
প্রিন্ট: ০৭ এপ্রিল ২০২৫, ০৮:০৮ এএম
‘গঠনমূলক সম্পর্ক নষ্ট করে’ এমন বক্তব্য এড়িয়ে চলার আহ্বান মোদির

আন্তর্জাতিক ডেস্ক
প্রকাশ: ০৪ এপ্রিল ২০২৫, ০৫:৫৪ পিএম

আরও পড়ুন
থাইল্যান্ডের রাজধানী ব্যাংককে ষষ্ঠ বিমসটেক শীর্ষ সম্মেলনের ফাঁকে শুক্রবার (৪ এপ্রিল) বাংলাদেশের অন্তর্বর্তী সরকারের প্রধান উপদেষ্টা ড. মুহাম্মদ ইউনূসের সঙ্গে দ্বিপাক্ষিক বৈঠক করেন ভারতের প্রধানমন্ত্রী নরেন্দ্র মোদি।
মোদি এ সময় ড. ইউনূসের প্রতি গঠনমূলক সম্পর্কের জন্য ক্ষতিকর হতে পারে এমন বক্তৃতা এড়িয়ে চলার আহ্বান জানান।
দ্বিপাক্ষিক বৈঠকটি ৪০ মিনিট ধরে চলে বলে এক প্রেস বিজ্ঞপ্তিতে উল্লেখ করেছে ভারতের পররাষ্ট্র মন্ত্রণালয়।
নয়াদিল্লিতে এক মিডিয়া ব্রিফিংয়ে দেশটির পররাষ্ট্র সচিব বিক্রম মিশ্রি বলেন, ‘একটি গণতান্ত্রিক, স্থিতিশীল, শান্তিপূর্ণ, প্রগতিশীল ও অন্তর্ভুক্তিমূলক বাংলাদেশের পক্ষে প্রধানমন্ত্রী ভারতের সমর্থন পুনর্ব্যক্ত করেছেন। তিনি (মোদি) জোর দিয়ে বলেছেন, ভারত দুই দেশের সম্পর্কের মধ্যে একটি জনগণকেন্দ্রিক দৃষ্টিভঙ্গিতে বিশ্বাস করে। তিনি (মোদি) দীর্ঘ সময় ধরে দুই দেশের মধ্যে সহযোগিতামূলক সম্পর্কের কথা তুলে ধরেছেন, যা উভয় দেশের মানুষের জন্য বাস্তব সুবিধা এনে দিয়েছে’।
মিশ্রি বলেন, ‘এই চেতনায় প্রধানমন্ত্রী (মোদি) বাস্তববাদী চেতনার ভিত্তিতে বাংলাদেশের সঙ্গে গঠনমূলক সম্পর্ক প্রতিষ্ঠায় ভারতের আকাঙ্ক্ষার কথা প্রকাশ করেন’।
তিনি আরও বলেন, বৈঠকে ভারতের প্রধানমন্ত্রী বলেছেন, ‘সম্পর্কের ক্ষতি করে এমন যেকোনো বক্তব্য এড়িয়ে চলা উচিত’।
মিশ্রি বলেন, ‘প্রধানমন্ত্রী মোদি সীমান্তে অবৈধ অনুপ্রবেশ এবং বাংলাদেশে হিন্দুসহ সব সংখ্যালঘুদের নিরাপত্তা ও সুরক্ষার বিষয়টি উত্থাপন করেছেন’।
এদিকে বৈঠকের পর ভারতের পররাষ্ট্র মন্ত্রণালয় এক বিবৃতিতে বলেছে, প্রধানমন্ত্রী আশা করেছেন যে বাংলাদেশ সরকার সংখ্যালঘুদের নিরাপত্তা নিশ্চিত করবে এবং তাদের বিরুদ্ধে ঘটে যাওয়া নির্যাতনের ঘটনা পূর্ণাঙ্গভাবে তদন্ত করবে।
অন্যদিকে বাংলাদেশ আগামী দুই বছরের জন্য বিমসটেকের সভাপতির দায়িত্ব গ্রহণ করায় নরেন্দ্র মোদি ড. ইউনূসকে শুভেচ্ছা জানিয়েছেন। তিনি আশা করেছেন, বাংলাদেশের নেতৃত্বে ফোরামটি আঞ্চলিক সহযোগিতা আরও শক্তিশালী করবে।
এদিকে বাংলাদেশের প্রেস উপদেষ্টা বলেন, প্রফেসর ইউনূস বাংলাদেশের স্বার্থ সংশ্লিষ্ট সব বিষয় তুলে ধরেছেন।
তিনি বলেন, ‘বৈঠকে সাবেক প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা ভারতে থেকে যে উসকানিমূলক বক্তব্য দিচ্ছেন- সে বিষয়ে, সীমান্ত হত্যা বন্ধ, গঙ্গা পানি চুক্তি নবায়ন এবং তিস্তা চুক্তি নিয়ে আলোচনা হয়েছে‘।
মিশ্রিও নিশ্চিত করেছেন যে, বাংলাদেশ শেখ হাসিনার বিষয়টি উত্থাপন করেছে।
বাংলাদেশের সাবেক প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনার ক্ষমতাচ্যুতি এবং ভারতে শেখ হাসিনার অবস্থানকে কেন্দ্র করে কয়েক মাস ধরে দিল্লি-ঢাকা উত্তেজনার পর এটিই ইউনূস-মোদির প্রথম বৈঠক।
চলতি সপ্তাহে বেইজিং সফরে ভারতের উত্তর-পূর্বাঞ্চল এবং ভুটান, নেপাল ও বাংলাদেশকে ‘চীনা অর্থনীতির সম্প্রসারণক্ষেত্র’- হিসেবে উল্লেখ করায় দিল্লিতে উদ্বেগ তৈরি হয়েছিল।
তবে, দুই দেশের পারস্পরিক স্বার্থসংশ্লিষ্ট সব বিষয় দ্বিপাক্ষিক আলোচনা ও সমঝোতার মাধ্যমে সমাধান করা সম্ভব বলেই মনে করেন নরেন্দ্র মোদি। তিনি দৃঢ়ভাবে বিশ্বাস করেন, এই আলোচনা ও সমঝোতাই দীর্ঘস্থায়ী ও পারস্পরিক লাভজনক সম্পর্ক বজায় রাখার জন্য গুরুত্বপূর্ণ।