
ছবি: যুগান্তর
ঢাকা মহানগরীর পরিবহণব্যবস্থা উন্নয়ন ও বায়ুদূষণ হ্রাসে নতুন উদ্যোগ হিসাবে বৈদ্যুতিক বাস চালুর পরিকল্পনা নিয়েছে সরকার। ‘বাংলাদেশ ক্লিন এয়ার প্রজেক্ট’র আওতায় ২০২৬ সালের মধ্যে প্রথম পর্যায়ে তিনটি রুটে এ বাস চালু করা হবে। প্রকল্পটির জন্য ৩০০ মিলিয়ন ডলার সহায়তা দেবে বিশ্বব্যাংক। ঢাকা পরিবহণ সমন্বয় কর্তৃপক্ষ (ডিটিসিএ) জানিয়েছে, চলতি বছরের জুলাই থেকে শুরু হয়ে প্রকল্পটি ২০৩০ সালের জুনে শেষ হবে।
বিশ্বব্যাংকের অর্থায়ন ও বরাদ্দ
প্রকল্পের জন্য বিশ্বব্যাংকের ৩০০ মিলিয়ন ডলারের মধ্যে ১০০ মিলিয়ন ডলার পরিবেশ অধিদপ্তর এবং ২০০ মিলিয়ন ডলার সড়ক পরিবহণ ও মহাসড়ক বিভাগ পাবে। এর মধ্যে ডিটিসিএ ১৫০ মিলিয়ন এবং বিআরটিএ ৫০ মিলিয়ন ডলার পাবে।
প্রকল্পের মূল লক্ষ্য ও কার্যক্রম
প্রকল্পের আওতায় ২৫০ থেকে ৫০০টি বৈদ্যুতিক বাস পরিচালনা করা হবে। একইসঙ্গে ৩ থেকে ৪টি নতুন বাস ডিপো স্থাপন, স্টপেজ উন্নয়ন এবং ইন্টেলিজেন্ট ট্রান্সপোর্ট সিস্টেম (ওঞঝ) চালু করা হবে। এছাড়া প্রকল্পটি কারিগরি সহায়তা, সক্ষমতা বৃদ্ধি ও নীতিমালা প্রণয়নের ওপরও গুরুত্ব দেবে।
রুট পরিকল্পনা ও পরিচালনা ব্যবস্থা
ডিটিসিএ পরিচালক (পরিকল্পনা) ধ্রুব আলম জানিয়েছেন, বৈদ্যুতিক বাস পরিচালনার জন্য নতুন একটি কোম্পানি গঠন করা হতে পারে, অথবা বিদ্যমান পরিবহণ কোম্পানিগুলোকে এ পরিষেবা পরিচালনার অনুমতি দেওয়া হতে পারে। বাসগুলো গাজীপুর থেকে উত্তরা হয়ে রাজধানীর বিভিন্ন গুরুত্বপূর্ণ স্থানে চলবে। তবে চূড়ান্ত রুট নির্ধারণের জন্য একটি সমীক্ষা পরিচালনা করা হবে।
বায়ুদূষণ কমাতে পরিবহণ খাতের গুরুত্ব
ঢাকার বায়ুদূষণের অন্যতম কারণ হলো ডিজেলচালিত গণপরিবহণ। নতুন এ প্রকল্পের মাধ্যমে বৈদ্যুতিক বাস চালু হলে, যানবাহন থেকে নির্গত ক্ষতিকর ধোঁয়া কমবে এবং নগরীর পরিবেশ আরও বাসযোগ্য হবে।
পরিবহণব্যবস্থার শৃঙ্খলা আনতে উদ্যোগ
ঢাকা পরিবহণ সমন্বয় কর্তৃপক্ষ (ডিটিসিএ) মনে করছে, এ প্রকল্পটি শুধু পরিবেশগত উন্নতি নয়, বরং পরিবহণব্যবস্থার শৃঙ্খলা আনতেও সহায়ক হবে। ফ্র্যাঞ্চাইজিভিত্তিক পরিবহণব্যবস্থায় শৃঙ্খলা আনতে বৈদ্যুতিক বাস গুরুত্বপূর্ণ ভূমিকা রাখবে।
সম্প্রতি ডিটিসিএ ভবনে নির্বাহী পরিচালক নীলিমা আকতারের সভাপতিত্বে অনুষ্ঠিত এক বৈঠকে পরিবহণ মালিক সমিতির নেতারা, নগর পরিবহণ বিশেষজ্ঞ ও সংশ্লিষ্টরা উপস্থিত ছিলেন। আলোচনায় বক্তারা বলেন, বৈদ্যুতিক বাস চালুর এ উদ্যোগ ঢাকার নাগরিকদের জন্য আরামদায়ক ও পরিবেশবান্ধব যাতায়াত নিশ্চিত করতে বড় ভূমিকা রাখবে। এ প্রকল্প বাস্তবায়নের মাধ্যমে ঢাকার যানজট কমবে, পরিবহণ সেক্টরে আধুনিকায়ন হবে এবং সর্বোপরি পরিবেশ দূষণ হ্রাস করে একটি বাসযোগ্য নগরী গড়ে তোলা সম্ভব হবে।