Logo
Logo
×

জাতীয়

‘ইসরাইলি আগ্রাসন পুঁজিবাদী, ধর্মীয়ভাবে ব্যাখ্যা করা যাবে না’

Icon

যুগান্তর প্রতিবেদন

প্রকাশ: ২০ মার্চ ২০২৫, ০৫:৪২ পিএম

‘ইসরাইলি আগ্রাসন পুঁজিবাদী, ধর্মীয়ভাবে ব্যাখ্যা করা যাবে না’

ফিলিস্তিনে ইসরাইলের চলমান আগ্রাসন সাম্রাজ্যবাদ ও পুঁজিবাদের অংশ, এটিকে ধর্মীয় দৃষ্টিকোণ থেকে ব্যাখ্যা করা যাবে না বলে মন্তব্য করেছেন অধ্যাপক আনু মুহাম্মদ। 

বৃহস্পতিবার দুপুরে রাজধানীর জাতীয় প্রেস ক্লাবের সামনে যুদ্ধবিরতি লঙ্ঘন করে গাজায় গণহত্যার প্রতিবাদে ফিলিস্তিন সংহতি কমিটি বাংলাদেশ আয়োজিত প্রতিবাদ সমাবেশে এ মন্তব্য করেন তিনি।

অধ্যাপক আনু মুহাম্মদ বলেন, ফিলিস্তিনের ওপর ইসরাইলের যে আগ্রাসন, সেটা হচ্ছে সাম্রাজ্যবাদ, পুঁজিবাদের আগ্রাসন। এটা ধর্মীয়ভাবে ব্যাখ্যা করা যাবে না। 

তিনি বলেন, ধর্মীয়ভাবে যদি আগ্রাসন মোকাবিলা করা সম্ভব হতো, তাহলে সৌদি আরবসহ আরব দেশগুলো এরকম নিষ্ক্রিয় ভূমিকা পালন করত না এবং সাম্রাজ্যবাদের সহযোগী ভূমিকা পালন করত না। 

তিনি বলেন, আজকে মার্কিন সাম্রাজ্যবাদের এক হাত যদি হয় ইসরাইল, তাহলে আরেক হাত আমরা দেখতে পাচ্ছি সৌদি আরব। তাদের নিষ্ক্রিয়তার ফলেই ইসরাইলের পক্ষে মার্কিন সাম্রাজ্যবাদের সহায়তায় এমন বর্বর হত্যাযজ্ঞ চালানো সম্ভব হয়েছে।

জাতিসংঘের সমালোচনা করে আনু মুহাম্মদ বলেন, জাতিসংঘ সম্পূর্ণ একটা অকার্যকর প্রতিষ্ঠানে পরিণত হয়েছে। জাতিসংঘ এখনো মার্কিন সাম্রাজ্যবাদী বিশ্বব্যবস্থায় পরিচালিত হচ্ছে। এই সাম্রাজ্যবাদী বিশ্বব্যবস্থার পতন না হলে সারা বিশ্বের কোনো মানুষ, কোনো অঞ্চল নিরাপদ নয়।

তিনি বলেন, অন্তর্বর্তীকালীন সরকারের কাছে আমাদের স্পষ্ট বক্তব্য-যদি বাংলাদেশে গণতান্ত্রিক রূপান্তর করতে হয়, তাহলে ভারতের আধিপত্যবাদের বিরুদ্ধে লড়াই এবং মার্কিন সাম্রাজ্যবাদের বিরুদ্ধে লড়াই একসঙ্গে যুগপৎভাবে অগ্রসর করতে হবে।

আনু মুহাম্মদ বলেন, গাজায় কাগজে কলমে যুদ্ধবিরতি আছে। সেটার ওপর ভরসা করে গাজার অনেক নারী-শিশু গাজায় ফিরে এসেছিল এবং নতুন করে এই ধ্বংসস্তূপে জীবন খোঁজার চেষ্টা করছে। তখনই ট্রাম্পের সঙ্গে নেতানিয়াহু পরিষ্কার আলাপ-আলোচনা করে সম্মতি নিয়ে একটা বড় পরিকল্পনার অংশ হিসেবে ইসরাইল আবার বর্বর হামলা শুরু করেছে।

তিনি বলেন, গাজা অঞ্চলে মার্কিন সাম্রাজ্যবাদ যুদ্ধ চালাচ্ছে নিজের বসতি তৈরি করা ও তার মুনাফার সন্ধানে এবং গাজা অঞ্চলে তারা আধিপত্যটা নিশ্চিত করার জন্য।

বাংলাদেশের কমিউনিস্ট পার্টির (সিপিবি) সভাপতি মোহাম্মদ শাহ আলম বলেন, আজকে এই বাংলাদেশে পুঁজিবাদ, সাম্রাজ্যবাদ, জায়নবাদের বিরুদ্ধে আমাদের এই লড়াই তীব্র এবং শক্তিশালী করতে হবে। তাই আমি বলতে চাই, ফিলিস্তিন সংহতি কমিটি বাংলাদেশের ব্যানারে কালকে হোক বা পরশু হোক, গোটা বাংলাদেশে যেন প্রতিবাদ মিটিং-মিছিল ঘোষণা করা হয়।

অন্তর্বর্তী সরকারের কাছে প্রশ্ন রেখে শাহ আলম বলেন, আগের সরকারও গাজায় যে হত্যাকাণ্ড চলছিল, তার তীব্র প্রতিবাদ তারা করে নাই। বর্তমান সরকারও আমাদের গণতন্ত্রের ছবক, সংস্কারের ছবক শোনাচ্ছে। তাদের ভূমিকা কি?

ফিলিস্তিন সংহতি কমিটি বাংলাদেশের আহ্বায়ক ইমেরিটাস অধ্যাপক সিরাজুল ইসলাম চৌধুরী বলেন, ফিলিস্তিনে যে হত্যাকাণ্ড চলছে, বুধবার এই সংখ্যা ছিল ৪১৩, আজকে ১ হাজারে পৌঁছেছে। এর পেছনে যে মার্কিন সাম্রাজ্যবাদের সমর্থন আছে, এটা স্পষ্ট। 

সিরাজুল ইসলাম বলেন, ফিলিস্তিনের যে লড়াই, সে লড়াই আমাদেরও লড়াই। পুঁজিবাদ, সাম্রাজ্যবাদের বিরুদ্ধে লড়াই। আমরা এটা পরিষ্কার বুঝতে পারছি পুঁজিবাদ, সাম্রাজ্যবাদকে যদি বিদায় করতে না পারা যায়, এ ধরনের ঘটনা ঘটতেই থাকবে। যেটা আমরা ফিলিস্তিনে দেখতে পাচ্ছি।

সমাবেশ থেকে আগামী রোববার সারা দেশে ফিলিস্তিনে সাম্রাজ্যবাদী ও জায়নবাদী হামলার প্রতিবাদে বিক্ষোভের আহ্বান জানান ডা. হারুন উর রশীদ। 

সমাবেশে উপস্থিত ছিলেন, বাংলাদেশের কমিউনিস্ট পার্টির সাধারণ সম্পাদক রুহিন হোসেন প্রিন্স, প্রেসিডিয়াম সদস্য আব্দুল্লাহ আল কাফি রতন, গণতান্ত্রিক বিপ্লবী পার্টির সভাপতি মোশরেফা মিশু, বাসদ (মার্ক্সবাদী) আহ্বায়ক মাসুদ রানা প্রমুখ।

Jamuna Electronics

Logo

সম্পাদক : আবদুল হাই শিকদার

প্রকাশক : সালমা ইসলাম