ফরহাদ মজহারের মত
৩২ নম্বর ইস্যুতে যে সুযোগ নিতে পারে ভারত
![Icon](https://cdn.jugantor.com/uploads/settings/icon_2.jpg)
যুগান্তর প্রতিবেদন
প্রকাশ: ০৬ ফেব্রুয়ারি ২০২৫, ০৪:০৯ পিএম
![৩২ নম্বর ইস্যুতে যে সুযোগ নিতে পারে ভারত](https://cdn.jugantor.com/assets/news_photos/2025/02/06/1-(4)-67a48a450f0f5.jpg)
ছবি: সংগৃহীত
আওয়ামী লীগের প্রধান নেত্রী শেখ হাসিনার দেওয়া রাজনৈতিক ভাষণকে কেন্দ্র করে বুধবার গুঁড়িয়ে দেওয়া হয়েছে তার ধানমন্ডির ৩২ নম্বরের বাড়ি। বিক্ষুব্ধ জনতাকে খুব একটা বাধার সম্মুখীন হতে হয়নি। আর এই বিষয়টিকে কেন্দ্র করেই রাজনৈতিক ফন্দি আঁটতে পারে শেখ হাসিনাকে আশ্রয় দেওয়া ভারত; এমনটাই মনে করেন কবি, মানবাধিকার কর্মী ও রাজনৈতিক বিশ্লেষক ফরহাদ মজহার।
তার মতে, দিল্লি আন্তর্জাতিক মহলে প্রমাণ করার চেষ্টা করবে যে জানমাল রক্ষা করতে উপদেষ্টা সরকার ব্যর্থ। আন্তর্জাতিকভাবে ব্যাখ্যা করা হবে যে বাংলাদেশে কার্যত কোনো সরকার নাই। এটাই দিল্লী হাসিনার পক্ষে প্রতিষ্ঠা ও প্রচার করবে। এবং দিল্লি আন্তর্জাতিক সহযোগিতায় বাংলাদেশে হস্তক্ষেপের পরিকল্পনা করতে পারে বলেও ফেসবুকে লিখেছেন তিনি।
শেখ হাসিনার ৩২ নম্বরের বাড়ি ভাঙাকে ইস্যু করে ভূ-রাজনৈতিক বাস্তবতার মুখে পড়তে পারে অন্তর্বর্তী সরকার। যা নিয়ে ফরহাদ মজহার লিখেছেন, ‘নতুন ভূ-রাজনৈতিক বাস্তবতার পরিপ্রেক্ষিতে শেখ হাসিনার উদ্দেশ্যপ্রণোদিত ভাষণ বুঝতে হবে। নতুন ভূ-রাজনৈতিক সমীকরণের উপর দাঁড়িয়ে তিনি রাজনীতির যে ছক কষছেন সেদিকে আমাদের পূর্ণ মনোযোগ নিবদ্ধ রাখতে হবে।’
বিক্ষুব্ধ জনতাকে বাড়ি ভাঙতে বাধা না দেওয়া ও সেনাবাহিনীর সরে আসার সিদ্ধান্তকে সঠিক জানিয়ে ফরহাদ মজহার বলেন, ‘ছাত্র-জনতার ন্যায়সঙ্গত ক্ষোভের পরিণতি হচ্ছে ৩২ নম্বর ধুলায় মিশিয়ে দেওয়া। এটা শুরু, শেষ নয়। আমরা দেখলাম একে রক্ষা করার কোনো পদক্ষেপ সরকার গ্রহণ করে নাই। সেনাবাহিনী কিছুক্ষণের জন্যে এলেও ফিরে গেছে। জনগণের বিপরীতে সেনাবাহিনীকে দাঁড় না করাবার নীতি সঠিক।’
এরপর তিনি লিখেছেন, ‘কিন্তু আমাদের মনে রাখতে হবে দিল্লি প্রমাণ করার চেষ্টা করবে যে জানমাল রক্ষা করতে উপদেষ্টা সরকার ব্যর্থ। আন্তর্জাতিক ভাবে ব্যাখ্যা করা হবে যে বাংলাদেশে কার্যত কোনো সরকার নাই। এটাই দিল্লী হাসিনার পক্ষে প্রতিষ্ঠা ও প্রচার করবে।
দিল্লী দাবি করবে বাংলাদেশের পরিস্থিতি আঞ্চলিক নিরাপত্তার জন্য হুমকি। ফলে দিল্লী আন্তর্জাতিক সহযোগিতায় বাংলাদেশে হস্তক্ষেপের পরিকল্পনা করতে পারে।’
শেখ হাসিনার বাড়ি ভাঙাকে কেন্দ্র করে তৈরি হতে যাওয়া আন্তর্জাতিক এই রাজনীতি কীভাবে মোকাবেলা করতে পারে অন্তর্বর্তী সরকার সেটাও জানিয়েছেন এই অভিজ্ঞ রাজনৈতিক বিশ্লেষক। বলেন, ‘এই বাস্তবতা এবং সম্ভাব্য ভূরাজনৈতিক পরিস্থিতি অবশ্যই আমাদের মনে রাখতে হবে। যদি আমরা সামনের দিনে আরো গভীর সংকটে পতিত হওয়া থেকে মুক্ত থাকতে চাই তাহলে অবিলম্বে শেখ হাসিনার সংবিধান বাতিল করে পূর্ণ ক্ষমতা সম্পন্ন অন্তর্বর্তীকালীন সরকার গঠন করুন, নতুন ভাবে বাংলাদেশ গঠন করার প্রক্রিয়া শুরু করুন।’
তিনি আরও বলেন, ‘এটা পরিষ্কার ফ্যাসিস্ট সংবিধান বহাল রাখার শপথ করে আমরা আদতে ফ্যসিস্ট রাষ্ট্রব্যবস্থা কায়েম রেখেছি। এটা কিছুতেই গ্রহণযোগ্য হতে পারে না। বাড়ি ভাঙলাম অথচ শেখ হাসিনার বানানো ফ্যাসিস্ট রাষ্ট্রব্যবস্থা পুরাপুরি কায়েম রাখলাম এটা কি হয়! অতএব পরিবর্তিত ভূরাজনৈতিক বাস্তবতায় আমরা যেন কোন গভীর সংকটে না পড়ি সেজন্য এখনই আমাদের প্রস্তুতি নিতে হবে। জনগণের ক্ষোভকে আমলে নিতে শিখুন। ছাই দিয়ে আগুন নিভানো যায় না।’