বিমান ভাড়ায় ‘দুর্বৃত্তপনা’ অনুসন্ধানে কমিটি

যুগান্তর প্রতিবেদন
প্রকাশ: ১৯ ফেব্রুয়ারি ২০২৫, ১১:৫৭ পিএম

স্বরাষ্ট্র মন্ত্রণালয়ের সিনিয়র সচিব নাসিমুল গনি
বিমান ভাড়ায় ‘দুর্বৃত্তপনা’ ঠেকাতে অনুসন্ধানে নামছে স্বরাষ্ট্র মন্ত্রণালয়ের সিনিয়র সচিব নাসিমুল গনির নেতৃত্বে গঠিত সাত সদস্যের কমিটি।
মন্ত্রণালয়ে বুধবার বিকালে প্রায় ২৫টি এয়ারলাইন্স কোম্পানির প্রধান নির্বাহীদের সঙ্গে বৈঠক করেছেন কমিটির সদস্যরা।
বৈঠকের আগে নাসিমুল গনি বলেন, ‘আমাদের (এভিয়েশন সেক্টরে) অনেক রকম সমস্যা রয়েছে। শুধু সমস্যাটা একতরফা যে তাদের (জেনারেল সেলস এজেন্ট) সেটা নয়, বিভিন্ন সমস্যা আছে।’
‘আমরা একটা বিষয় নিয়ে অনুসন্ধান করার চেষ্টা করছি। আমাদের দেশ থেকে যারা মধ্যপ্রাচ্যে যায়, তাদের টিকেটের দাম অনেক বেশি পড়ে যায়৷ এই পুরো প্রক্রিয়ায় আমাদের কিছু নিয়ম আছে, বিধি আছে৷ এর কিছু প্রতিপালন হচ্ছে, আর কিছু হচ্ছে না৷ কিছু ক্ষেত্রে কিছু মানুষের দুর্বৃত্তপনা রয়েছে৷ এই জিনিসটা অনুসন্ধান করতে আমরা বসেছি’-যোগ করেন তিনি।
নাসিমুল গনি বলেন, ‘বাংলাদেশে যেসব এয়ারলাইন্স চলে তাদের যেসব প্রতিনিধি রয়েছে (জেনারেল সেলস এজেন্ট) তাদের নিয়ে বসেছি। তাদের অভিজ্ঞতাগুলো জানতে চাচ্ছি। একইসঙ্গে আমাদের অনুসন্ধানও যাতে মানুষের কাজে লাগে এ কারণেই এই প্রচেষ্টা৷ এটা আমাদের মত করে আমরা তদন্ত করব। তাদের সাথে আলোচনা করে কীভাবে করা যায় সেসব বিষয় সিদ্ধান্ত হবে। আমরা আসলে তাদের সবার কথা শুনতে চাচ্ছি। তাদের কথা শুনে কীভাবে সেটা থেকে উত্তরণ করা যায়, সে বিষয়টি বুঝতে চাচ্ছি, যাতে অন্যান্য দেশের মত টিকিট প্রাইসিং সমপর্যায়ে আনতে পারি।’
এয়ার টিকেটের ‘অস্বাভাবিক মূল্য রোধ করতে’ গত ১২ ফেব্রুয়ারি সরকারের পক্ষ থেকে ১০টি নির্দেশনা দেওয়া হয়। সামাজিক মাধ্যমে প্রবাসীদের টিকেটের দাম নিয়ে সমালোচনার পর এসব নির্দেশনা আসে সরকারের তরফ থেকে।
বাংলাদেশের ট্র্যাভেল এজেন্টদের সংগঠন আটাব গত ২৬ জানুয়ারি সংবাদ সম্মেলন করে অভিযোগ তোলে, এয়ার লাইন্সগুলোর সঙ্গে সিন্ডিকেট করে এয়ার টিকেটে দাম চড়িয়ে দেওয়া হচ্ছে, তাতে ভুগতে হচ্ছে প্রবাসীদের।
তাদের অভিযোগ, এয়ারলাইন্সগুলো কিছু ট্র্যাভেল এজেন্টকে একসঙ্গে অনেকগুলো টিকেট বুকিং বা ব্লক করে রাখার সুযোগ দিচ্ছে। ফলে সাধারণ ট্রাভেল এজেন্টরা আর ওইসব টিকেট বেচতে পারছে না, আর সিন্ডিকেটের সদস্য এজেন্টরা পরবর্তীতে দেশের বাজারে ব্লক করে রাখা ওইসব টিকেট কয়েকগুণ বেশি দামে বিক্রি করছে।
এয়ার টিকেটের দাম কমানোর পাশাপাশি যাত্রীর নাম, পাসপোর্ট, ভিসা ছাড়া বাল্ক টিকেট বিক্রি ও মজুতদারি বন্ধের দাবি জানায় আটাব।
এরপর টিকেটের দাম কমানো নিয়ে সরকারের তরফ থেকে ১০ নির্দেশনা দেওয়া হয়। এর মধ্যে টিকেট বুকিংয়ের পর ৭২ ঘণ্টার মধ্যে তা ইস্যু নিশ্চিত না হলে স্বয়ংক্রিয়ভাবে বাতিল করতে বলেছে সরকার।
পাশাপাশি গ্রুপ বুকিংয়ের নামে কোনো এয়ারলাইন্সের অনেকগুলো টিকেট একসঙ্গে ব্লক করা হলে পরবর্তী সাত দিনের মধ্যে যাত্রীর নাম, পাসপোর্ট নম্বরসহ তা বিক্রি নিশ্চিত করতে হবে। তা না হলে পরের ৭২ ঘণ্টার মধ্যে সেসব টিকেট স্বয়ংক্রিয়ভাবে বাতিল করতে হবে এয়ারলাইন্সকে।
বিষয়টি নিয়ে সরকারের উচ্চ পর্যায়ের কমিটি করা হয়। স্বরাষ্ট্র মন্ত্রণালয়ের সিনিয়র সচিব নাসিমুল গনির নেতৃত্বে এই কমিটি বুধবার এয়ারলাইন্স প্রতিনিধিদের আলোচনায় বসে। এই কমিটিকে আগামী ১৫ কার্যদিবসের মধ্যে প্রতিবেদন দিতে বলা হয়েছে।