জ্বালানি খাতে রাষ্ট্রীয় মদদে ডাকাতি হয়েছে: প্রেস সচিব

যুগান্তর প্রতিবেদন
প্রকাশ: ২৬ ফেব্রুয়ারি ২০২৫, ০৯:৫৮ পিএম

প্রধান উপদেষ্টার প্রেস সচিব শফিকুল আলম বলেছেন, বিগত সরকার জ্বালানি খাতকে চুরির কারখানা বানিয়েছে। ক্যাপাসিটি চার্জের মাধ্যমে ডাকাতির বন্দোবস্ত করেছে। রাষ্ট্রীয় সহযোগিতায় এই ডাকাতি হয়েছে বলে তিনি উল্লেখ করেন।
বুধবার রাজধানীর
আগারগাঁও পরিকল্পনা মন্ত্রণালয়ের এনইসি সম্মেলন কক্ষে ডেভেলপমেন্ট জার্নালিস্ট ফোরাম
অব বাংলাদেশ (ডিজেএফবি) আয়োজিত ডিজেএফবি টক-এ তিনি এ কথা বলেন।
এতে সভাপতিত্ব
করেন সংগঠনের সভাপতি হামিদ-উজ-জামান। সংগঠনের সাধারণ সম্পাদক আবু হেনা মুহিবের সঞ্চালনায়
বক্তব্য রাখেন সহসভাপতি সাহানোয়ার সাইদ শাহীন।
সাবেক ভূমিমন্ত্রী
সাইফুজ্জামান চৌধুরী জাবেদের নিজের বাড়িতে যাওয়ার জন্য কর্ণফুলী টানেল নির্মাণ করা
হয়েছে উল্লেখ করে প্রেস সচিব বলেন,‘সাইফুজ্জামান চৌধুরী জাবেদের বাড়ি চট্টগ্রামের আনোয়ারায়।
সেখানে তেমন কিছু নেই। নিজের এলাকায় যাওয়ার জন্য উনি কর্ণফুলী টানেল প্রকল্প নিয়েছেন।
আপনারা (সাংবাদিকরা) খোঁজ নিয়ে দেখেন। ৪৫০ কোটি টাকার হোটেল করেছেন মন্ত্রী। তিনি
২০৪১ সাল পর্যন্ত ক্ষমতায় থাকবেন ধরে নিয়ে এই আয়োজন করেছেন। তার বাড়ি আনোয়ারায়, এই
জন্য টানেল নির্মাণ করেছেন’।
শফিকুল আলম
মনে করেন, আরও দশ বছর পরে এই টানেল হলে ভালো হতো। তখন হয়তো কর্ণফুলীর ওই পাড়ে অনেক
কিছু হবে।
তিনি বলেন,
টানেল এলাকায় সাড়ে চার’শ কোটি টাকায় সাত তারকা মানের হোটেল করা হয়েছে, যা অপচয়।
সামষ্টিক অর্থনীতি
নিয়ে শফিকুল আলম বলেন, বর্তমান সরকার ধসে পড়ার (কলাপসড) সম্মুখীন এমন একটি অর্থনীতি
পেয়েছে। যে কোনো সময় ধসে পড়ার ঝুঁকি ছিল। গত ছয় মাসে অর্থনীতির অনেক উন্নতি হয়েছে,
যা অকল্পনীয়।
প্রেস সচিব
বলেন, আওয়ামী লীগ সরকার অপ্রয়োজনীয় অনেক প্রকল্প করেছে। অনেক রেলপথ বানিয়েছে, যেখানে
দিনে একটি ট্রেন চলে। প্রকল্প খরচ ৭০ শতাংশ বাড়ানো হয়েছে। পছন্দের লোককে সুবিধা দেওয়ার
জন্য এমন করা হয়েছে। বাংলাদেশের টাকা চুরি করে বিদেশে পাচার হয়েছে। কানাডায় বেগম পাড়া
হয়েছে। লন্ডনে ব্লকের পর ব্লক কেনা হয়েছে।
অন্তর্বর্তী
সরকার এখন অর্থনীতির ‘যক্ষ্মা’ ঠিক করছে, পরে স্বাস্থ্য ঠিক করবে বলে মন্তব্য করেন
তিনি।
তার মতে, গত
দুই মাস ধরে মূল্যস্ফীতি কমেছে। জুন মাসের মধ্যে সাত শতাংশে নেমে আসবে। এখন প্রয়োজন
জনগণের মাঝে স্বস্তি ফিরিয়ে আনা।
ব্যাংক খাত
নিয়ে শফিকুল আলম বলেন, আমানতকারীরা কেউ ক্ষতিগ্রস্ত হবেন না, এই বার্তা বাংলাদেশ ব্যাংক
গভর্নর বার বার দিচ্ছেন। আগের সরকার এখন পর্যন্ত ক্ষমতায় থাকলে এখন কেউ এক টাকাও ব্যাংকে
রাখত না।
তিনি আরও বলেন,
পতিত সরকারের দুর্নীতির কারণে ট্যাক্স বাড়াতে হচ্ছে। তিনি জানান, গ্যাস সঙ্কট মেটাতে
কূপ খননে জোর দিচ্ছে সরকার।
প্রেস সচিব
আরও জানান, আগের সরকার নাম সর্বস্ব ডিজিটাল বাংলাদেশ করেছিল। এখন সত্যিকার অর্থে ডিজিটাল
বাংলাদেশ করা হচ্ছে এবং এর ধারাবাহিকতায় বিদেশে বসে জমির মিউটেশনসহ অন্যান্য কাজ করতে
পারবেন প্রবাসীরা।
তিনি বাংলাদেশ, ভূটান, নেপাল, ভারত যৌথ বিদ্যুৎ গ্রিড লাইন পরিকল্পনার কথা জানান।
প্রেস সচিব
বলেন, সরকার যেসব উদ্যোগ নিচ্ছে তাতে আমাদের আত্মবিশ্বাস বিদেশি বিনিয়োগ বাড়বে। বাণিজ্য
যুদ্ধে বাংলাদেশ বড় সুবিধাভোগী হবে বলে তিনি উল্লেখ করেন।