
প্রিন্ট: ৩০ মার্চ ২০২৫, ১০:২৯ পিএম

যুগান্তর প্রতিবেদন
প্রকাশ: ২৭ মার্চ ২০২৫, ১২:১৪ এএম

ফাইল ছবি
আরও পড়ুন
রোজার পর এবার বাজারে ঈদ পণ্যের দামেও স্বস্তি বিরাজ করছে। গত বছর রোজার ঈদের তুলনায় প্রতি কেজি পোলাও চাল ৪০ টাকা কমে বিক্রি হচ্ছে। কেজিপ্রতি চিনির দাম কমেছে ২০ টাকা। গতবারের তুলনায় সেমাইও বিক্রি হচ্ছে কম দামে। আর দুধ ও ঘি আগের দামেই বিক্রি হচ্ছে। পাশাপাশি এলাচ বাদে সব ধরনের মসলা পণ্যের দামও স্থিতিশীল।
এমন পরিস্থিতির মধ্যেও এক ধরনের শঙ্কা আছে ভোক্তাদের। তাদের অভিমত, এক মাস রোজা রাখার পর ঈদে সব শ্রেণির মানুষ আনন্দে মেতে ওঠে। নতুন পোশাকের সঙ্গে সামর্থ্য মতো ঘরে ভালো খাবারেরও আয়োজন করা হয়। এতে বাজারে বাড়তি চাহিদা তৈরি হয়। আর এই চাহিদাকে পুঁজি করে একশ্রেণির অসাধু ব্যবসায়ী অতি মুনাফা করতে মরিয়া হয়ে ওঠে। ক্রেতার পকেট কাটতে বাড়ায় পণ্যের দাম। তবে এবার রোজায় পণ্যের দাম কম ছিল। তাই রোজার মতো ঈদ বাজারে পণ্যের দাম সহনীয় রাখতে তদারকি জোরদার করতে হবে।
বুধবার রাজধানীর জিনজিরা বাজার, নয়াবাজার ও রায়সাহেব বাজার ঘুরে খুচরা বিক্রেতাদের সঙ্গে কথা বলে জানা গেছে, গত বছর রোজার ঈদের আগে ২০০ গ্রামের প্রতি প্যাকেট চিকন সেমাই বিক্রি হয়েছে ৪৫-৫০ টাকা। যা এবার ৪৫ টাকায় বিক্রি হচ্ছে। পাশাপাশি প্রতিকেজি খোলা চিকন সেমাই বিক্রি হচ্ছে ১২০-১৪০ টাকা। যা গত বছর বিক্রি হয়েছে ১৫০-১৮০ টাকা। ২০০ গ্রামের প্রতি প্যাকেট লাচ্ছা সেমাই বিক্রি হচ্ছে ৫০ টাকা। যা আগে ৫০-৬০ টাকায় বিক্রি হয়েছে। পাশাপাশি প্রতিকেজি পোলাও চাল বিক্রি হচ্ছে ১১০-১২০ টাকা। যা আগে ১৪০-১৬০ টাকা ছিল। প্রতিকেজি চিনি বিক্রি হচ্ছে ১১৮-১২০ টাকা। যা গত বছর ঈদের আগে বিক্রি হয়েছে ১৪০ টাকা।
বিক্রেতাদের সঙ্গে কথা বলে আরও জানা গেছে, প্রতিকেজি মিল্কভিটা ঘি বিক্রি হচ্ছে ১৫০০ টাকা। যা এক মাস আগেও ৬০ টাকা কম ছিল। এছাড়া প্রতিকেজি প্রাণ ঘি বিক্রি হচ্ছে ১৪০০ টাকা ও আড়ং ব্র্যান্ডের প্রতিকেজি ঘি বিক্রি হচ্ছে ১৫০০ টাকা। তাছাড়া ডিপ্লোমা দুধ প্রতিকেজি বিক্রি হচ্ছে ৮৯০ টাকা। প্রতিকেজি ডানো ও মার্কস বিক্রি হচ্ছে ৮৮০ ও ৮৬০ টাকা। প্রতিকেজি কিশমিশ বিক্রি হচ্ছে ৬০০ টাকা। যা গত বছর একই সময় ৬৮০-৭০০ টাকা ছিল। প্রতিকেজি দেশি পেঁয়াজ বিক্রি হচ্ছে ৩০-৪৫ টাকা। যা গত বছর ঈদের আগে বিক্রি হয়েছে ৭০ টাকা। দেশি রসুন বিক্রি হচ্ছে ৮০-১৬০ টাকা। যা আগে ১২০-১৪০ টাকা ছিল। দেশি শুনকা মরিচ বিক্রি হচ্ছে ৩০০ টাকা। যা আগে ৪৫০ টাকায় বিক্রি হয়েছে। দারুচিনি বিক্রি হচ্ছে ৫০০-৫৫০ টাকা। ছোট দানার এলাচ প্রতিকেজি বিক্রি হচ্ছে ৪৫০০-৫০০০ টাকা। এছাড়া খুচরা বাজারে প্রতিকেজি গরুর মাংস বিক্রি হচ্ছে ৭৫০-৮০০ টাকা। যা আগে ৭৫০-৭৮০ টাকা ছিল। প্রতিকেজি ব্রয়লার মুরগি বিক্রি হচ্ছে ২০০-২৩০ টাকা।
রাজধানীর নয়াবাজারে পণ্য কিনতে আসা মো. সাঈদ বলেন, এবার বাজারে রোজার আগে থেকেই কিছুটা স্বস্তি আছে। পণ্যের দাম গত রোজার তুলনায় কম ছিল। এখন পর্যন্ত ঈদ ঘিরেও পণ্যের দামেও কিছুটা স্বস্তি বিরাজ করছে। তবে বেড়েছে মাংসের দাম। তাছাড়া ঈদ এলেই একশ্রেণির ব্যবসায়ীরা পণ্যের দাম বাড়িয়ে দেয়। এবার যাতে এমনটা না করতে পারে, সেজন্য তদারকি জোরদার করতে হবে।
কনজুমারস অ্যাসোসিয়েশন অব বাংলাদেশের (ক্যাব) কেন্দ্রীয় কমিটির ভাইস প্রেসিডেন্ট এসএম নাজের হোসাইন যুগান্তরকে বলেন, সরকারের একাধিক পদক্ষেপের কারণে এবার রোজায় দু-একটি পণ্য ছাড়া অন্যান্য পণ্যের দামে ভোক্তারা স্বস্তিতে ছিল। ঈদেও যাতে এই ধারাবাহিকতা বজায় থাকে সেজন্য সংশ্লিষ্ট কর্তৃপক্ষকে কঠোরভাবে বাজার মনিটরিং করতে হবে। এতে বাজারে ঈদ ঘিরেও ক্রেতারা স্বস্তি পাবে।
জাতীয় ভোক্তা অধিকার সংরক্ষণ অধিদপ্তর সূত্র জানায়, রোজা ঘিরে বাজার সার্বিকভাবে তদারকি করা হয়েছে। অনিয়ম পেলেই আইনের আওতায় আনা হয়েছে। ইতোমধ্যে অনেক অসাধু ব্যবসায়ীকে জরিমানা করা হয়েছে। এছাড়া ঈদ ঘিরে তদারকি জোরদার করা হয়েছে। আশা করা যাচ্ছে এবার ঈদেও রোজার মতো পণ্যের দাম সহনীয় থাকবে।