Logo
Logo
×

জাতীয়

চলন্ত বাসে ডাকাতি-ধর্ষণ: ভুক্তভোগী নারীর লোমহর্ষক বর্ণনা

Icon

যুগান্তর প্রতিবেদন, টাঙ্গাইল

প্রকাশ: ২৪ ফেব্রুয়ারি ২০২৫, ০৬:৪৭ পিএম

চলন্ত বাসে ডাকাতি-ধর্ষণ: ভুক্তভোগী নারীর লোমহর্ষক বর্ণনা

ঢাকা-টাঙ্গাইল মহাসড়কে চলন্ত বাসে ডাকাতির পর ভুক্তভোগী এক নারী ডাকাতি ও ধর্ষণের লোমহর্ষক বর্ণনা দিয়েছেন। এরপর থেকে নড়েচড়ে বসেছে টাঙ্গাইল জেলা পুলিশ। বাসে ধর্ষণের ঘটনা ঘটেছে কিনা সে বিষয়ে আরও অনুসন্ধান করতে পুলিশের একাধিক টিম মাঠে কাজ করছে।

এর আগে শনিবার ভোরে সাভার থেকে তিন ডাকাতকে গ্রেফতার করে টাঙ্গাইল জেলা গোয়েন্দা পুলিশ (ডিবি)। তাদের আদালতে পাঠালে সবুজ ও শরীফ স্বীকারোক্তিমূলক জবানবন্দি দিয়েছে। এছাড়াও মুহিদের পাঁচ দিনের রিমান্ড মঞ্জুর করেন আদালত।

ওই নারী জানান, সোমবার রাতে মেয়ের বাসা থেকে বাড়ি ফেরার জন্য সাভারের হেমায়েতপুর থেকে রাত ১২টার গাড়িতে উঠেন তিনি। হেমায়েতপুর থেকে আরও দুজন উঠেছেন। গাবতলী থেকে ডাকাত দল উঠেছে। নন্দন পার্কের সামনে থেকে আরও কয়েক ডাকাত বাসে উঠে। ওদের গেটআপ সেটআপ খুব ভালো। ওদের দেখে কেউ বলতে পারবে না যে ওরা ডাকাত। ডাকাতরা স্যুট, কোর্ট, সানগ্লাস পরা ছিল। ডাকাতদের একজন চালককে সরিয়ে দিয়ে বাস নিয়ন্ত্রণে নেয়।

তিনি আরও জানান, বাসটি নন্দন পার্কের সড়ক থেকে গাজীপুর, কোনাবাড়ী ও সাফারি পার্কের দিকে নিয়ে যায়। তিনি চালকের পেছনের এক সিট পরে বসায়, প্রথম একজন মাথায় ছোট পিস্তল ধরেছে। আরেকজন গলায় ছুরি ধরেছে। এরপর তার কাছ থেকে মোবাইল ফোন, হাতের চুড়ি ও গলার চেইন নিয়ে নেয়। একপর্যায়ে মারধর করে ১০ হাজার টাকাও নিয়ে নেয়। এভাবে সবার টাকাপয়সা লুট করে। ছয় নম্বর সিটে বসা স্বামী ও ভাইয়ের সামনে এক হিন্দু নারী ধর্ষণের শিকার হন। অনেক নারীর স্পর্শকাতর স্থানে কামড়ের দাগ রয়েছে।

তিনি জানান, তারা গুড় বিক্রেতা ও মাছ বিক্রেতার কাছ থেকে প্রায় তিন লাখ টাকা নিয়ে যায়। তিনজনের কাছে পিস্তল ও চারজনের কাছে ছুরি ছিল। বাসে প্রায় সাড়ে তিন ঘণ্টার মতো ডাকাতি করে নন্দন পার্কের পাশের পাম্পের সামনে নেমে ডাকাতরা দৌড়ে পালিয়ে যায়।

মামলার তদন্তকারী কর্মকর্তা মো. আহসানুজ্জামান বলেন, মামলাটি এখনো তদন্ত চলমান রয়েছে। পাশাপাশি ডাকাতির সঙ্গে জড়িত অন্যদের গ্রেফতারেও অভিযান চলমান রয়েছে।

টাঙ্গাইলের পুলিশ সুপার মো. মিজানুর রহমান বলেন, যমুনা টেলিভিশনের মাধ্যমে ভুক্তভোগী নারীর বর্ণনা অনুযায়ী ধর্ষণের বিষয়ে আরও একটি টিম অনুসন্ধান করছে। দ্রুত সময়ে বাকিদের গ্রেফতার করা সম্ভব হবে।

প্রসঙ্গত, গত সোমবার রাতে ঢাকা থেকে রাজশাহীর উদ্দেশে ছেড়ে আসা ইউনিক রোড রয়েলসের ‘আমরি ট্রাভেলসের’ একটি বাসে এ ডাকাতির ঘটনা ঘটে।

যাত্রীদের ভাষ্যমতে, সোমবার রাত ১১টায় ঢাকার গাবতলী থেকে বাস ছাড়ে। রাত ১২টা ৩৫ মিনিটে বাসে ডাকাতি শুরু হয়। তিন ঘণ্টা ধরে ডাকাতি শেষে ঘুরিয়ে একই জায়গায় বাসটি নিয়ে গিয়ে রাত ৩টা ৫২ মিনিটে ডাকাতেরা নেমে যায়। এরপর বাসের চালক, তার সহকারী ও সুপারভাইজার নানান টালবাহানা করতে থাকেন। তারা বলেন, তাদের গাড়িতে তেল নেই। অবশেষে যাত্রীদের চাপের মুখে পড়ে তারা রাজশাহীর উদ্দেশে বাস ছাড়েন। যাত্রীরা প্রথমে বাসটি নিয়ে মামলা করার জন্য টাঙ্গাইলের মির্জাপুর থানায় যান। সেখানে তখন ওসি ছিলেন না বলে তাদের ফিরিয়ে দেওয়া হয়।

এতে দায়িত্ব অবহেলার অভিযোগে মির্জাপুর থানার ডিউটি অফিসার আতিকুজ্জামানকে সাময়িক বরখাস্ত করা হয়।

Jamuna Electronics

Logo

সম্পাদক : আবদুল হাই শিকদার

প্রকাশক : সালমা ইসলাম