হাতকড়া পরিয়ে আদালতে আনা হলো আনিসুল-সালমান-নুরুজ্জামানকে

যুগান্তর প্রতিবেদন
প্রকাশ: ২৬ ফেব্রুয়ারি ২০২৫, ০৫:২৭ পিএম

বুধবার সকাল ১০টায় ঢাকা মহানগর হাকিম সেফাতুল্লাহর আদালতে তোলা হয় হত্যা মামলার আসামি সালমান এফ রহমান, আনিসুল হক, দীপু মনি, হাজি সেলিমসহ অন্য আসামিদের।
এ সময় হেলমেট, বুলেটপ্রুফ জ্যাকেট ও হ্যান্ডকাফ পরিয়ে হাজতখানা থেকে তাদের বের করা হয়। এ সময় সাবেক প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনার উপদেষ্টা সালমান এফ রহমান সাদা পায়জামা-পাঞ্জাবি পরা ছিলেন। মাথায় ছিল পুলিশের হেলমেট। আর বুকে বুলেটপ্রুফ জ্যাকেট। হাত দুখানা পেছনে মোড়ানো। দুই হাতেই হ্যান্ডকাফ।
সালমানের পেছনে দাঁড়িয়ে ছিলেন পুলিশের সাবেক মহাপরিদর্শক (আইজি) চৌধুরী আবদুল্লাহ আল মামুন। তার মাথায় হেলমেট, বুকে বুলেটপ্রুফ জ্যাকেট ছিল। তার দুই হাতও পেছনে ছিল। তবে তার দুই হাতে হাতকড়া পরানো ছিল না। শুধু বাঁ হাতে ছিল হাতকড়া। আর ডান হাত তিনি বা হাতের ওপরে রাখা ছিল।
মামুনের পেছনে ছিলেন সাবেক আইনমন্ত্রী আনিসুল হক। তার পরনে ছিল আকাশি রঙের পাঞ্জাবি। তার দুই হাত পেছনে ছিল। দুই হাতেই পরানো ছিল হাতকড়া। আনিসুলের পেছনে ছিলেন সাবেক সমাজকল্যাণ মন্ত্রী নুরুজ্জামান আহমেদ। তার মাথায় হেলমেট, বুকে বুলেটপ্রুফ জ্যাকেট। তার দুই হাতও পেছনে ছিল। পরানো ছিল হাতকড়া।
নুরুজ্জামানের পেছনে দাঁড়িয়ে ছিলেন সাবেক বন ও পরিবেশ উপমন্ত্রী আব্দুল্লাহ আল ইসলাম জ্যাকব। তার দুই হাতও পেছনে ছিল। তবে তার এক হাতে পড়ানো ছিল হাতকড়া।
জাকবের পেছনে দাঁড়িয়ে থাকা সাবেক সংসদ সদস্য হাজী সেলিমের মাথায় ছিল হেলমেট। বুকে বুলেট প্রুফ জ্যাকেট। তার এক হাতে হাতকড়া পড়ানো ছিল। দুজন পুলিশ সদস্য তার দুই হাত ধরে সামনের দিকে হাঁটছিলেন।
এদিন একই সময়ে সাবেক শিক্ষামন্ত্রী দীপু মনিকে দুজন নারী পুলিশ সদস্য তাকে হাত ধরে হাজতখানার বাইরে নিয়ে আসেন। এরপর সালমান, আনিসুল, নুরুজ্জামানদের আদালত ভবনের নিচতলা থেকে সিঁড়ি দিয়ে হাঁটিয়ে দুই তলায় ওঠানো হয়। তারপর তাদের একে একে আসামির কাঠগড়ায় তোলা হয়।
কাঠগড়ায় তোলার পর আনিসুল, সালমান ও নুরুজ্জামানের হাতকড়া খোলা হয়। যখন পুলিশ তাদের হাতকড়া খুলছিল, তখন তিনজনেরই মুখ ছিল নিচের দিকে। হাতকড়া খোলার পর বিমর্ষ মুখে সালমান তার আইনজীবীর সঙ্গে কথা বলতে শুরু করেন।
আদালতে তোলার পর হাজি সেলিমের হেলমেট খুলে দেয় পুলিশ। এরপর তাদের বিভিন্ন মামলায় গ্রেফতার দেখানোর শুনানি শুরু হয়। এসময় শুনানির পুরোটা সময় ধরে সালমান এফ রহমান নিজের দাড়ি ডান হাত দিয়ে ধরে মুখে নিয়ে কামড়াতে থাকেন। শুনানির শেষ পর্যন্ত তিনি নিজের দাড়ি হাত দিয়ে ধরে কামড়াতে থাকেন।
শুনানিতে যাত্রাবাড়ী থানার হত্যা মামলায় তদন্ত কর্মকর্তা তাকে গ্রেফতার দেখানোর আবেদন করলে আদালত আবেদন মঞ্জুর করেন।
এছাড়া যাত্রাবাড়ী থানার পৃথক কয়েকটি মামলায় সালমান এফ রহমানসহ ৯ জনকে গ্রেফতার দেখানো হয়েছে। অন্যদিকে যাত্রাবাড়ী থানার পৃথক দুই হত্যা মামলায় সাবেক আইনমন্ত্রী আনিসুল হককে ৬ দিন, সাবেক আইজিপি আব্দুল্লাহ আল মামুনকে এক হত্যা মামলায় ৩ দিন রিমান্ড নিয়ে জিজ্ঞাসাবাদের অনুমতি দেন আদালত।
গ্রেফতার দেখানো অন্যরা হলেন- সাবেক শিক্ষামন্ত্রী ডা. দীপু মনি, সমাজকল্যাণ মন্ত্রী নুরুজ্জামান আহম্মেদ, পুলিশের সাবেক আইজিপি চৌধুরী আব্দুল্লাহ আল মামুন, সাবেক আইনমন্ত্রী আনিসুল হক, গুলশান থানার সাবেক ওসি মাজহারুল ইসলাম, ভোলা- ২ আসনের সাবেক সংসদ সদস্য আলী আজম মুকুল, ভোলা- ৪ আসনের সাবেক এমপি আব্দুল্লাহ আল ইসলাম জ্যাকব, ঢাকা- ৭ আসনের সাবেক এমপি হাজী মোহাম্মদ সেলিম।