Logo
Logo
×

জাতীয়

ভারতীয় মিডিয়া প্রবলভাবে আমাদের বিরুদ্ধে নেমেছে: পররাষ্ট্র উপদেষ্টা

Icon

যুগান্তর প্রতিবেদন

প্রকাশ: ১৭ মার্চ ২০২৫, ১০:৫৪ পিএম

ভারতীয় মিডিয়া  প্রবলভাবে আমাদের বিরুদ্ধে নেমেছে: পররাষ্ট্র উপদেষ্টা

পররাষ্ট্র উপদেষ্টা মো. তৌহিদ হোসেন বলেছেন, ভারতীয় মিডিয়া আমাদের বিরুদ্ধে প্রবলভাবে নেমেছে। তারা অন্তর্বর্তী সরকারের বিরুদ্ধে ব্যাপকভাবে অপপ্রচার চালাচ্ছে। তবে আমাদের ইতিবাচক দিক হলো প্রধান উপদেষ্টা ড. ইউনূসের ইমেজ। সবাই তাকে চেনেন। তার তত্ত্বাবধানে এরকম অপকর্ম সম্ভব নয়, এটা সবাই বিশ্বাস করেন।

সোমবার রাজধানীর ইকোনমিক রিপোর্টার্স ফোরাম (ইআরএফ) মিলনায়তনে এক সেমিনারে তিনি এ কথা বলেন। সেমিনারের বিষয় ছিল ‘বৈদেশিক মুদ্রা সাশ্রয়ে বাংলাদেশে তুলা চাষের গুরুত্ব ও সম্ভাবনা’। অনুষ্ঠানটি যৌথভাবে আয়োজন করে ইআরএফ, বাংলাদেশ কটন জিনার্স অ্যাসোসিয়েশন ও বাংলাদেশ সুদান কটন জিনিং ইন্ডাস্ট্রিজ। অনুষ্ঠানে আরও বক্তব্য দেন জাতীয় রাজস্ব বোর্ডের (এনবিআর) সদস্য (কাস্টম বন্ড) মোয়াজ্জেম হোসেন, বাংলাদেশ কটন জিনার্স অ্যাসোসিয়েশনের সাধারণ সম্পাদক গোলাম সাবের, তুলা উন্নয়ন বোর্ডের নির্বাহী পরিচালক ড. ফকরে আলম ইবনে তাবিব, সুদানে তুলাচাষে সফল প্রবাসী উদ্যোক্তা মো. আবুল খায়ের, ইআরএফের সভাপতি দৌলত আক্তার মালা ও সাধারণ সম্পাদক আবুল কাশেম।

পররাষ্ট্র উপদেষ্টা বলেন, ভারতীয় মিডিয়া আমাদের বিরুদ্ধে ব্যাপকভাবে অপপ্রচারে নেমেছে। এ ব্যাপারে সবাইকে সচেতন থাকতে হবে। বিশেষ করে বাংলাদেশের গণমাধ্যমকে ইতিবাচক বিষয়গুলো তুলে ধরতে হবে। তিনি বলেন, ওমান প্রবাসীরা পাসপোর্ট নিয়ে সমস্যায় আছেন। তাদের কষ্ট লাঘবে উদ্যোগ নেওয়া হয়েছে। পাসপোর্ট নিয়ে সৃষ্ট জটিলতা শিগ্গিরই অর্ধেকে নেমে আসবে বলে আশা করছি।

তৌহিদ হোসেন বলেন, তুলাকে কৃষিপণ্য ঘোষণা করা এবং দেশে তুলা উৎপাদন বাড়াতে দুই মাসের মধ্যে কার্যকর পদক্ষেপ নেবে সরকার। দেশি তুলার ওপর আরোপিত কর জরুরি ভিত্তিতে প্রত্যাহার করতে এনবিআরকে আহবান জানান তিনি। উপদেষ্টা বলেন, তামাক চাষের কারণে জমির উর্বরতা নষ্ট হচ্ছে। তামাক চাষের জমির কিছু অংশে তুলা চাষ করলে কৃষকও লাভবান হবেন, আবার দেশও অর্থনৈতিকভাবে উপকৃত হবে। দেশের জন্য ভালো তা কোনো গোষ্ঠীর বিপক্ষে গেলেও সেই সিদ্ধান্ত নিতে পিছপা হবে না ড. ইউনূসের নেতৃত্বাধীন সরকার। 

তিনি বলেন, তুলা রপ্তানিতে যুক্তরাষ্ট্র শুল্কারোপ করছে। তবে বাংলাদেশ এর বাইরে। যুক্তরাষ্ট্র থেকে তুলা আমদানির উদ্যোগ নেওয়া হতে পারে।

এলডিসি থেকে উত্তরণের সময়সীমা পেছানো উচিত হবে না জানিয়ে তৌহিদ হোসেন বলেন, উত্তরণের জন্য সরকার ও ব্যবসায়ীরা আগে তেমন কোনো প্রস্তুতি নেয়নি। তাই বলে থেমে থাকা যাবে না। উত্তরণ-পরবর্তী তিন বছর সময় পাওয়া যাবে। তখনই ব্যবসায়ীরা প্রস্তুতি নেবেন। আমদানি ব্যয় সাশ্রয়ী হওয়ায় দেশীয় তুলাকে যেখানে প্রণোদনা দেওয়া উচিত সেখানে ট্যাক্স ভ্যাট বসানো হয়েছে।

দেশি তুলার ওপর আরোপিত এই ট্যাক্স কমাতে এনবিআর চেয়ারম্যানের কাছে সুপারিশ করার কথা জানান প্রতিষ্ঠানটির সদস্য (কাস্টম বন্ড) মোয়াজ্জেম হোসেন। দ্রুতই দেশি তুলার ওপর আরোপিত ট্যাক্স-ভ্যাট প্রত্যাহারের সুখবর আসবে বলে আশা করেন তিনি। 

গোলাম সাবের বলেন, বাংলাদেশে তামাক কৃষিপণ্য অথচ তুলাকে এখনো কৃষিপণ্য হিসাবে স্বীকৃতি দেওয়া হয়নি। এর ফলে তুলা চাষি ও জিনার্সরা কৃষি ঋণ নেওয়ার সুযোগ থেকে বঞ্চিত হয়। ঋণ নিয়ে দিতে হয় বাড়তি সুদ। সরকারের নীতি সহায়তা পেলে অন্তত দুই লাখ হেক্টর জমিতে তুলা চাষ করে আমদানিকৃত তুলার চার ভাগের এক ভাগ দেশে উৎপাদন করা সম্ভব। 

তিনি বলেন, চামড়ার মৌসুমে ট্যানার্সদের যেভাবে স্বল্পসুদের ঋণ দেওয়া হয়। তুলায়ও স্বল্পসুদের ঋণ দেওয়া হলে কৃষক পণ্যটি উৎপাদন করে দাম পাওয়ার অনিশ্চয়তা থেকে বের হয়ে আসতে পারবে। 

তুলা উন্নয়ন বোর্ডের নির্বাহী পরিচালক ড. ফকরে আলম ইবনে তাবিব বলেন, ‘দেশে প্রায় ৪৫ হাজার কোটি টাকার তুলা আমদানি করতে হয়। বিপুল এই বৈদেশিক মুদ্রা সাশ্রয়ে এক-চতুর্থাংশ দেশে উৎপাদন করা সম্ভব বলে মনে করেন। 

তিনি বলেন, ধানের জমিতে তুলা চাষ হয় না। তুলা মূলত চরাঞ্চল, বরেন্দ্র এলাকা, দক্ষিণাঞ্চলের লবণাক্ত এলাকা, পাহাড়ি এলাকাসহ উঁচু জমিতে তুলা চাষ করা হয়। নীতি সহযোগিতা দেওয়া হলে খাদ্য নিরাপত্তা ব্যাহত না করেই দেশে ২০ থেকে ২৫ লাখ টন তুলা উৎপাদন করা সম্ভব। তুলা বীজ থেকে ভোজ্যতেল ও গবাদি পশুর খাদ্য খৈল পাওয়া যায়। ফলে তুলা চাষ বাড়লে আমদানিনির্ভর ভোজ্যতেল ও খৈল আমদানি কমবে।

বাংলাদেশ সুদান কটন জিনিং ইন্ডাস্ট্রির ব্যবস্থাপনা পরিচালক ও সুদানে তুলা চাষে সফল প্রবাসী উদ্যোক্তা মো. আবুল খায়ের বলেন, বাংলাদেশে তুলা চাষ বাড়াতে সহায়তা করবেন। ইতোমধ্যে উচ্চফলনশীল তিনটি উন্নত জাতের তুলা বীজ পরীক্ষামূলকভাবে চাষ করা হয়েছে। এই নতুন জাতের চাষাবাদ শুরু হলে কম জমি থেকে বেশি তুলা উৎপাদন করার সম্ভব।

Jamuna Electronics

Logo

সম্পাদক : আবদুল হাই শিকদার

প্রকাশক : সালমা ইসলাম