আন্তঃক্যাডার বৈষম্য নিরসন পরিষদ
বরখাস্ত আদেশ প্রত্যাহার না করলে কর্মবিরতির হুঁশিয়ারি
![Icon](https://cdn.jugantor.com/uploads/settings/icon_2.jpg)
যুগান্তর প্রতিবেদন
প্রকাশ: ০৮ ফেব্রুয়ারি ২০২৫, ০৬:১৬ পিএম
![বরখাস্ত আদেশ প্রত্যাহার না করলে কর্মবিরতির হুঁশিয়ারি](https://cdn.jugantor.com/assets/news_photos/2025/02/08/Cadre-23-y-67a74b899f4c6.jpg)
প্রশাসন ক্যাডার কর্তৃক পক্ষপাতিত্বপূর্ণ ও বৈষম্যমূলকভাবে সাময়িক বরখাস্ত এবং জনপ্রশাসন সংস্কার কমিশনের রিপোর্টের প্রতিবাদ জানিয়েছে আন্তঃক্যাডার বৈষম্য নিরসন পরিষদ।
শনিবার রাজধানীর সেগুনবাগিচাস্থ ঢাকা রিপোর্টার্স ইউনিটিতে এক সংবাদ সম্মেলনে এ প্রতিবাদ জানায় সংগঠনটি।
সম্মেলন থেকে বলা হয়, সম্প্রতি প্রশাসন ক্যাডার অ্যাসোসিয়েশন ঢাকাতে সমাবেশের আয়োজন করে জনপ্রশাসন সংস্কার কমিশনকে আলটিমেটাম দেয় এবং সে সময়ে ও পরবর্তী তারা অন্য ক্যাডারের সদস্যদের উদ্দেশ্যে বিভিন্ন ধরনের কটূক্তি করেন। এর পূর্বে জনপ্রশাসন মন্ত্রণালয়ে ঘেরাও করে বিশৃঙ্খলা সৃষ্টি করেন। তার প্রেক্ষিতে সোশ্যাল মিডিয়ায় পরিষদের অন্তর্ভুক্ত ২৫টি ক্যাডারের সদস্যদের সঙ্গে প্রশাসন ক্যাডারের সদস্যদের পালটাপালটি বক্তব্য শুরু হয়।
গভীর উদ্বেগের
সঙ্গে লক্ষ্য করা যাচ্ছে, বিভিন্ন মন্ত্রণালয়াধীন দপ্তর/সংস্থায় কর্মরত আন্তঃক্যাডার
বৈষম্য নিরসন পরিষদের অন্তর্ভুক্ত বিসিএস ক্যাডার কর্মকর্তাদের সোশ্যাল মিডিয়ায় মত
প্রকাশের জন্য ঢালাওভাবে সাময়িক বরখাস্ত করা হচ্ছে। কোনো কারণ দর্শানোর নোটিশ ব্যতিরেকে
সামান্য অজুহাতে এ ধরনের প্রজ্ঞাপন জারি অত্যন্ত অনভিপ্রেত ও অনাকাঙ্ক্ষিত। আত্মপক্ষ
সমর্থনের সুযোগ না দিয়ে চাকরি থেকে সাময়িক বরখাস্ত করা মৌলিক অধিকার ও চাকুরিবিধির
পরিপন্থি। যাদের বিরুদ্ধে এ ধরনের ব্যবস্থা গ্রহণ করা হয়েছে তারা স্ব-স্ব ক্ষেত্রে
অত্যন্ত দক্ষ ও মেধাবী কর্মকর্তা। আত্মপক্ষ সমর্থনের সুযোগ না দিয়ে এভাবে বরখাস্ত করায়
পরিষদ সদস্যরা ক্ষুব্ধ হয়েছেন।
পরিষদ মনে করে,
বৈষম্যহীন বাংলাদেশ গড়া ও মত প্রকাশের স্বাধীনতার প্রত্যয় নিয়ে ছাত্রজনতার স্বতঃস্ফূর্ত
গণঅভ্যুত্থানের মাধ্যমে গঠিত হয়েছে বর্তমান অন্তর্বর্তীকালীন সরকার। এ সরকারের আমলে
মত প্রকাশের স্বাধীনতা ও অধিকার ক্ষুণ্ণ করায় পরিষদ তীব্র প্রতিবাদ জানিয়েছেন। জনবান্ধব
সিভিল সার্ভিস গঠনসহ বর্তমান সরকার যে সব সংস্কারের উদ্যোগ গ্রহণ করেছে, তা যথাযথভাবে
সম্পন্ন করতে সরকারকে সহযোগিতা করে যাচ্ছে পরিষদ। পরিষদ মনে করে, এভাবে সাময়িক বরখাস্ত
অব্যাহত থাকলে সিভিল সার্ভিসে চরম অসন্তোষ দেখা দিয়েছে, যা সরকারকে বিব্রতকর অবস্থায়
ফেলতে পারে। এমতাবস্থায়, বিভিন্ন মন্ত্রণালয় হতে ইতোমধ্যে জারিকৃত সাময়িক বরখাস্তের
আদেশসমূহ প্রত্যাহারপূর্বক অভিযোগ হতে অব্যাহতিদানের অনুরোধ জানাচ্ছি। অন্যদিকে প্রশাসন
ক্যাডারের বিরুদ্ধে একই অভিযোগ থাকলেও, সে বিষয়ে জনপ্রশাসন মন্ত্রণালয় কোনো ব্যবস্থা
গ্রহণ করেনি।
প্রশাসন ক্যাডার
কর্তৃক এরূপ অন্যায় আগ্রাসনের বিষয়ে ‘আন্তঃক্যাডার বৈষম্য নিরসন পরিষদ’ ও সংশ্লিষ্ট
ক্যাডার অ্যাসোসিয়েশনের পক্ষ থেকে বিভিন্ন মন্ত্রণালয়ের উপদেষ্টা মহোদয়সহ বিভিন্ন পর্যায়ে
অবহিত করা হয়েছে এবং এই অন্যায় আদেশ প্রত্যাহারের অনুরোধ জানানো হয়েছে।
উপদেষ্টাগণ
আমাদেরকে আশ্বস্ত করলেও এ বিষয়ে কার্যকর কোনো পদক্ষেপ গ্রহণ না করে এখনো সাময়িক বরখাস্ত
চলমান রয়েছে। এমতাবস্থায় আগামী ১ সপ্তাহের মধ্যে এসব অন্যায় বরখাস্ত আদেশ প্রত্যাহার
করা না হলে আন্তঃক্যাডার বৈষম্য নিরসন পরিষদভুক্ত সব ক্যাডার কর্মকর্তাগণ কর্মবিরতিসহ
ধারাবাহিক কর্মসূচিতে যেতে বাধ্য হবে।
এসময় আরও বলা
হয়, সেবামূলক সিভিল সার্ভিস তৈরিতে জনপ্রশাসন সংস্কার কমিশনসহ কয়েকটি কমিশনের নিকট
আমাদের সুস্পষ্ট দাবিসমূহ (১। ক্যাডার যার মন্ত্রণালয় তার ২। ডিএস পুলে কোটা বাতিল
এবং ৩। সব ক্যাডারের সমতা) উপস্থাপন করা হয়েছে। কিন্ত জনপ্রশাসন সংস্কার কমিশনের উপস্থাপিত
রিপোর্টে ২৫ ক্যাডারের দাবির প্রতিফলন ঘটেনি।
জনপ্রশাসন সংস্কার
কমিশনের রিপোর্ট পর্যালোচনায় প্রাথমিকভাবে দেখা গেছে, কিছু প্রস্তাব সংবিধান ও বিচার
বিভাগের স্বাধীনতার সঙ্গে সাংঘর্ষিক। তাছাড়া রিপোর্টের কিছু প্রস্তাব একে অপরের সঙ্গে
অসঙ্গতিপূর্ণ। কমিশনের পূর্ণাঙ্গ প্রস্তাব পেলে, খুটিনাটি যাচাই করে লিখিত প্রস্তাব
উপস্থাপন করা হবে।
লিখিত বক্তব্য
উপস্থাপন করেন আন্তঃক্যাডার বৈষম্য নিরসন পরিষদের সমন্বয়ক মো. শওকত হোসেন মোল্যা।
এ সময় উপস্থিত
ছিলেন, গণপূর্ত ক্যাডারের মো. জামিলুর রহমান, স্বাস্থ্য ক্যাডারের ডা. মোহাম্মদ নেয়ামত
হোসেন, শিক্ষা ক্যাডারের ড. মুহম্মদ মফিজুর রহমান, প্রাণিসম্পদ ক্যাডারের ড. মুহাম্মদ
আহসান হাবীব, কৃষি ক্যাডারের মো. মমিনুল হক, কৃষি ক্যাডারের ফাতেহা নূরসহ বিভিন্ন ক্যাডারের
সদস্যবৃন্দ।