যালয়ে ভর্তির জন্য আলাদা করে কোচিং করার প্রয়োজন হবে না। ফলে তারা মোটা অঙ্কের অর্থ ব্যয় ও শহরে এসে কোচিং করার ঝামেলা থেকে রেহাই পাবে। উপরন্তু প্রশ্নফাঁসসহ ভর্তি পরীক্ষার বিভিন্ন অনৈতিক কার্যকলাপে সম্পৃক্ত হওয়ার সম্ভাবনাও থাকবে না। যদিও এ পদ্ধতির কার্যকারিতা নির্ভর করবে একটি শক্তিশালী প্রযুক্তিগত অবকাঠামো, সুষ্ঠু ব্যবস্থাপনা এবং পরিচালনার দক্ষতার ওপর; তবে এটি বাস্তবায়িত হলে উচ্চশিক্ষার ক্ষেত্রে একটি যুগান্তকারী পরিবর্তন আনা সম্ভব হবে।
বিশ্ববিদ্যালয়ে ভর্তি প্রক্রিয়ায় সবার জন্য সমান সুযোগ নিশ্চিত করা অত্যন্ত জরুরি, যা হতে হবে শুধু মেধা ও যোগ্যতার ভিত্তিতে। মহান আল্লাহ সূরা যুমারের ৯নং আয়াতে বলেছেন, ‘যারা জানে আর যারা জানে না, তারা কি সমান?’ এর মাধ্যমে তিনি আমাদের শিক্ষা ও জ্ঞান অর্জনের গুরুত্ব বুঝিয়েছেন। উচ্চশিক্ষার মাধ্যমে দক্ষ ও পেশাদার জনগণ তৈরি হওয়া অত্যন্ত গুরুত্বপূর্ণ; তবে বাংলাদেশের বর্তমান আর্থ-সামাজিক প্রেক্ষাপটে, সবার জন্য সব বিষয়ে উচ্চশিক্ষার প্রয়োজন আছে, নাকি কেবল বিশেষায়িত বিষয়ের ক্ষেত্রে, সে বিষয়টিও গবেষণার দাবি রাখে। বর্তমানে উচ্চশিক্ষার পাশাপাশি কারিগরি শিক্ষার বিস্তারও জরুরি। কারিগরি শিক্ষা সম্প্রসারণের মাধ্যমে দক্ষ জনবল তৈরি করা সম্ভব, যারা দেশের উন্নয়নে ভূমিকা রাখতে পারবে এবং বিদেশ থেকে রেমিট্যান্স পাঠানোর সুযোগ সৃষ্টির মাধ্যমে দেশের অর্থনৈতিক উন্নয়ন ঘটাতে সক্ষম হবে। যেখানে অনেক শিক্ষার্থী উচ্চশিক্ষার সুযোগ পায় না এবং কর্মসংস্থানের অভাব রয়েছে, সেখানে কারিগরি শিক্ষার বিকাশ বাংলাদেশে বড় ধরনের পরিবর্তন আনতে পারে। এ দৃষ্টিকোণ থেকে আমাদের উচিত শিক্ষাব্যবস্থায় সমন্বয় সাধন করা, যাতে উচ্চশিক্ষার পাশাপাশি কারিগরি শিক্ষার গুরুত্বও বৃদ্ধি পায়।
মেজর জেনারেল মো. মাহবুব-উল আলম, বিএসপি, এনডিসি : বাংলাদেশ সেনাবাহিনীর কর্মকর্তা; বাংলাদেশ ইউনিভার্সিটি অব প্রফেশনালসের উপাচার্য