‘আন্দোলনে সুস্থ ছিলেন, আদালতে এসে অসুস্থ বলেন আসামিরা’

যুগান্তর প্রতিবেদন
প্রকাশ: ১২ ফেব্রুয়ারি ২০২৫, ০৪:০৬ পিএম

ছবি: সংগৃহীত
ছাত্র-জনতার আন্দোলনের সময় অসুস্থ ছিলেন কিন্তু তাদের গ্রেফতার করে আদালতে নিয়ে আসার পর নিজেদের অসুস্থ বলেন বলে মন্তব্য করেছেন ঢাকা মহানগর দায়রা জজ আদালতের পিপি এডভোকেট ওমর ফারুক ফারুকী।
বুধবার নাসা গ্রুপের নজরুল ইসলামের
রিমান্ড শুনানিতে তিনি এ মন্তব্য করেন পিপি।
এদিন তাকে কারাগার থেকে আদালতে হাজির
করে ধানমণ্ডি ও যাত্রাবাড়ী থানার দুই মামলায় ১০ দিন করে রিমান্ড আবেদন করেন মামলার
তদন্ত কর্মকর্তা। রিমান্ডের পক্ষে শুনানি করেন ঢাকা মহানগর দায়রা জজ আদালতের পিপি ওমর
ফারুক ফারুকী। আসামিপক্ষের আইনজীবীরা তার রিমান্ড বাতিল চেয়ে আবেদন করেন। পরে আদালত
৫ দিন করে দুই মামলায় ১০ দিন রিমান্ড নিয়ে জিজ্ঞাসাবাদের অনুমতি দেন।
এদিন শুনানিতে আসামিপক্ষের আইনজীবীরা
বলেন, তিনি এক্সিম ব্যাংকের চেয়ারম্যান। বাংলাদেশের অনেক বড় শিল্প উদ্যোক্তা। তার
অধীনে ৫ লক্ষ লোক কাজ করে। সে এখন জেলে। কোম্পানি বন্ধ হয়ে গেলে এসব লোক বেকার হয়ে
যাবে। তার বিরুদ্ধে মামলায় কোন অভিযোগ নাই। সে কোন রাজনৈতিকদলের সদস্য না। সে একজন
ব্যবসায়ী মানুষ। সরকার আসে, সরকার যায়। তারা ব্যবসায়ীরা তাদের সুবিধার জন্য যা করা
দরকার করে। জেল হাজতে থাকাকালীন তার হার্টে রিং পরানো হয়েছে বঙ্গবন্ধু মেডিকেলে। তাকে
একাধিক মামলায় আগে রিমান্ডে নেয়া হয়েছে। কোথাও কোন কিছু পায় নাই। তার শারীরিক যে
অবস্থা রিমান্ডে নেওয়ার মত কোন সুযোগ নেই। রিমান্ড বাতিল করে জেলগেটে জিজ্ঞাসাবাদের
অনুমতি দেওয়া হোক।
এরপর আবার রাষ্ট্রপক্ষে ঢাকা মহানগর
দায়রা জজ আদালতের সরকারি কৌশলি (পিপি) ফারুকী বলেন, ছাত্রদের হত্যার মামলায় আসামিরা যখন কোর্টে আসে
তাদের অসুস্থতা, ক্যান্সার, বয়স্ক, এটা নাই, সেটা নাই অনেক কিছু হয়ে যায়। জুলাই
আন্দোলনের সময় এমন জোরে জোরে বক্তব্য দিয়েছেন তখন মনে হয়নি তিনি অসুস্থ। আন্দোলনে
যখন ছিলেন তখন কোন অসুস্থতা ছিল না। তখন সুস্থ ছিলেন।
তিনি বলেন, আমাদের এই ধরনের সম্পদ দরকার
নাই, যে সম্পদ অবৈধ, যে সম্পদ মানুষের রক্ত চুষে তৈরি করা হয়েছে। যে সম্পদ স্বৈরশাসনের
মাধ্যমে অর্জন করা হয়েছে সেই সম্পদ আমাদের দরকার নাই। তারা কোটি কোটি টাকা দেশ থেকে
পাঁচার করেছে। শেখ হাসিনা যে ধরনের স্বৈরশাসন করেছে। আমরা চাই তার আমুল পরিবর্তন। আমরা
অল্প খাব, হালাল খাবো, হালাল পড়বো, হালাল উপার্জন করব, আমরা নজরুলের মত উদ্যোক্তা চাই
না। যারা মানুষের রক্ত চুষে খায়, সেই ধরনের উদ্যোক্তা আমাদের দরকার নাই। এই আন্দোলনে
২ হাজার মানুষ মারা গেছে। যারা গুলি করেছে তাদের যেমন শাস্তি আর যারা ষড়যন্ত্রমূলকভাবে
জড়িত তাদেরও তেমন শাস্তি। এখন তো মাত্র শুরু হয়েছে। আমরা এখন পর্যন্ত অর্ধেক মামলা
করতে পারি নাই, আরো বাকি আছে।
এরপর নজরুল ইসলাম নিজেই কিছু বলতে চান
বলে আদালতকে বলেন। এরপর আদালত অনুমতি দেন।
তখন তিনি বলেন, আমি হার্টের রোগী। অনেক
কষ্ট হচ্ছে। ওই সময় শেখ হাসিনার পাশে না থাকলে... আমার বড় ভাই ৫ বছর এমপি ছিল। সেই
বড় ভাইকে ক্রসফায়ারে মারা হয়েছে। আমারও সেই অবস্থা হত। আমার রিমান্ড বাতিল করে আমাকে
জেলগেটে জিজ্ঞাসাবাদের অনুমতি দেন। আমি শারীরিকভাবে অসুস্থ। এটা আমার একটা সাবমিশন।
পরে আদালত আদেশ দেন।