ভারতে পিকে ও সহযোগীদের ৩০০ কোটি টাকার সম্পদ, মালয়েশিয়ায় ৭ ফ্ল্যাট
যুগান্তর প্রতিবেদন
প্রকাশ: ০৭ জুন ২০২২, ০৯:০৬ এএম
পিকে হালদার। ফাইল ছবি
বাংলাদেশের আর্থিক খাতের আলোচিত জালিয়াত, কয়েক হাজার কোটি টাকা আত্মসাৎ করে পাচারের অভিযোগে ভারতে গ্রেফতার হওয়া পিকে হালদারকে আরও ১৪ দিনের কারা হেফাজতে পাঠিয়েছে আদালত।
১১ দিনের বিচার বিভাগীয় রিমান্ড শেষে পিকে হালদারকে আজ (মঙ্গলবার) সকাল ১১টায় কলকাতার মেট্রোপলিটন ম্যাজিস্ট্রেটের বিশেষ আদালতে তোলা হলে আরও ১৪ দিনের কারা হেফাজতে পাঠানো হয়েছে। আগামী ২১ জুন তাকে ফের ব্যাঙ্কশাল সিবিআইয়ের স্পেশাল কোর্টে তোলা হবে।
কয়েক হাজার কোটি টাকা আত্মসাত করে বাংলাদেশ থেকে পালিয়ে যাওয়া পিকে হালদার গত ১৪ মে পশ্চিমবঙ্গের উত্তর চব্বিশপরগনা জেলার অশোকনগর থেকে গ্রেফতার হন। পিকেসহ ছয়জনকে ওই দিন গ্রেফতার করে ভারতের কেন্দ্রীয় সংস্থা ইনফোর্সমেন্ট ডিরেক্টরেট (ইডি)। রাজ্যের বিভিন্ন স্থানে পিকে হালদারের প্রাসাদসম বাড়িসহ অনেক সম্পদের সন্ধান পায় ইডি।
গ্রেফতারের পর পিকে হালদারসহ সবাইকে আদালতে হাজির করলে প্রথম দফায় ৩ দিনের রিমান্ড মঞ্জুর করেন আদালত। সেই রিমান্ড শেষে গত ১৭ মে তাদের আদালতে হাজির করলে দ্বিতীয় দফায় আরও ১০ দিনের রিমান্ডে পাঠানো হয়। এরপর গত ২৭ মে কলকাতার নগর আদালত আজ (৭ জুন) পর্যন্ত বিচারিক হেফাজতে রেখে জেরার নির্দেশ দেন।
আজ কলকাতার মেট্রোপলিটন ম্যাজিস্ট্রেটের বিশেষ আদালতে পিকে হালদারকে হাজির করে ইডি। গত ১৪ দিনে বিচারিক রিমান্ডে পিকে হালদারকে জেরা করে ইডি। সেই জেরার সময় উঠে আসা নানা গুরুত্বপূর্ণ তথ্য আজ আদালতে তুলে ধরে ইডি জানিয়েছে, তারা পশ্চিমবঙ্গসহ ভারতের বিভিন্ন এলাকায় পিকে হালদারসহ তার সহযোগীদের ৮৮টি ব্যাংক অ্যাকাউন্টের সন্ধান পেয়েছে। পিকে এবং তার সহযোগীদের ৩০০ কোটি টাকার সম্পদ পেয়েছে তারা। ভারতের বিভিন্ন এলাকায় পিকে ও তার সহযোগীদের ৪৪টি স্থাবর ও অস্থাবর সম্পত্তির হদিস পায় সংস্থাটি।
এর আগে কারাগারে থাকা অবস্থায় পিকে হালদারকে জিজ্ঞাসাবাদ করে ইডি। জিজ্ঞাসাবাদের সেই বয়ান রেকর্ডও করা হয়। জিজ্ঞাসাবাদ করে একাধিক গুরুত্বপূর্ণ তথ্যের হদিস পায় ইডি। আদালতে ইডি জানায়, পিকে হালদারের ৪৪টি ব্যাংক অ্যাকাউন্ট আছে- যেখানে প্রায় ৬০ কোটি টাকা ক্যাশ রয়েছে।এ ছাড়া মালয়েশিয়ায় সাতটি ফ্ল্যাটসহ প্রায় ৪০টি সম্পত্তির হদিস পাওয়া গেছে।
ইডি আদালতকে আরও জানায়, এ পর্যন্ত জেরায় তারা আরও জানতে পেরেছে, মালয়েশিয়ায় পিকে হালদারের ৭টি বিলাসবহুল ফ্ল্যাট আছে।
পিকে হালদার ভারতে শিবশঙ্কর হালদার নামে পরিচিত। ইডি বলেছে, শিবশঙ্কর হালদার পরিচয় দিয়ে ভারতের পশ্চিমবঙ্গ সরকারের রেশন কার্ড, ভোটার পরিচয়পত্র, আয়কর দপ্তরের পরিচয়পত্র পিএএন বা প্যান, নাগরিকত্বের পরিচয়পত্র, আধার কার্ড ইত্যাদি সংগ্রহ করেছিলেন। এ ছাড়া তার অন্য সহযোগীরাও জালিয়াতির মাধ্যমে এসব কার্ড সংগ্রহ করেন বলে জানিয়েছে ইডি।