হাসিনার শাসনামল ছিল একটি দস্যু পরিবারের শাসন: গার্ডিয়ানকে ড. ইউনূস

আন্তর্জাতিক ডেস্ক
প্রকাশ: ১০ মার্চ ২০২৫, ০৫:০৯ পিএম

গত আগস্টে অধ্যাপক ড. মুহাম্মদ ইউনূস যখন দেশে ফিরলেন তখনও বাংলাদেশের রাস্তাগুলো ছিল রক্তে ভেজা। পুলিশের ছোড়া বুলেটে নিহত এক হাজারেরও বেশি বিক্ষোভকারী ও শিশুর লাশ মর্গে স্তূপ করে রাখা ছিল তখনও।
ক্যালেন্ডারের পাতায় তখন ৫ আগস্ট ২০২৪। ছাত্র-জনতার অভ্যুত্থানের মুখে
সেদিন পতন হয় আওয়ামী লীগ সরকারের। এরপর দেশ ছেড়ে হেলিকপ্টারে চড়ে ভারতে পালান ক্ষমতাচ্যুত
প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা। ঠিক সেই মূহুর্তে বাংলাদেশের অবস্থা কতটা বিপর্যস্ত
ছিল তা নিয়ে ব্রিটিশ গণমাধ্যম দ্য গার্ডিয়ানের সঙ্গে খোলামেলা কথা বলেছেন অন্তর্বর্তী সরকারের প্রধান উপদেষ্টা ড. ইউনূস।
শেখ হাসিনার শাসনামল নিয়ে প্রধান উপদেষ্টা বলেন, হাসিনার শাসনামলে কোনো
সরকার ছিল না, ছিল একটি দস্যু পরিবারের শাসন। সরকারপ্রধানের যেকোনো আদেশই তখন পালিত
হতো। কেউ সমস্যা তৈরি করছে? আমরা তাদের উধাও করে দেব। নির্বাচন করতে চান? আমরা নিশ্চিত
করব যে আপনি যেন সব আসনে জয়ী হন। আপনি টাকা চান? এই যে ব্যাংক থেকে এক মিলিয়ন ডলার
ঋণ, যা আপনাকে কখনোই ফেরত দিতে হবে না।
ড. মুহাম্মদ ইউনূস দ্য গার্ডিয়ানকে বলেছেন, শেখ হাসিনা বাংলাদেশের অপূরণীয়
ক্ষতি করেছেন। এটি ছিল সম্পূর্ণরূপে বিধ্বস্ত একটি দেশ, আরেকটি গাজার মতো। তবে এতে
কোনও ভবন ধ্বংস হয়নি, ধ্বংস হয়েছে প্রতিষ্ঠান, নীতি-নৈতিকতা, মানুষ, আন্তর্জাতিক সম্পর্ক।
সাক্ষাৎকারে গার্ডিয়ানকে প্রধান উপদেষ্টা জানান, শিক্ষার্থীদের অনুরোধেই
তিনি অন্তর্বর্তী সরকারের নেতৃত্ব দিতে রাজি হয়েছেন।
ভারতে হাসিনার আশ্রয় নিয়ে ড. মুহাম্মদ ইউনূস বলেন, ভারত হাসিনাকে আতিথ্য
দিলে তা সহ্য করা হবে। কিন্তু দেশকে আগের অবস্থায় নেওয়ার জন্য প্রচার চালাতে ভারতকে
একটি প্ল্যাটফর্ম হিসেবে ব্যবহার করার অনুমতি দেওয়া বিপজ্জনক। এটি দেশকে অস্থিতিশীল
করে তোলে।
গার্ডিয়ান বলছে, বাংলাদেশে হাসিনার শাসনামল ছিল স্বৈরাচার, সহিংসতা এবং
দুর্নীতির অভিযোগে ভরপুর। জুলাই ও আগস্ট মাসে রক্তক্ষয়ী আন্দোলনে কয়েক সপ্তাহের মধ্যে
এর সমাপ্তি ঘটে। জাতিসংঘের মতে, ওই সময় বাংলাদেশে সরকারবিরোধী আন্দোলনে এক হাজার ৪০০
জনের বেশি মানুষ নিহত হয়। ওই আন্দোলনে পুলিশের সহিংস দমনপীড়ন মানবতার বিরুদ্ধে অপরাধ
হিসেবে গণ্য হতে পারে। তবে এসব অভিযোগ অস্বীকার করেছেন শেখ হাসিনা।