ফেসবুক পোস্টে মির্জা গালিব
আওয়াজ কম বলে ‘গুপ্ত’ রাজনীতি বলে মনে হতে পারে

যুগান্তর ডেস্ক
প্রকাশ: ২৩ ফেব্রুয়ারি ২০২৫, ০১:৪৩ পিএম
-67bad1b9d55d9.jpg)
যুক্তরাষ্ট্রের হাওয়ার্ড বিশ্ববিদ্যালয়ের সহকারী অধ্যাপক ড. মির্জা গালিব তরুণ প্রজন্মের কাছে জনপ্রিয় ব্যক্তিত্ব। তিনি ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের (ঢাবি) ইসলামী ছাত্রশিবিরের সভাপতিও ছিলেন।
রোববার সকালে তার ভেরিফায়েড ফেসবুক পোস্টে ‘ট্র্যাডিশনাল প্রকাশ্য রাজনীতি’ নিয়ে সমালোচনা করেছেন। এ রাজনীতি দিয়ে আগানো সম্ভব না। তিনি ছাত্রনেতাকর্মীদের পড়াশোনার প্রতি গুরুত্ব দিয়েছেন। এতে জ্ঞান, যোগ্যতা আর দক্ষতার উন্নতি হবে। তিনি বলেছেন, ‘এটাকে অনেকের কাছে ‘গুপ্ত’ রাজনীতি বলে মনে হতে পারে।’
তার পোস্টটি যুগান্তরের পাঠকদের জন্য তুলে ধরা হলো-
মির্জা গালিব লিখেন, ধরেন, আপনি কোনো একটা ছাত্র সংগঠনের একটা বিশ্ববিদ্যালয় শাখার সভাপতি। আপনার ক্যাম্পাসে আপনার দলের হাজার খানেক নেতাকর্মী আছে। এখন প্রশ্ন হচ্ছে, এই এক হাজার ছাত্র-ছাত্রীদের নিয়ে আপনি কি করবেন?
তিনি লিখেন, ‘মডেল-১: আপনি সপ্তাহে দুই/তিন দিন এদেরকে সঙ্গে নিয়ে একটা করে মিছিল করবেন। ঝাঁঝালো কণ্ঠে স্লোগান দিয়ে ক্যাম্পাস প্রকম্পিত করবেন। আর প্রতিদিন এদের অনেককে আশপাশে নিয়ে ক্যাম্পাসে হাঁটবেন যাতে দেখলেই বোঝা যায়- আপনি অনেক বড় নেতা। এ মিছিল আর শোডাউনের পেছনে যে সময়গুলো যাবে এইটার আসলে কোনো ইউটিলিটি নাই। বরং স্লোগানের শব্দে কিছুটা সাউন্ড পল্যুশান হবে। আর লাইব্রেরিতে ছাত্র-ছাত্রীদের পড়াশোনায় ব্যাঘাত ঘটবে।
এই সহকারী অধ্যাপক লিখেন, ‘মডেল-২: আপনি ১২টা বই বাছাই করবেন। ভালো ভালো বই। সাহিত্য, দর্শন, ধর্ম, বা ইতিহাসের ওপর। তারপর এক হাজার ছাত্র-ছাত্রীকে দশজন দশজন করে একশ গ্রুপে ভাগ করে দেবেন। প্রত্যেক গ্রুপ প্রতি মাসে একটা করে বইয়ের ওপর পাঠচক্র করবে। তারপর নিয়মিত কিছু ওয়ার্কশপ আয়োজন করবেন, যেইখানে ক্রিয়েটিভ রাইটিং, ইংলিশ স্পোকেন, প্রোগ্রামিং ল্যাঙ্গুয়েজ, রোবটিক্স এই সব শিখাবে। পাশাপাশি বিতর্ক, গান, আবৃত্তি, তেলাওয়াত এই সব শিখার জন্য ক্লাব বা ওয়ার্কশপ চালাবেন। প্রতি মাসে একবার করে ক্যাম্পাসে পরিষ্কার পরিচ্ছন্নতা অভিযান চালাবেন। এ মডেলে মিছিল মিটিং স্লোগান থাকবে না বা কম থাকবে কিন্তু সময়গুলো কাজে লাগবে। দলের প্রত্যেক কর্মীর জ্ঞান, যোগ্যতা আর দক্ষতার উন্নতি হবে।
মির্জা গালিব লিখেন, প্রথম মডেলটা হলো ট্র্যাডিশনাল প্রকাশ্য রাজনীতি। কিন্তু এ রাজনীতির মধ্য দিয়ে আধুনিক প্রতিযোগিতামূলক দুনিয়ায় সামনে আগানো সম্ভব না। আর দ্বিতীয় মডেলটা হল একটা ক্রিয়াশীল গঠনমূলক ছাত্র রাজনীতির মডেল। এটাতে আওয়াজ কম বলে অনেকের কাছে ‘গুপ্ত’ রাজনীতি বলে মনে হতে পারে। কিন্তু ছাত্র রাজনীতির এই মডেলটাই কি আমাদের অধিক প্রয়োজন না?