প্রাক-বাজেট আলোচনায় নোয়াব
সংবাদপত্রে করপোরেট কর অযৌক্তিক

যুগান্তর প্রতিবেদন
প্রকাশ: ২৩ ফেব্রুয়ারি ২০২৫, ১০:৩৩ পিএম

সেবামূলক শিল্প হওয়ায় সংবাদপত্র শিল্পে করপোরেট করকে অযৌক্তিক ও জুলুম হিসাবে আখ্যায়িত করেছে নিউজ পেপার ওনার্স অ্যাসোসিয়েশন অব বাংলাদেশ (নোয়াব)। একই সঙ্গে সংবাদপত্রকে শিল্প হিসাবে ঘোষণা করলেও এ শিল্পের প্রধান কাঁচামাল নিউজপ্রিন্টের ওপর উচ্চ শুল্ক আরোপিত আছে। যা এই শিল্পের জন্য প্রতিবন্ধকতা বলে মনে করছে সংগঠনটি।
রোববার প্রাক-বাজেট আলোচনায়
অংশ নিয়ে নোয়াব নেতারা এসব কথা বলেন।
জাতীয় রাজস্ব বোর্ডের (এনবিআর)
চেয়ারম্যান আব্দুর রহমান খানের সভাপতিত্বে আলোচনা সভায় নোয়াব সভাপতি একে আজাদের নেতৃত্বে
দেশের প্রধান সারির সংবাদপত্র মালিকরা অংশ নেন।
লিখিত বক্তব্যে একে আজাদ বলেন,
সংবাদপত্র শিল্প সাম্প্রতিককালে একটা কঠিন সময়ের মধ্য দিয়ে যাচ্ছে। একদিকে বিভিন্ন
ধরনের ডিজিটাল মাধ্যমের বহিঃপ্রকাশ, অন্য মাধ্যমের অপ্রতিরোধ্য অগ্রগতি যেমনভাবে সংবাদপত্র
শিল্পকে বিরূপ পরিস্থিতির মুখোমুখি করছে, অন্যদিকে বিভিন্ন শুল্ক, ভ্যাট, করপোরেট
ট্যাক্স এই শিল্পের বিকাশে বাধা হয়ে দাঁড়িয়েছে। তার ওপর ডলারের ক্রমবর্ধমান বিনিময়
হার এই শিল্পকে নতজানু করে ফেলেছে। কয়েক বছর আগে এক টন নিউজপ্রিন্টের মূল্য ছিল ৬শ
ডলারের নিচে, এখন তা ৭শ ডলারের উপরে। নিউজপ্রিন্টের আমদানি শুল্ক ৫ শতাংশ হলেও এর সঙ্গে
১৫ শতাংশ ভ্যাট, অগ্রিম আয়কর, পরিবহণ বিমাসহ ব্যয় প্রায় ৩০ শতাংশে গিয়ে দাঁড়ায়।
তিনি আক্ষেপ করে বলেন, বিগত বেশ
কয়েক বছর সরকার সংবাদপত্র শিল্প বিকাশে নোয়াবের কোনো প্রস্তাব বা প্রয়োজনীয়তার
কথা বিবেচনায় নেয়নি। এ বছর বিবেচনা করা হবে বলে আশা করছি। এ সময় নোয়াবের পক্ষ থেকে
৩টি প্রস্তাব তুলে ধরেন তিনি। এগুলো হচ্ছে নিউজপ্রিন্টের আমদানি শুল্ক ২ শতাংশ করা, ভ্যাট হার
১৫ শতাংশের পরিবর্তে ৫ শতাংশ করা এবং করপোরেট কর সর্বনম্নি নির্ধারণ বা অবলোপন করা।
নোয়াবের সদস্য প্রথম আলো সম্পাদক
মতিউর রহমান বলেন, সংবাদপত্র সেবা শিল্প হিসাবে বিবেচিত। কিন্তু গত ১৬ বছরে সংবাদপত্র
শিল্প কোনোরকম সহযোগিতা-সাহায্য পায়নি। সরকার একপেশে সদ্ধিান্ত দিত। বাজেট আলোচনাতে
আমরা আসতাম, কিন্তু জেনে আসতাম যে কিছু হবে না। সংবাদপত্র শিল্প ‘দুর্বিষহ সময়’ পার করছে দাবি করে তিনি বলেন, এখন
বাংলাদেশের সংবাদপত্র শিল্প সবচেয়ে দুর্বিষহ সময় পার করছে। এর প্রধান কারণ সংবাদপত্রের
পাঠক কমছে। অনলাইন, ডিজিটাল, সামাজিক মাধ্যম, ফেসবুক, ভিডিও-অডিও সব মিলিয়ে টিকে থাকা
কঠিন। ব্যক্তি খাতের বিজ্ঞাপন কিছুটা হলেও এখন তা আটকে আছে। সরকারি বিজ্ঞাপন কিছু পাই,
সে সবের বিল পাওয়া যায় না। বছরের পর বছর চলে যায়।
সংবাদপত্র শিল্পের করপোরেট করকে
‘জুলুম’ হিসাবে মন্তব্য
করে মতিউর রহমান বলেন, গার্মেন্টসে করপোরেট কর ১২ শতাংশ। সংবাদপত্রে সাড়ে ২৭ শতাংশ।
এটা কোন যুক্তিতে? আর কটা সংবাদপত্র লাভ করে? আমি মনে করি এ শিল্পে করপোরেট ট্যাক্সটা
বড় অন্যায়। এটা একটা জুলুম। যারা সত্ভাবে ট্যাক্স দিতে চাইবে তাদের জন্য এটা একটা জুলুম।
নোয়াবের প্রস্তাবের প্রেক্ষিতে
এনবিআর চেয়ারম্যান সংবাদপত্রের মুনাফা কম বিবেচনায় আমদানির ক্ষেত্রে অগ্রিম আয়কর (এআইটি)
ও অগ্রিম কর (এটি) কমানোর আশ্বাস দেন।