মারপিট করে হেডাম দেখানো অসভ্য মানুষের কাজ: ফাহাম

অনলাইন ডেস্ক
প্রকাশ: ১৯ ফেব্রুয়ারি ২০২৫, ১২:৩০ পিএম

মারপিট করে হেডাম দেখানো অসভ্য মানুষের কাজ। কথা বলে, কনফ্লিক্টের মধ্যে সভ্যভাবে বসবাস করার হেডাম আমরা দেখতে চাই বলে মন্তব্য করেছেন লেখক ও রাজনৈতিক বিশ্লেষক ফাহাম আবদুস সালাম।
বুধবার সামাজিক যোগাযোগমাধ্যম ফেসবুকে দেওয়া পোস্টে তিনি এ মন্তব্য করেন।
তিনি বলেন, ভায়োলেন্স কোনো সমস্যার সমাধান না। সিভিলাইজড মানুষ কথা বলে, গুডউইল দিয়ে নিজেদের সমস্যা সমাধান করে। আপনারাও সেটা শিখুন। এটা পড়াশোনার চাইতে অনেক গুরুত্বপূর্ণ, রাজনীতির চাইতেও গুরুত্বপূর্ণ। কেন আপনাদের এতো রাগ যে মারপিট করে নিবৃত্ত হতে হয়- কখনো ভেবেছেন? এই মানসিক বিকার আপনাদের জীবনের প্রতিটা পর্বকে ধ্বংস করবে। মারপিট করে হেডাম দেখানো অসভ্য মানুষের কাজ। কথা বলে, কনফ্লিক্টের মধ্যে সভ্যভাবে বসবাস করার হেডাম আমরা দেখতে চাই।
শিবির কোপানো জায়েজ বলে ছাত্রদল নেতার দেওয়া পোস্ট নিয়ে তিনি ওই পোস্টে বলেন, ‘ছাত্রদলের একটি ছেলের স্ট্যাটাস দেখলাম ‘শিবির কোবানো জায়েজ ছিল, আছে, থাকবে। ইনশাল্লাহ। সে ‘কোপানো’ লিখছে না, কারণ জানে যে ‘কোপানো’ লিখলে ফেইসবুক স্ট্যাটাস খেয়ে ফেলবে। কিন্তু ‘জায়েজ’ লিখতে তার কোনো আপত্তি নাই। নট ওনলি ছেলেটা একটা ভায়োলেন্ট অপরাধ করার আহ্বান জানাচ্ছে। সে এই ঘৃণ্য অপরাধকে ইসলাম দিয়ে জাস্টিফাই করার একটা চেষ্টাও করছে।
তিনি বলেন, সত্য যে ছেলেটা কোনো গুরুত্বপূর্ণ নেতাকর্মী না এবং তার আহ্বানে কেউ সাড়াও দেবে না। কিন্তু এই মানসিকতা আমাকে হতভম্ভ করে। আপনারা কি গত ১৫ বছর দেখেন নাই এই দেশে কী হয়েছিল? আপনাদের মধ্যে কি বিন্দুমাত্র কৃতজ্ঞতাবোধ নাই যে খোদাতায়ালা কোন জাহেলিয়াত থেকে আমাদের মুক্তি দিয়েছেন? সেই জাহেলিয়াতেই আপনারা ফিরে যেতে চান? আপনারা কি উন্মাদ হয়ে গেছেন?
কুয়েটের ঘটনা নিয়ে ফাহাম বলেন, এটা ইমম্যাটেরিয়াল যে খুঁজে বের করা - দোষ কার? এই ধরনের বাংলাদেশি মারপিটে কখনোই একপক্ষ দায়ী হয় না। তর্কের খাতিরে স্বীকার করে নিচ্ছি যে কুয়েটে শিবির/বৈষম্যবিরোধীরা ছাত্রদলকে স্বাভাবিক কর্মকাণ্ড করতে দেয় নাই। শুরুতে নিঃসন্দেহে তাদের দোষ ছিল। তাই বলে কি আপনারা সশস্ত্র হয়ে মারপিট করবেন? এই ভয়ের সংস্কৃতি তৈরি করেছিলো আওয়ামী লীগ। আপনারা কি এই দেশের মানুষকে, আপনার প্রিয় প্রতিষ্ঠানের ছাত্রছাত্রীদের সেই জাহেলিয়াতে ফিরে নিয়ে যেতে চান? আল্লাহ ওয়াস্তে আপনাদের এই মানসিক বিকারের চিকিৎসা করুন।
গত ১৫ বছর ছাত্রদল ও বিএনপির হাজার হাজার কর্মী মানবেতর জীবন যাপন করেছে উল্লেখ করে এই লেখক বলেন, গত ১৫ বছর অকল্পনীয় অত্যাচারের ভেতর দিয়ে গেছে বিএনপি। কবর গিয়েছিল বেড়ে আর ঘর গিয়েছিল কমে। আপনাদের জাহিল আচরণ এই দলের নেতাকর্মীদের সব আত্মত্যাগকে মাটি বানিয়ে ফেলে।
তিনি বলেন, আপনাদের অসংখ্য বড় ভাই, বাপ-চাচা গত ১৫ বছর জীবনের একটা বড় সময় ব্যয় করেছে আওয়ামী জাহেলিয়াতের সঙ্গে ফাইট করতে। কারো গিয়েছে সংসার, কারো ঘর, কারো যৌবন আর কারো জীবন। তাদের মধ্যে শুধু বিএনপি ছিল না। হেফাজত, দেশের সাধারণ মানুষ, বাম, জামায়াত - বহু মানুষ জীবনের একটা লম্বা সময় এই অত্যাচার সহ্য করেছে এবং ফাইট করেছে। বহু মানুষ অসময়ে চলে গেছে- আমাদের ছেড়ে। আপনাদের কি অন্তত কোনো রেস্পেক্টও নাই? সেই মাইরপিট-কোপাকুপিতেই আমরা ফেরত যাব?
ওই পোস্টের শেষ তিনি বলেন, এই দখলদারিত্বের মানসিকতা থেকে আমরা উত্তরণ করতে চাই। কোনো সরকার, কোনো প্রধানমন্ত্রী আপনার এই অসুখ সারাতে পারবে না। আল্লাহর ওয়াস্তে বোঝার চেষ্টা করুন যে কোপাকুপি এবং মারপিট দিয়ে আপনার নিজের এবং আপনাদের দলের বিন্দুমাত্র লাভ হয় না। এইসব weak men দের কাজ থেকে নিজেদের মুক্তি দেন।