ধর্মীয় পুনর্জাগরণে এখনও প্রাসঙ্গিক ফরায়েজি আন্দোলন
প্রকাশ: ১৬ ফেব্রুয়ারি ২০২৫, ০৪:৫৯ পিএম

ইংরেজ সাম্রাজ্যবাদী বেনিয়া শক্তির বিরুদ্ধে উপমহাদেশে যে কয়েকটি সংগ্রাম সাড়া জাগিয়েছিল ফরায়েজি আন্দোলন তার অন্যতম।
ফরায়েজি আন্দোলন বাংলার ইতিহাসে একটি গুরুত্বপূর্ণ স্থান দখল করে আছে। এটি শুধু একটি ধর্মীয় পুনর্জাগরণ নয়, বরং একটি সামাজিক এবং রাজনৈতিক পরিবর্তনের সূচনা।
ব্রিটিশ শাসনের প্রভাবে উপমহাদেশের মুসলমানদের ধর্মীয় বিশ্বাস-আমল, আচার-আচরণে আমূল পরিবর্তন ঘটেছিল। বিজাতীয় সংস্কৃতির অনেক কিছুই মুসলমানদের মধ্যে অনুপ্রবেশ করেছিল। ফলে তারা নিজেদের ধর্মীয় কর্মকাণ্ড থেকেও অনেক ক্ষেত্রে দূরে সরে গিয়েছিল।
এমন প্রেক্ষাপটে হাজী শরীয়তুল্লাহ (১৭৮১-১৮৪০) বাংলার মুসলমানদের মাঝে তাদের বিস্মৃত ধর্মীয় চেতনা জাগ্রত করার মাধ্যমে তাদেরকে ইসলামের ফরজ বিধান পালনের দিকে ফিরিয়ে আনার জন্য ১৮১৮ সালে আন্দোলন শুরু করেন।
এ আন্দোলনই ইতিহাসে ‘ফরায়েজি আন্দোলন’ নামে পরিচিত। ফরায়েজি আন্দোলন বাংলার মুসলিম সমাজে একটি ঐতিহাসিক পুনর্জাগরণের নাম। ১৯শ শতকের শুরুতে এটি বাংলার নিম্নবিত্ত মুসলমানদের ধর্মীয় চেতনা এবং সামাজিক অধিকার পুনরুদ্ধারের জন্য চালু হয়েছিল।
এই আন্দোলনের মূল লক্ষ্য ছিল ইসলামের শুদ্ধ রীতি প্রচার এবং কুসংস্কার ও জমিদারি শোষণের বিরুদ্ধে প্রতিরোধ। হাজী শরীয়তুল্লাহর নেতৃত্বে শুরু হওয়া এই আন্দোলন বাংলার মুসলিম জনগোষ্ঠীর মধ্যে এক নতুন চেতনার সৃষ্টি করে।
ফরায়েজি শব্দটি আরবী ফারাইয শব্দ থেকে গৃহীত। ফারায়েজ হ’ল ফারীযাতুন-এর বহুবচন। তবে ফার্সী ভাষার অনুসরণে বাংলায় এর উচ্চারণ হয় ফরায়েয এবং তা থেকে ‘ফরায়েজি’।
ইসলাম ধর্মে অবশ্যপালনীয় কয়েকটি কর্ম রয়েছে। এসব অবশ্যপালনীয় কর্তব্য সম্পর্কে যারা আন্দোলন করেছে তাদেরকে ‘ফরায়েজি’ বলা হয়। তবে ফরায়েজিরা ফারাইজ শব্দটি ব্যাপক অর্থে ব্যবহার করেছে। এরা মহান আল্লাহ ও তার নবীর নির্দেশিত সকল ধর্মীয় কর্তব্যকে গুরুত্ব সহকারে বিবেচনা করেছে। যদিও তারা ইসলামের পাঁচটি মৌলিক বিষয়ের উপর গুরুত্ব দিয়েছে বেশী।
হাজী শরীয়তুল্লাহ ১৮১৮ খ্রিষ্টাব্দে ধর্মীয় সামাজিক আন্দোলন হিসাবে ফরায়েজি আন্দোলন শুরু করেন। আন্দোলনটি পূর্ব বাংলা ও আসামে বিশেষ করে পূর্ব বাংলার গ্রামাঞ্চলে বিস্তার লাভ করে।
১৭৯৯ সালে মক্কায় হজ করতে গিয়ে সেখানে দীর্ঘদিন অবস্থান করে ধর্মীয় শিক্ষায় দীক্ষিত হন শরীয়তুল্লাহ।১৮১৮ সালে দেশে ফিরে লক্ষ করেন, অনেকেই বিভিন্ন সামাজিক অনুষ্ঠানে ধর্মীয় রীতিবিরুদ্ধ আচার-অনুষ্ঠান যুক্ত করছে। তিনি এসবের বিরুদ্ধে অবস্থান নিয়ে ইসলামের মৌলিক বিষয়গুলো পালনের ব্যাপারে মুসলমানদের আহ্বান করেন। একই সঙ্গে ‘শিরক’ ও ‘বিদাত’ নিষিদ্ধের ঘোষণা দেন।
হাজী শরীয়তুল্লাহর মৃত্যুর পর তার ছেলে দুদু মিয়া এ আন্দোলনের নেতৃত্ব দেন।
ফরায়েজি আন্দোলনের লক্ষ্য ছিল এ অঞ্চলে ইসলামি জীবনধারার পুনঃপ্রতিষ্ঠা, কুসংস্কার, বিদআত (ধর্মীয় বিকৃতি) এবং অশুদ্ধ প্রথার বিরুদ্ধে প্রচার, নিম্নবিত্ত মুসলমানদের মধ্যে ধর্মীয় শিক্ষা ও চেতনার বিস্তার ও জমিদারদের শোষণের বিরুদ্ধে কৃষকদের রক্ষা।
ফরায়েজি আন্দোলনের পটভূমি
পলাশীর যুদ্ধে পরাজয়ের পর বাংলার পরিবর্তিত সামাজিক, রাজনৈতিক, অর্থনৈতিক ও ধর্মীয় অবস্থা ফরায়েজি আন্দোলনের প্রেক্ষাপট তৈরি করেছিল। পলাশীতে ক্ষমতা প্রতিপত্তি হারানোর পর মুসলমানদের আভিজাত্য, সাহিত্য, সংস্কৃতি, শিল্পকলা, অর্থনৈতিক ও সামাজিক ক্ষেত্রে মারাত্মক অবক্ষয় দেখা দেয়। ইসলামিক জ্ঞানে শিক্ষিত হাজী শরীয়ত উল্লাহ এসব দেখে মর্মাহত হন। মুসলমানদের এই অবস্থা হতে মুক্তির জন্য ফরায়েজি আন্দোলনের সূত্রপাত ঘটে।
সামাজিক প্রেক্ষাপট: ১৮শ শতকের শেষভাগে এবং ১৯শ শতকের শুরুতে বাংলার মুসলিম সমাজ কঠিন সংকটে পড়ে।ইসলামের শুদ্ধ রীতি থেকে বিচ্যুতির ফলে ধর্মীয় কুসংস্কার এবং অন্ধবিশ্বাস সমাজে ছড়িয়ে পড়েছিল। অন্যদিকে নিম্নবিত্ত মুসলমানরা জমিদারদের শোষণের শিকার হচ্ছিল।ব্রিটিশ শাসন বাংলার জমিদারি ব্যবস্থা চালু করে, যা কৃষকদের ওপর কঠোর শোষণ আরোপ করে।ফলে মুসলমানদের সামাজিক মুক্তি পরম আকাঙ্খিত ছিল।
ধর্মীয় প্রেক্ষাপট: ওইসময় মুসলমানদের মধ্যে বিদআত এবং ধর্মীয় বিভ্রান্তি ছড়িয়ে পড়ে।ফলে পীর-ফকিরদের ভ্রান্ত চর্চা ইসলামের মূলনীতি থেকে সমাজকে দূরে সরিয়ে দেয়। ধর্মীয় শিক্ষা ও শুদ্ধতার অভাব সমাজে অন্ধকার নেমে আনে।
রাজনৈতিক প্রেক্ষাপট: ব্রিটিশদের উপনিবেশিক শাসন মুসলমানদের অর্থনৈতিক এবং সামাজিক অবস্থা আরও দুর্বল করে তোলে।জমিদারদের চরম শোষণের কারণে কৃষকরা তাদের জমি ও জীবিকা হারাতে শুরু করে।
ফরায়েজি আন্দোলনের মূলনীতি ও কার্যক্রম
১. ধর্মীয় শুদ্ধি: ইসলামি ফরজ কার্যাবলির প্রতি গুরুত্ব দেওয়া। নামাজ, রোজা এবং যাকাতের বাধ্যতামূলক পালন।কুসংস্কার এবং বিদআত-এর বিরুদ্ধে প্রচার।
২. জমিদারি ব্যবস্থার বিরুদ্ধে প্রতিরোধ: জমিদারদের দ্বারা কৃষকদের শোষণের বিরুদ্ধে প্রতিবাদ।কৃষকদের অধিকার রক্ষার জন্য সংগঠিত আন্দোলন।
জমিদারদের অত্যাচার থেকে মুক্তির লক্ষ্যে ধর্মীয় চেতনা কাজে লাগানো।
৩. সমাজ সংস্কার: মুসলমানদের মধ্যে ঐক্য প্রতিষ্ঠা।সামাজিক বিভেদ দূর করার চেষ্টা। শিক্ষার প্রতি গুরুত্ব আরোপ।
৪. সাংগঠনিক কার্যক্রম: স্থানীয় জমায়েতের মাধ্যমে আন্দোলনের বার্তা ছড়ানো।,ইমাম ও স্থানীয় নেতাদের মাধ্যমে ধর্মীয় শিক্ষার বিস্তার।
ফরায়েজি আন্দোলনের কার্যক্রম বাংলার মুসলমানদের মধ্যে এক নতুন চেতনা সৃষ্টি করে এবং তাদের ধর্মীয় ও সামাজিক জীবনে পরিবর্তন আনে।
এ সংস্কার আন্দোলনের দু’টি বৈশিষ্ট্য ছিল।
১. মুসলিম কৃষক শ্রেণীর মধ্যে দীর্ঘদিন ধরে চলে আসা অনৈসলামিক বিশ্বাস ও আচারকে সংশোধন করা।
২. তাদের সংস্কার করা ধর্মমতকে কায়েমী স্বার্থান্বেষী জমিদার ও নীল করদের থেকে রক্ষা করা। এ আন্দোলন মুসলিম কৃষক শ্রেণীর মধ্যেই বিশেষভাবে জনপ্রিয়তা লাভ করেছিল।
ফরায়েজি আন্দোলন এমন একটি প্রচেষ্টা ছিল, যা বাংলার মুসলিম সমাজকে কুসংস্কারমুক্ত করতে এবং ইসলামের মূল নীতি মেনে চলার জন্য উত্সাহিত করত।
রাজনৈতিক কার্যক্রম
হাজী শরীয়ত উল্লাহ ফরায়েজি আন্দোলনকে ধর্মীয় সংস্কার আন্দোলন হিসেবে সীমাবদ্ধ রাখলেও তার ছেলে মোহসিন উদ্দিন ওরফে দুদু মিয়া ফরায়েজি আন্দোলনকে রাজনৈতিক আন্দোলনের রূপদান করেন। দুদুমিয়া মক্কাতে পড়াশোনা করে দেশে ফিরে আসেন। জমিদারদের সঙ্গে ফরায়েজিদের সংঘর্ষের পরিপ্রেক্ষিতে তিনি শিষ্যদের সমন্বয়ে এটাকে রাজনৈতিক সংগঠন হিসেবে গড়ে তোলার প্রয়োজনীয়তা অনুভব করেন।
ঢাকা অঞ্চলে যখন ফরায়েজি আন্দোলন সংখ্যায় ও শক্তিতে দ্রুত বৃদ্ধি পেতে থাকে তখন জমিদার ও নীলকররা ফরায়েজি আন্দোলনকে স্তিমিত করতে নানা অত্যাচার-নির্যাতন শুরু করে।
শরীয়তুল্লাহর ইন্তেকালের পর দুদু মিয়ার নেতৃত্বে জনগণ আরও ব্যাপকভাবে সংগঠিত হন এই অত্যাচার-উৎপীড়নের বিরুদ্ধে।
অর্থনৈতিক কার্যক্রম: আন্দোলনের পাশাপাশি ফরায়েজিরা কিছু অর্থনৈতিক কাজও করেছিল। অবৈধ কর প্রদান বন্ধকরাসহ ফরায়েজি অধ্যুষিত এলাকাতে শরীয়তুল্লাহ ও দুদুমিয়া কর নির্ধারণ ও আদায় করতেন এবং সেসব অর্থ তাদের প্রয়োজনীয় খাতে ব্যয় করতেন।
পঞ্চায়েত ও বিচার: ফরায়েজিরা সামাজিক নিরাপত্তা ও শৃঙ্খলা প্রতিষ্ঠার জন্য সীমিত পরিসরে বিচার ব্যবস্থা ও সালিশ গঠন করেছিল। তাদের এই ব্যবস্থাকে বলা হতো পঞ্চায়েত আদালত। সংগঠনের সর্বোচ্চ প্রধান ব্যক্তি হিসেবে হাজী শরীয়তুল্লাহ এবং দুদুমিয়া বিচারকার্য সম্পাদন করতেন। এসব কর্মকাণ্ডের প্রেক্ষিতে ইংরেজরা ফরায়েজি অধ্যুষিত এলাকাকে “State within the state” (দেশের ভিতরে আরেক দেশ) বলে আখ্যায়িত করেছিল।
প্রশাসনিক কার্যক্রম: ফরায়েজিদের একটি প্রশাসনিক কাঠামো ছিল। ফরায়েজি অধ্যুষিত ছয়টি এলাকা নিয়ে একটি খেলাফত গঠন করা হয়েছিল। প্রতি গ্রামে একজন খলিফা ছিলেন, কয়েক গ্রামের খলিফাদের নিয়ে সুপারিনটেনডেন্ট খলিফা এবং এদের মাধ্যমে কেন্দ্রীয় খলিফা নির্ধারণ করা হতো। এসব ইউনিটের মাধ্যমে ফরায়েজি প্রশাসন পরিচালিত হতো।
ফরায়েজি আন্দোলনের প্রভাব
বাংলার মুসলমান সমাজে ফরায়েজি আন্দোলন বহুমুখী প্রভাব ফেলে, যা ধর্মীয়, সামাজিক এবং রাজনৈতিক স্তরে পরিবর্তন আনে।
১. ধর্মীয় প্রভাব: মুসলমানদের মধ্যে ইসলামের ফরজ কার্যাবলির প্রতি সচেতনতা বৃদ্ধি।কুসংস্কার, বিদআত এবং ভ্রান্ত বিশ্বাস থেকে সমাজ মুক্তি পায়।
ইসলামের শুদ্ধ রীতিনীতি অনুসরণে মানুষ উদ্বুদ্ধ হয়।
২. সামাজিক প্রভাব: কৃষক শ্রেণির মধ্যে ঐক্য এবং আত্মবিশ্বাস বৃদ্ধি।জমিদারদের বিরুদ্ধে সংগঠিত প্রতিরোধ গড়ে তোলা।নিম্নবিত্ত মুসলমানদের সামাজিক মর্যাদা বৃদ্ধি।
৩. রাজনৈতিক প্রভাব: ব্রিটিশ শাসনের বিরুদ্ধে বিদ্রোহী চেতনার উন্মেষ।জমিদারি ব্যবস্থার অন্যায়ের বিরুদ্ধে সরাসরি প্রতিবাদ।ভবিষ্যতের বিভিন্ন আন্দোলনে অনুপ্রেরণা প্রদান।
৪. দীর্ঘমেয়াদী প্রভাব: পরবর্তী মুসলিম সংস্কার আন্দোলনের ভিত্তি স্থাপন।বাংলার মুসলমানদের সামাজিক এবং রাজনৈতিক পুনর্জাগরণের সূচনা।
ফরায়েজি আন্দোলনের পরবর্তী ইতিহাস:
১৮৫৭ সালের সিপাহী বিদ্রোহের সময় দুদুমিয়াকে গ্রেফতার করা হয়। অবশ্য পরে তাকে মুক্তি দেয়া হয়। ১৮৬২ সালে তিনি মারা যান। পরবর্তীতে তার পুত্র গাজী উদ্দিন হায়দার ১৮৬২-৬৪ আব্দুল গফুর ওরফে নয়া মিয়া ১৮৬৪-৮৩ খান বাহাদুর সাইদ উদ্দিন আহমদ ১৮৮৩-১৯০৩ ফরায়েজিদের ওস্তাদ বা নেতা নির্বাচিত হন। সাইদ উদ্দিন বঙ্গভঙ্গ সমর্থন করেন।
অতঃপর তার পুত্র বাদশা মিয়া ওস্তাদ নির্বাচিত হন। তিনি খিলাফত ও অসহযোগ আন্দোলনে যোগ দিয়েছিলেন। কিছুকাল তাকে অন্তরীন রাখা হয়। ১৯৫১ সালে তিনি মারা গেলে ফরায়েজি আন্দোলনের চূড়ান্ত পরিসমাপ্তি ঘটে।
ব্যর্থতার কারণ
ফরায়েজি আন্দোলন কিছু ক্ষেত্রে সফলতা পেলেও এটা গণমানুষের আন্দোলন হিসেবে গড়ে ওঠেনি। যে সব কারণে ফরাজী আন্দোলন ব্যাপক সফলতা পায়নি সেগুলো হল-
রক্ষণশীল মুসলমানদের বিরোধিতা
হিন্দুদের চরম বিরোধিতা
জমিদারদের বিরোধিতা
তিতুমীর সম্প্রদায়ের সামর্থনের অভাব
সরকারের বিরোধিতা।
মুসলমানদের ধর্মীয় ও সামাজিক জীবন ইসলামের আদর্শের ভিত্তিতে নিয়ন্ত্রিত করা ফরায়েজি আন্দোলনের উদ্দেশ্য ছিল। ধর্মীয় সংস্কারের পাশাপাশি তারা মুসলমানদেরকে অন্যায়ের বিরুদ্ধে প্রতিবাদ করতে শেখান এবং তাদের মধ্যে প্রাণ চাঞ্চল্য সৃষ্টি করেন। প্রভাবশালী জমিদার ও নীলকরদের বিরুদ্ধে এই অসম সাহসী ফরায়েজি নেতাদের সংগ্রাম বাংলার ইতিহাসে এক রোমাঞ্চকর অধ্যায়।
ফরায়েজি আন্দোলন ধর্মীয় সংস্কার আন্দোলন হিসেবে আত্মপ্রকাশ করলেও, নেতৃবৃন্দ প্রথমদিকে রাজনীতির সাথে জড়িত না থাকলেও তাদের অনুসারীদের স্বার্থে এবং বাধ্য হয়ে অনেক রাজনৈতিক সিদ্ধান্ত নিতে কুণ্ঠিত হননি। সর্বোপরি শিরিক বিদআত থেকে মুসলমানদেরকে দূরে রেখে ইসলামী আদর্শে উজ্জীবিত করার ক্ষেত্রে ফরায়েজি আন্দোলনের ব্যাপক অবদান রয়েছে।
বর্তমান প্রেক্ষাপটে ফরায়েজি আন্দোলনের প্রাসঙ্গিকতা:
১. ধর্মীয় চেতনার গুরুত্ব: সমাজে নৈতিক মূল্যবোধ এবং ধর্মীয় শুদ্ধতা বজায় রাখতে ফরায়েজি আন্দোলনের শিক্ষা আজও প্রাসঙ্গিক।
২. সামাজিক ঐক্যের প্রয়োজন: ফরায়েজি আন্দোলনের মতো ঐক্যবদ্ধ প্রচেষ্টা আধুনিক সমাজের বিভেদ এবং শোষণের বিরুদ্ধে কার্যকর হতে পারে।
৩. অধিকার আদায়ের জন্য প্রেরণা: এই আন্দোলন অধিকার আদায়ের সংগ্রামে সাহস এবং ঐক্যের একটি চমৎকার উদাহরণ।
ফরায়েজি আন্দোলন বাংলার ইতিহাসে একটি গুরুত্বপূর্ণ স্থান দখল করে আছে। এটি শুধু একটি ধর্মীয় পুনর্জাগরণ নয়, বরং একটি সামাজিক এবং রাজনৈতিক পরিবর্তনের সূচনা।ফরায়েজি আন্দোলন শুধুমাত্র অতীতের একটি ঐতিহাসিক ঘটনা নয়, বরং এটি আজকের সমাজের জন্যও একটি শিক্ষা এবং প্রেরণার উৎস।