যুগান্তরের অনুসন্ধানী সংবাদে অনেক উপকৃত হয়েছি: স্বরাষ্ট্র উপদেষ্টা

যুগান্তর প্রতিবেদন
প্রকাশ: ১৮ ফেব্রুয়ারি ২০২৫, ১০:৩৯ পিএম

স্বরাষ্ট্র উপদেষ্টা লেফটেন্যান্ট জেনারেল (অব.) মো. জাহাঙ্গীর আলম চৌধুরী।
সাহসী অনুসন্ধানী দুটি প্রতিবেদনের জন্য দৈনিক যুগান্তরকে ধন্যবাদ জানালেন স্বরাষ্ট্র উপদেষ্টা লেফটেন্যান্ট জেনারেল (অব.) মো. জাহাঙ্গীর আলম চৌধুরী।
মঙ্গলবার গণমাধ্যমকর্মীদের
সঙ্গে ব্রিফিংকালে তিনি বলেন, দৈনিক যুগান্তর পত্রিকাকে আমি ধন্যবাদ জানাই। যুগান্তর
পত্রিকার দুটি অনুসন্ধানী সংবাদে আমরা অনেক উপকৃত হয়েছি। তাদের অনুসন্ধানী সংবাদের
সত্যতা থাকায় ইতোমধ্যে দুই এসপিকে ক্লোজ করেছি।
গণমাধ্যমের
অবদান উল্লেখ করে জাহাঙ্গীর আলম চৌধুরী বলেন, দেশের আইনশৃঙ্খলা পরিস্থিতি উন্নতির জন্য
অপারেশন ডেভিল হান্ট পরিচালিত হচ্ছে। এ অপারেশনে গণমাধ্যমকর্মীরা যথেষ্ট সহযোগিতা করছেন। ভবিষ্যতেও এ ধরনের সহযোগিতা কামনা করেন তিনি।
এর আগে সোমবার
পুলিশের মহাপরিদর্শক (আইজি) বাহারুল আলম সংশ্লিষ্ট দুই সাংবাদিক যুগান্তরের (অনুসন্ধানী
সেল) সিনিয়র রিপোর্টার নেসারুল হক খোকন এবং কক্সবাজার জেলা প্রতিনিধি জসিম উদ্দিনকে
ফোন করে এ ধরনের সাহসী অনুসন্ধানী প্রতিবেদনের জন্য ধন্যবাদ জানান। একই সঙ্গে তিনি
বলেন, তদন্ত শুরু হয়েছে। জড়িতদের প্রত্যেকের বিরুদ্ধে বিধি মোতাবেক সব ব্যবস্থা নেওয়া
হবে।
এদিকে যুগান্তরের
সংবাদ প্রকাশের পরদিন আলোচিত দুই পুলিশ সুপারকে (এসপি) প্রত্যাহার করা হয়েছে। সুনামগঞ্জ
ও কক্সবাজারের পুলিশ সুপারের বিরুদ্ধে বেশুমার দুর্নীতি ও মাদক কারবারে জড়িত থাকার
বিষয়ে যুগান্তরে অনুসন্ধানী প্রতিবেদন প্রকাশের পর সোমবার তাদের স্ট্যান্ডরিলিজ করা
হয়।
প্রসঙ্গত,
‘আওয়ামী লীগ আমলের অপরাধ সাম্রাজ্য নিয়ন্ত্রণ, সুনামগঞ্জে এসপির ঘুসের হাট’ শিরোনামে
এসপি আফম আনোয়ার হোসেন খানের বিরুদ্ধে ১৬ ফেব্রুয়ারি এবং ‘মিলেমিশে সাড়ে তিন লাখ পিস
বিক্রি, এসপির ইয়াবা কারবার’ শিরোনামে ১৭ ফেব্রুয়ারি কক্সবাজারের এসপি মুহাম্মদ রহমত
উল্লাহকে নিয়ে প্রতিবেদন প্রকাশিত হয়। এরপর নড়েচড়ে বসে সংশ্লিষ্ট ঊর্ধ্বতন কর্তৃপক্ষ।
শুরু হয় ব্যবস্থা নেওয়ার অফিশিয়াল প্রক্রিয়া।
পুলিশ হেডকোয়ার্টার্সের
এ সংক্রান্ত আদেশে দুই পুলিশ সুপারকে ১৮ ফেব্রুয়ারির মধ্যে জেলা পুলিশের পরবর্তী জ্যেষ্ঠ
কর্মকর্তার কাছে দায়িত্বভার অর্পণ করে পুলিশ হেডকোয়ার্টার্সে রিপোর্ট করতে বলা হয়েছে।
দুইদিনের ব্যবধানে
যুগান্তরে দুই এসপিকে নিয়ে আলোচিত অনুসন্ধানী প্রতিবেদন প্রকাশের পর সারা দেশে তোলপাড়
হয়। সামাজিক যোগাযোগমাধ্যমে পুলিশের বিরুদ্ধে সমালোচনার ঝড় বইতে থাকে। পত্রিকায় প্রকাশিত
প্রতিবেদন অনলাইন সংস্করণ থেকে সামাজিক যোগাযোগমাধ্যমে ছড়িয়ে পড়লে দ্রুত ভাইরাল হয়ে
যায়।
এদিকে অনুসন্ধানী
প্রতিবেদন প্রকাশের পর সোমবার এক জরুরি বৈঠক ডাকেন কক্সবাজার জেলা পুলিশ সুপার রহমত
উল্লাহ। বৈঠকে পুলিশের ঘনিষ্ঠ কয়েকজন এবং মাদক ব্যবসায় জড়িত কিছু পুলিশ সদস্য উপস্থিত
ছিলেন। এ সময় এসপি রহমত উল্লাহ বলেন, ‘আমাদের বাঁচতে হলে সাংবাদিক জসিমকে মাদক মামলায়
ফাঁসাতে হবে। তদন্ত টিমকে বলতে হবে যে, ওই ইয়াবা চালানের সঙ্গে সাংবাদিক জসিম জড়িত।
সেটি জব্দ করার কারণেই তিনি আমার বিরুদ্ধে ষড়যন্ত্রমূলক সংবাদ প্রকাশ করেছেন।’ পুলিশের
একটি নির্ভরযোগ্য সূত্র বৈঠকের এ তথ্য নিশ্চিত করেছে।