পুলিশকে নতুন শপথ নেওয়ার আহ্বান জানিয়ে যা বললেন ড. ইউনূস

যুগান্তর প্রতিবেদন
প্রকাশ: ১৭ মার্চ ২০২৫, ০৫:৩৪ পিএম

পুলিশকে নতুন শপথ নেওয়ার আহ্বান জানিয়ে অন্তর্বর্তী সরকারের প্রধান উপদেষ্টা অধ্যাপক ড. মুহাম্মদ ইউনূস বলেন, ‘মানুষকে বাধা দেব না। তার পথকে সহজ করব। তার পাশে থাকব। তাহলে দেখব যে, এ দেশের কোনো সমস্যা হবে না। শুধু মানুষের পাশে থেকে তাদের আইনের ভেতরে রাখতে হবে। তাকে বলতে হবে, আইনের ভেতরে থাকেন, আপনার যা দরকার আমি করে দেবো।
সোমবার মাঠপর্যায়ের পুলিশ কর্মকর্তাদের উদ্দেশে দেওয়া বক্তব্যে তিনি এ আহ্বান জানান।
ড. ইউনূস বলেন, নতুন বাংলাদেশে পুলিশ বাহিনীর মুশকিল হলো, ওই অন্ধকার যুগে তারা অ্যাকটিভ পার্টিসিপেন্ট ছিল—নিজের ইচ্ছায় না, সরকারি কাজ করতে গিয়ে হয়েছে। কাজেই নতুন বাংলাদেশে পুলিশকে দেখিয়ে দিতে হবে-আমরা মানুষ খারাপ না, খারাপ মানুষের পাল্লায় পড়েছিলাম, সেখান থেকে বের হয়ে এসেছি। দেখো আমরা কী করতে পারি। কাজের মাধ্যমে আমরা দেখাবো যে, আমাদের হাত দিয়েই এই নতুন বাংলাদেশ সৃষ্টি হবে। আমরা বড় রকম ভূমিকা পালন করব। কারণ আমাদের কাছেই রয়েছে আইন ও শৃঙ্খলা-এটা প্রতিষ্ঠা করব।
‘পুলিশ হব বন্ধু। কারণ, আমি আইনের পক্ষের মানুষ। আমি আইন প্রতিষ্ঠা করার মানুষ। আইন হলো আমাদের সবার আশ্রয়। পুলিশ হলো আশ্রয়দাতা। আমরা এই ইমেজটা যদি প্রতিষ্ঠিত করতে পারি, মানুষ অতীতের সব কথা ভুলে যাবে,’ যোগ করেন তিনি।
ড. ইউনূস বলেন, লণ্ডভণ্ড অবস্থার মধ্যে আমরা এই যাত্রা শুরু করলাম। সারা দুনিয়ার যত দেশ আছে, সবাই আমাদেরকে সমর্থন করল। শুধু মিনমিনে সমর্থন না। উৎসাহ ভরে এগিয়ে এলো। তারা মনে করেছে, এই দেশ উঠে দাঁড়াতে পারলে ভালো সঙ্গী হবে সবার। আমাদের উপরে তারা ভরসা করে।
প্রধান উপদেষ্টা বলেন, ১৬ বছরের ইতিহাস আমরা বদলাতে পারব না। ১৬ বছরের কালিমা সারা গায়ে মাখা আছে, রাতারাতিটা সেটা পালটাতে পারবো না। একজন মানুষ হিসেবে আমি কর্তব্য নির্ধারণ করতে পারি, সম্পূর্ণ নতুন ভাবমূর্তি প্রতিষ্ঠা করতে পারি। নতুন বাংলাদেশের পুলিশ বাহিনী হিসেবে আমাদের করণীয় ঠিক করতে হবে। অতীত নিয়ে কান্নাকাটির দরকার নেই। নতুনের জন্য আমরা প্রস্তুত এবং এটা করে দেখাব।
তিনি বলেন, পুলিশ সম্বন্ধে ইমেজ হলো, তারা খারাপটাই আগে দেখে, খারাপটা আগে করে। কিন্তু আমরা ভালোটা আগে দেখব, ভালোটা আগে করব। দু-একজন করাপ্ট হলে বাহিনী পালটায় না। বাহিনী সামগ্রিকভাবে একটা কাঠামো এবং এই কাঠামোর অনেক শক্তি।
নির্বাচন আসন্ন উল্লেখ করে তিনি বলেন, যেহেতু নির্বাচন আসছে, নানা রকমের সমস্যা হবে, নানা রকম চাপ আসবে। অনেকে ডেসপারেট হয়ে যাবে—আমার কেন্দ্রে জিতাতে হবে, ওর কেন্দ্রে জিতাতে হবে। সেখানে পুলিশ আইন মানতে চাইলে তারা ক্ষ্যাপাক্ষেপি করবে। আমাদের সেখানে শক্ত থাকতে হবে, আইনের ভেতরে থাকতে হবে। যাতে করে যে সরকার নির্বাচিত হয়ে আসবে, সে সরকার আইনের সরকার হয়। যে আইন ভেঙে আসবে, সে কখনো আইন ধরে রাখতে পারবে না। কারণ, আইন ভাঙাই তার অভ্যাস।