Logo
Logo
×

জাতীয়

ডিসির নতুন ফিটলিস্ট তৈরির কাজ স্থগিত, কর্মকর্তাদের মধ্যে অসন্তোষ

Icon

যুগান্তর প্রতিবেদন

প্রকাশ: ১৩ ফেব্রুয়ারি ২০২৫, ১০:২২ এএম

ডিসির নতুন ফিটলিস্ট তৈরির কাজ স্থগিত, কর্মকর্তাদের মধ্যে অসন্তোষ

সচিব নেই ৯ মন্ত্রণালয় ও বিভাগে। অতিরিক্ত সচিব, যুগ্মসচিব এবং উপসচিব পদে পদোন্নতিও ঝুলে রয়েছে। একাধিক বৈঠকের পর সুপিরিয়র সিলেকশন বোর্ডের (এসএসবি) সভা স্থগিত রাখা হয়েছে। জেলা প্রশাসকের (ডিসি) নতুন ফিটলিস্ট তৈরির কাজ শুরু হলেও বর্তমানে স্থগিত রয়েছে। বিষয়গুলো নিয়ে বিভিন্ন ব্যাচের কর্মকর্তাদের মধ্যে অসন্তোষ দেখা দিয়েছে। এছাড়া মহার্ঘভাতার জন্য কমিটি গঠন করে আনুষ্ঠানিক ঘোষণার পর সরকার তা থেকে সরে আসায় কর্মচারীদের মধ্যে অসন্তোষ রয়েছে।

জনপ্রশাসন মন্ত্রণালয়য়ের তথ্য অনুযায়ী বর্তমানে সংস্কৃতিবিষয়ক মন্ত্রণালয়, সেতু বিভাগ, পরিকল্পনা কমিশন, জাতীয় সংসদ সচিবালয়, পার্বত্য চট্টগ্রামবিষয়ক মন্ত্রণালয়, মৎস্য ও প্রাণিসম্পদ মন্ত্রণালয়, বাণিজ্য মন্ত্রণালয়, বাস্তবায়ন পরিবীক্ষণ ও মূল্যায়ন বিভাগ, পরিসংখ্যান ও তথ্য ব্যবস্থাপনা বিভাগে কোনো সচিব নেই। মন্ত্রণালয় ও বিভাগগুলোতে অতিরিক্ত সচিব পর্যায়ের কর্মকর্তারা সচিবের রুটিন দায়িত্ব পালন করছেন। অথচ সচিব হচ্ছেন মন্ত্রণালয় ও বিভাগের প্রিন্সিপাল অ্যাকাউন্টিং অফিসার। সরকারের উপদেষ্টা, মন্ত্রী কিংবা প্রতিমন্ত্রীর অনুপস্থিতিতে সচিব মন্ত্রণালয়ের অভিভাবক। দীর্ঘ সময় ধরে মন্ত্রণালয় ও বিভাগগুলোতে সচিব পদে কোনো কর্মকর্তা নেই। সচিবের শূন্য পদ পূরণে বিশ্বস্ত কর্মকর্তা পাওয়া যাচ্ছে না বলে জানা গেছে।

জানতে চাইলে এপিডি (জনপ্রশাসন নিয়োগ, পদোন্নতি ও প্রেষণ) মো. ওবায়দুর রহমান যুগান্তরকে বলেন, সচিবের শূন্য পদ পূরণ করা না করা সরকারের সিদ্ধান্ত। সে বিষয়ে আমাদের কোনো বক্তব্য নেই। তিনি বলেন, সময়ের অভাবে এসএসবির সভা করা যাচ্ছে না। ডিসির ফিটলিস্ট তৈরির ক্ষেত্রেও কমিটির সদস্যদের ব্যস্ততা থাকায় কাজটি এগোচ্ছে না। আশা করি কাজগুলো দ্রুত শেষ করতে পারব। এক প্রশ্নের জবাবে এপিডি বলেন, পদোন্নতি নিয়ে কর্মকর্তাদের মধ্যে অসন্তোষ থাকা স্বাভাবিক।

সংশ্লিষ্ট সূত্রে জানা গেছে, সচিব পদে পদোন্নতি দিতে গিয়ে সরকার বারবার হোঁচট খাচ্ছে। তারা সবাইকে ফ্যাসিবাদের দোসর হিসাবে ভাবছে। বর্তমান সরকারের সঙ্গে ঘনিষ্ঠভাবে কাজ করছে এবং বিগত সরকারের সময়ে পদোন্নতিসহ নানাভাবে বঞ্চিত ও হয়রানির শিকার কর্মকর্তাদের বিষয়েও সিদ্ধান্ত নিতে কালক্ষেপণ করছেন নীতিনির্ধারকরা। এতে প্রশাসনের উচ্চপর্যায়ের দায়িত্বশীলদের সঙ্গে কর্মরত কর্মকর্তাদের রসায়নটা ভালো যাচ্ছে না। তারা জানান, সরকারের উচ্চপর্যায়ের দায়িত্বশীলরা প্রশাসনে কর্মরতদের সন্দেহের চোখে দেখছেন। স্বৈরাচার সরকারের সময়ে যারা অপেক্ষাকৃত দলনিরপেক্ষ ছিলেন, তাদের বিবেচনায় নেওয়া উচিত বলে মনে করছেন প্রশাসন বিশেষজ্ঞরা। কারণ ফ্যাসিবাদের সময় চাকরি করেননি রাতারাতি এমন কর্মকর্তা তৈরি করা যাবে না। যারা আছেন তাদের ভেতর থেকেই বেছে নিতে হবে।

সংশ্লিষ্টরা জানান, ২০২৪ সালের ৭ মার্চ বাংলাদেশ সিভিল সার্ভিস (বিসিএস) প্রশাসন ক্যাডারের ২৪তম ব্যাচকে মূল ধরে যুগ্মসচিব পদে পদোন্নতির জন্য তথ্য চেয়ে বিভিন্ন মন্ত্রণালয় ও বিভাগে পত্র দেয় জনপ্রশাসন মন্ত্রণালয়। নোটিশ জারির পর থেকে প্রায় এক বছর পার হতে চলেছে। কিন্তু এখনো শেষ হয়নি এসএসবি। বিসিএস প্রশাসন ক্যাডারের ৩০তম ব্যাচকে মূল বিবেচনায় নিয়ে গত বছর ৭ জুলাই সিনিয়র সহকারী সচিব থেকে উপসচিব পদে পদোন্নতির নোটিশ জারি হয়। এ পদোন্নতি ঝুলে আছে এসএসবিতে। ইতোমধ্যে গত বছর নভেম্বর মাসে প্রশাসন ক্যাডারের ২০তম ব্যাচকে মূল বিবেচনায় নিয়ে অতিরিক্ত সচিব পদে পদোন্নতির জন্য নোটিশ করা হলেও এসএসবি শেষ হয়নি। এসব বিষয়ে উল্লিখিত ব্যাচের কর্মকর্তাদের ভেতরে হতাশা বিরাজ করছে।

সংশ্লিষ্টরা জানান, ডিসির ফিটলিস্ট তৈরির কাজে শুরুর পর মাত্র এক দিন ভাইভা নিয়ে তা স্থগিত করা হয়েছে। কেন স্থগিত রয়েছে তার কোনো ব্যাখ্যাও দেওয়া হয়নি। বিভিন্ন পক্ষের দাবির পরিপ্রেক্ষিতে নতুন করে ডিসির ফিটলিস্ট তৈরির কাজে হাত দেয় জনপ্রশাসন মন্ত্রণালয়। এবারের ফিটলিস্টে ভাইভা দেওয়ার জন্য বিসিএস প্রশাসন ক্যাডারের ২৫, ২৭ এবং ২৮ ব্যাচের কর্মকর্তাদের ডাকা হয়েছে। তিন ব্যাচে প্রায় ৬ শতাধিক কর্মকর্তা আছেন তাদের মধ্যে ৪০ জনের ভাইভা নেওয়া হয়েছে। বাকিরা অপেক্ষায় আছেন।

এছাড়া মহার্ঘভাতা হার নির্ধারণে অর্থ সচিবকে প্রধান করে কমিটি গঠন করে সরকার। কমিটিতে জনপ্রশাসন মন্ত্রণালয়ের সিনিয়র সচিবকে সদস্য হিসাবে রাখা হয়। কমিটি গঠনের পরদিন জনপ্রশাসন সচিব সংবাদ সম্মেলন করে মহার্ঘভাতা প্রদানের ঘোষণা দেন। একই সঙ্গে তিনি ঘোষণা করেন এবার অবসরে যাওয়া কর্মচারীরাও মহার্ঘভাতা পাবেন। শেষ পর্যন্ত সরকার সেই ঘোষণা থেকে সরে আসে। অর্থ উপদেষ্টা জানান, মহার্ঘভাতা দেওয়ার মতো অর্থ সরকারের কাছে নেই। সরকারের এমন আচরণে ক্ষুব্ধ কর্মচারীরা।

Jamuna Electronics

Logo

সম্পাদক : আবদুল হাই শিকদার

প্রকাশক : সালমা ইসলাম