কার্নিশে ঝুলে থাকা তরুণকে গুলি করা সেই এএসআইকে ট্রাইব্যুনালে হাজির করা হবে আজ
যুগান্তর প্রতিবেদন
প্রকাশ: ২৮ জানুয়ারি ২০২৫, ০১:৩৯ এএম
ছাত্র-জনতার আন্দোলন চলাকালে রাজধানীর রামপুরায় একটি ভবনের ছাদের কার্নিশে ঝুলে থাকা এক তরুণকে গুলির ঘটনায় গ্রেফতার এএসআই (সহকারী উপ-পরিদর্শক) চঞ্চল চন্দ্র সরকারকে মঙ্গলবার আন্তর্জাতিক অপরাধ ট্রাইব্যুনালে হাজির করা হবে।
এর আগে রোববার রাতে খাগড়াছড়ির দীঘিনালা থেকে তাকে গ্রেফতার করা হয়। পরে সোমবার ঢাকায় এনে ধানমন্ডি থানা হেফাজতে রাখা হয়েছে এএসআই চঞ্চলকে।
ট্রাইবুনালের প্রসিকিউটর (সহকারী অ্যাটর্নি জেনারেল) তানভীর হাসান জোহা যুগান্তরকে এসব তথ্য জানান।
তিনি বলেন, ভবনের কার্নিশে ঝুলে থাকা এক তরুণকে গুলি করা হয়। ছয় রাউন্ড গুলি লাগে তার শরীরে। আমরা ওই জায়গাটাতে টাওয়ার টার্ম টেকনোলজি ব্যবহার করেছি। ওখান থেকে আমরা ১৭টি ফোন নম্বর পেয়েছি। তারা অনেকে অনেক জায়গাতে চলে গেছে। এগুলো পুলিশের নম্বর কিনা বোঝার উপায় নেই। পুলিশের সব নথিপত্র পুড়িয়ে দিয়েছে। কে কোথায় ছিল তার কোনো চিহ্ন নেই। তবে আমরা লেগে থেকে আইএমইআই নম্বরের মাধ্যমে তিন জনের সন্ধান পেয়েছি। তাদের মধ্যে গ্রেফতার এএসআই চঞ্চল প্রাথমিক জিজ্ঞাসবাদে ঘটনার সঙ্গে জড়িত থাকার দায় স্বীকারও করেছে। তাকে নিয়ে সোমবার ভোরে খাগড়াছড়ি থেকে ঢাকার উদ্দেশ্যে রওনা হয় পুলিশ। পরে ধামন্ডি থানায় রাখা হয়েছে। মঙ্গলবার ট্রাইব্যুনালে হাজির করা হবে।
তিনি আরও বলেন, ওই ঘটনায় যারা যারা ফায়ার করেছে তারা সবাই অটোমেটিক আইডেন্টিফাই হয়ে যাবে। যতই এভিডেন্স লুকানো হোক না কেন।
উল্লেখ্য, এএসআই চঞ্চলকে আন্তর্জাতিক অপরাধ ট্রাইব্যুনালের সহকারী অ্যাটর্নি জেনারেল তানভীর হাসান জোহার নেতৃত্বে অভিযান চালিয়ে গ্রেফতার করা হয়। এ সময় তাদের সঙ্গে ছিল ঢাকা থেকে আসা পুলিশের একটি বিশেষ ইউনিট।
জুলাই আন্দোলন চলাকালে ১৯ জুলাই বিকাল ৩টার দিকে রাজধানীর বনশ্রীতে হোটেলে কাজ করে বাসায় ফিরছিলেন আমির হোসেন। রামপুরার মেরাদিয়া সড়কের দুই পাশে পুলিশ ও বিজিবির গাড়ি দেখে ভয়ে পেয়ে যান তিনি। একপর্যায়ে পাশে থাকা নির্মাণাধীন চার তলা একটি ভবনের ছাদে উঠে পড়েন আমির। তার পিছু পিছু পুলিশও যায়। একপর্যায়ে প্রাণ বাঁচাতে রড ধরে ঝুলতে থাকেন আমির। এক পর্যায়ে পুলিশ সদস্যরা তাকে দেখেই গুলি করা শুরু করেন। আর নিচে লাফ দিতে বলেন। এরপর আরেকজন পুলিশ তিন তলায় গিয়ে ৬টা গুলি করেন, সেই গুলি তার দুই পা ও উরুতে লাগে। সবগুলো গুলি এক জায়গা দিয়ে ঢুকে অন্য জায়গা দিয়ে বের হয়ে যায়। এরপর তিনি তিন তলায় পড়ে যান। তার চিৎকার শুনে চার-পাঁচজন লোক এসে তাকে উদ্ধার করে বনশ্রীর ফেমাস হাসপাতালে নিয়ে যান। সেখানে ব্যান্ডেজ ও রক্ত বন্ধ করার পর রাত ১টার দিকে তাকে ঢাকা মেডিকেলে নিয়ে যাওয়া হয়। হাসপাতাল থেকে চিকিৎসা নিয়ে মেরাদিয়ার বাসায় ফেরেন আমির হোসেন।