Logo
Logo
×

জাতীয়

সিটিজেন ইনিশিয়েটিভের সেমিনারে বক্তারা

নিজেরাই হত্যার সঙ্গে জড়িত থাকায় মামলা নিচ্ছে না পুলিশ

Icon

যুগান্তর প্রতিবেদন

প্রকাশ: ১৫ ফেব্রুয়ারি ২০২৫, ১১:০৮ এএম

নিজেরাই হত্যার সঙ্গে জড়িত থাকায় মামলা নিচ্ছে না পুলিশ

সিটিজেন ইনিশিয়েটিভ আয়োজিত সেমিনারে বক্তারা বলেছেন, বিভিন্ন জায়গায় পুলিশ মামলা নিচ্ছে না, কারণ তারা নিজেরাই হত্যাকাণ্ডের সঙ্গে জড়িত।  ফ্যাসিবাদের বিচার হওয়া উচিত আন্তজার্তিক মানের। ৫ আগস্টের পর মাত্র তিনজন গুম হওয়া ব্যক্তি মুক্তি পেয়েছেন, বাকিরা এখনো গুম হয়ে আছেন। ন্যায়বিচার এড়িয়ে রিকনসিলিয়েশন করা বিপজ্জনক বিষয় বলেও মন্তব্য করেন তারা।

ফ্যাসিবাদের বিচার, দায় ও মীমাংসা শীর্ষক সেমিনারে বলা হয়, ‘ধানমন্ডি ৩২ নম্বর’ গুঁড়িয়ে দেওয়ার মাধ্যমে রাজনৈতিক ঐকমত্য গঠনের লক্ষণ দেখা যাচ্ছে।

বিএনপির মামলা, গুম ও হত্যা তথ্য সংরক্ষণ সমন্বয়ক মো. সালাহউদ্দিন খান সেমিনারে বলেন, ক্ষমতা কুক্ষিগত করতে আইনশৃঙ্খলা বাহিনীকে ব্যবহার করে আওয়ামী লীগ বিরোধী মতের মানুষদের হত্যা-গুম করেছে।

শুক্রবার (১৪ ফেব্রুয়ারি) বিকালে আয়োজিত সেমিনারে সালাহউদ্দিন খান আরও বলেন, বাংলাদেশে বিএনপির পক্ষ থেকে তিন হাজার মামলা করা হয়েছে। আমরা অতীতে দেখেছি, অপারেশন ঈগল হান্টের নাম করে চাঁপাইনবাবগঞ্জে নাটক সাজিয়ে নিরপরাধ চারজন মানুষকে হত্যা করা হয়েছে। ৬৫ লাখ মানুষের বিরুদ্ধে মামলা করেছিল বিগত সরকার। সারা দেশে বিএনপির পক্ষ থেকে তথ্য সংগ্রহ করে আমরা জেনেছি, দুই হাজার ২৭৬ জনকে ক্রস ফায়ারে মারা হয়েছে। মোট তিন লাখ ৬ হাজারটি এফআইআর করা হয়েছে বিরোধী দলের নেতাকর্মীদের ওপর।

তিনি বলেন, হত্যা চেষ্টার মামলায় মৃত্যুদণ্ডের মতো প্রহসনও ঘটেছে ফ্যাসিস্ট সরকারের আমলে। এছাড়া বিভিন্ন জায়গায় ৭ তারিখের পর থেকে মামলা নিচ্ছে না পুলিশ, কারণ তারা নিজেরাই জড়িত এসব মামলায়। 

তিনি আরও বলেন, বিএনপির কিছু নেতা বিভিন্ন জায়গায় মামলা নিয়ে বাণিজ্য করার চেষ্টা করছে, এসব থেকে নিজেদেরকে বিরত রাখতে হবে। ছাত্রদের পক্ষ হয়ে আমরা কাজ করার ব্যাপারে বদ্ধপরিকর। আমরা চাই, ফ্যাসিবাদের বিচার এবং তা দ্রুত বাস্তবায়ন করে নির্বাচনের পথে এগোতে।

সুপ্রিম কোর্টের আইনজীবী ব্যারিস্টার বেলায়েত হোসেন বলেন, ফ্যাসিবাদ পরবর্তী পরিস্থিতিতে রাষ্ট্রের যত্ন নেওয়া উচিত, যাতে মানবাধিকার আর বিপন্ন না হয়। ন্যায়বিচার নিশ্চিত করার জন্য কিছু সুনির্দিষ্ট পদক্ষেপ নেওয়ার জন্য কিছু সংশোধনী আনা হচ্ছে। এর মধ্যে বড় একটি অনুঘটক ঘটেছে ইউএনএইচসিআরের রিপোর্টের মাধ্যমে, যা ন্যায়বিচারকে আরও শক্তিশালীভাবে মোবিলাইজ করছে। জাতিসংঘ স্পষ্টভাবে বলেছে, মানবতাবিরোধী এই অপরাধ বা নির্মূল ক্ষমতা দখলের জন্যই ঘটেছে। বিএনপি এই প্রতিবেদনের ভিত্তিতে অভিযোগ দায়ের করেছে। দ্রুত কয়েকজনকে শাস্তি দেওয়ার পরিবর্তে আন্তর্জাতিক মানের বিচার হওয়া উচিত।

গুম হওয়া ভিকটিমদের অধিকার আদায়ে সোচ্চার মানবাধিকার সংগঠন মায়ের ডাকের সমন্বয়ক সানজিদা ইসলাম তুলি বলেন, এটি গণহত্যা, কেবল একটি ফ্যাসিবাদী কাজ নয়। মাত্র তিনজন জোরপূর্বক গুম হওয়া ব্যক্তিকে মুক্তি দেওয়া হয়েছে, বাকিরা এখনো গুম হয়ে রয়েছেন। ভেতরে হাজার হাজার মানুষ কাঁদছে, যারা এখনো ন্যায়বিচারের জন্য অপেক্ষা করছে। আমরা যখন সেই আয়নাঘর ব্যবস্থা দেখেছি তখন আরও কান্নার রোল বয়ে যাচ্ছে। এখন আমরা বলতে পারি যে, আমাদের আত্মীয়রা কীভাবে এত কুখ্যাত নির্যাতনের মুখোমুখি হয়েছিল। আমরা ব্যক্তি, সংগঠন, সমাজ এবং রাষ্ট্র হিসেবে ব্যর্থ হয়েছি। এই মর্মান্তিক অভিজ্ঞতা প্রতিদিনই হত্যা করবে। ন্যায়বিচার প্রতিষ্ঠার জন্য, আমাদের আরেকটি দীর্ঘস্থায়ী যুদ্ধ লড়তে হবে। আমরা আওয়ামী লীগকে সম্পূর্ণ নিষিদ্ধ করার আশা করছি।

এছাড়াও সেমিনারে বক্তব্য রাখেন ইউনিভার্সিটি অব ক্যালিফোর্নিয়া আরভাইনের পিএইচডি ফেলো খন্দকার রাকিব ও এবি পার্টির জুলাই অভ্যুত্থান বাস্তবায়ন বিষয়ক সম্পাদক অ্যাভোকেট উদয় তাসমীর।

সেমিনারটি সঞ্চালনা করেন আন্তর্জাতিক অপরাধ ট্রাইব্যুনালের প্রসিকিউটর মো. সাইমুম রেজা তালুকদার।

Jamuna Electronics

Logo

সম্পাদক : আবদুল হাই শিকদার

প্রকাশক : সালমা ইসলাম