সবচেয়ে কম দরিদ্র মানুষের বাস নোয়াখালীতে
![Icon](https://cdn.jugantor.com/uploads/settings/icon_2.jpg)
যুগান্তর প্রতিবেদন
প্রকাশ: ৩০ জানুয়ারি ২০২৫, ০৯:০৩ পিএম
![সবচেয়ে কম দরিদ্র মানুষের বাস নোয়াখালীতে](https://cdn.jugantor.com/assets/news_photos/2025/01/30/noakhali-679b94b993318.jpg)
দেশে দারিদ্র্যের হার ১৮ দশমিক ৭ শতাংশ থেকে বেড়ে দাঁড়িয়েছে ১৯ দশমিক ২ শতাংশে জেলা ও উপজেলার হিসাবের ভিত্তিতে (জাতীয় হিসাব)। তবে গ্রামে দারিদ্র্য কমেছে। হাউজ হোল্ড ইনকাম অ্যান্ড এক্সপেনডিচার সার্ভেতে গ্রামে দারিদ্র্য ছিল ২০ দশমিক ৫ শতাংশ, যা প্রোভাটি ম্যাপে কমে হয়েছে ২০ দশমিক ৩ শতাংশ। এদিকে শহর এলাকায় দারিদ্র্য বেড়েছে ১ দশমিক ৮ শতাংশ। আগে শহরে দারিদ্র্য ছিল ১৪ দশমিক ৭ শতাংশ, যা এখন বেড়ে হয়েছে ১৬ দশমিক ৫ শতাংশ। বাংলাদেশ পরিসংখ্যান ব্যুরোর ‘প্রোভার্টি ম্যাপ অব বাংলাদেশ ২০২২’ এর ফলাফলে এসেছে এসব তথ্য। বৃহস্পতিবার রাজধানীর শেরেবাংলা নগরে বঙ্গবন্ধু আন্তর্জাতিক সম্মেলন কেন্দ্রে এ ম্যাপ প্রকাশ অনুষ্ঠানের আয়োজন করা হয়। এটি যৌথভাবে আয়োজন করে বাংলাদেশ পরিসংখ্যান ব্যুরো (বিবিএস), বিশ্বব্যাংক এবং ওয়ার্ল্ড ফুড প্রোগ্রাম (ডব্লিউএফপি)।
দারিদ্র্য ম্যাপ প্রকাশনা অনুষ্ঠানে প্রধান অতিথি ছিলেন পরিসংখ্যান ও তথ্য ব্যবস্থাপনা বিভাগের সচিব মো. মাহবুব হোসেন। বিশেষ অতিথি ছিলেন ওয়ার্ল্ড ফুড প্রোগ্রামের ডেপুটি কান্ট্রি ডিরেক্টর সামনো লাওসন পার্সিমেন্ট, বিশ্বব্যাংকের হিউম্যান ডেভেলপমেন্ট বিভাগের ভারপ্রাপ্ত প্রোগ্রাম লিডার এস আমের আহমেদ। বাংলাদেশ পরিসংখ্যান ব্যুরোর মহাপরিচালক মো. মিজানুর রহমানের সভাপতিত্বে মূল প্রবন্ধ উপস্থাপন করেন মহিউদ্দিন আহমেদ। প্রশ্ন-উত্তর পর্ব পরিচালনা করেন ড. দীপঙ্কর রায়।
প্রভার্টি ম্যাপে বলা হয়েছে, দারিদ্র্য সবচেয়ে বেশি বরিশাল বিভাগে ২৬ দশমিক ৬ শতাংশ আর সবচেয়ে কম চট্টগ্রাম বিভাগে দারিদ্র্য ১৫ দশমিক ২ শতাংশ। রংপুরে দারিদ্র্যের হার ২৫ শতাংশ। রাজশাহীতে ১৬ দশমিক ৩ শতাংশ, সিলেটে ১৮ দশমিক ৫ শতাংশ, ময়মনসিংহে ২২ দশমিক ৬ শতাংশ, খুলনায় ১৭ দশমিক ১ শতাংশ আর ঢাকা বিভাগে দারিদ্র্যের হার ১৯ দশমিক ৬ শতাংশ। পরিসংখ্যান ব্যুরোর তথ্য বলছে, দারিদ্র্য বেড়েছে সিলেট, রংপুর, খুলনা ও ঢাকা বিভাগে। বরিশালে দারিদ্র্যের হার বেশি হলেও তা আগের ২৬ দশমিক ৯ শতাংশের তুলনায় শূন্য দশমিক ৩ শতাংশ কমে এখন হয়েছে ২৬ দশমিক ৬ শতাংশ। হাউজ হোল্ড ইনকাম অ্যান্ড এক্সপেনডিচার সার্ভেতে ঢাকার দারিদ্র্যের হার ছিল ১৭ দশমিক ৯ শতাংশ যা প্রোভার্টি ম্যাপ অব বাংলাদেশ ২০২২ সার্ভেতে বেড়ে হয়েছে ১৯ দশমিক ৬ শতাংশ হয়েছে।
দারিদ্র্য ম্যাপে আরও দেখা যায়, দেশের সবচেয়ে দরিদ্র উপজেলা মাদারীপুরের ডাসার উপজেলা ৬৩ দশমিক ২ শতাংশ। ২০১০ সালের সার্ভেতে এ উপজেলার দারিদ্র্যের হার ছিল ৪৬ দশমিক ৬ শতাংশ। ঢাকার পল্টনে দারিদ্র্যের হার সবচেয়ে কম ১ শতাংশ। এছাড়া নোয়াখালীতে সবচেয়ে গরিব কম বসবাস করে। এ জেলায় দারিদ্র্যের হার ৬ দশমিক ১ শতাংশ।
ঢাকার অন্যান্য এলাকার মধ্যে সবচেয়ে গরিব মানুষ বসবাস করেন কামরাঙ্গীরচরে ১৯ দশমিক ১ শতাংশ। আদাবরে ৯ দশমিক ৮ শতাংশ, বাড্ডায় ৭ দশমিক ৪ শতাংশ, বনানীতে ১১ দশমিক ৩ শতাংশ এবং ধানমন্ডি এলাকায় দারিদ্র্যের হার ১ দশমিক ৫ শতাংশ। এছাড়া গুলশানে ৩ দশমিক ২ শতাংশ, মিরপুরে ১২ দশমিক ৯, মোহাম্মদপুরে ৪ দশমিক ৬ এবং রামপুরায় দারিদ্র্যের হার ৬ দশমিক ৩ শতাংশ।
প্রধান অতিথির বক্তব্যে পরিসংখ্যান ও তথ্য ব্যবস্থাপনা বিভাগের সচিব বলেন, এই ম্যাপটি অত্যন্ত গুরুত্বপূর্ণ। কেননা সরকারের নীতিনির্ধারণের ক্ষেত্রে এটি ইতিবাচক ভ‚মিকা রাখবে। এছাড়া দেশের কোন এলাকায় দারিদ্র্যের অবস্থা কেমন তা ম্যাপটি দেখলেই বোঝা যাবে। সহজেই দরিদ্র পকেটগুলোতে সরকার দুর্যোগসহ নানা সময় সহায়তা বাড়িয়ে দিতে পারবে।
বিশেষ অতিথির বক্তব্যে ওয়ার্ল্ড ফুড প্রোগ্রামের ডেপুটি কান্ট্রি ডিরেক্টর বলেন, দেশের দারিদ্র্য অবস্থার প্রকৃত চিত্র জানা থাকলে সরকার সহজেই নীতিনির্ধারণ করতে পারবে। এতে খাদ্য নিরাপত্তা নিশ্চিত করে অপুষ্টির হার থেকে বিপুলসংখ্যক জনগণকে রক্ষায় সহজেই উদ্যোগ নেওয়া সম্ভব হবে। এ কারণে ডব্লিউএফপি সহায়তা দিয়েছে এই ম্যাপ তৈরিতে।
সভাপতির বক্তব্যে বিবিএসের মহাপরিচালক বলেন, এ ধরনের ম্যাপ কার্যকর ভূমিকা রাখবে। এতে যেভাবে পুঙ্খানুপুঙ্খ তথ্য উঠে এসেছে সেটি নীতিনির্ধারণী পর্যায়ে কাজে লাগবে।