Logo
Logo
×

জাতীয়

ছাত্ররা রাজনীতি করবে না এ ধরনের ননসেন্স কথা বলবেন না: ফরহাদ মজহার

Icon

কক্সবাজার প্রতিনিধি

প্রকাশ: ২৪ জানুয়ারি ২০২৫, ১১:১৭ পিএম

ছাত্ররা রাজনীতি করবে না এ ধরনের ননসেন্স কথা বলবেন না: ফরহাদ মজহার

কবি ও চিন্তক ফরহাদ মজহার বলেছেন, ছাত্ররা রাজনীতি করবে না— এ ধরনের ননসেন্স কথা বলবেন না।

শুক্রবার বিকালে কক্সবাজার পাবলিক লাইব্রেরির শহিদ সুভাষ হলে অনুষ্ঠিত ’গণ সার্বভৌমত্ব ও নতুন রাজনৈতিক জনগোষ্ঠী গঠন: প্রেক্ষাপট বঙ্গোপসাগরের ভূরাজনীতি’ শীর্ষক মুক্ত সেমিনারে প্রধান বক্তা হিসেবে তিনি এ মন্তব্য করেন।

ফরহাদ মজহার বলেন, ৭২-এর সংবিধান মুক্তিযুদ্ধের বিরোধী। এতে সমাজতন্ত্র ও জাতীয়তাবাদকে ফ্যাসিস্ট হিসেবে উল্লেখ করা হয়েছে। গণতন্ত্র মানেই ধর্মনিরপেক্ষতা নয়। দিল্লির পক্ষে ইসলাম নির্মূলের উদ্দেশ্যে এই সংবিধান রচিত হয়েছিল।

তিনি আরও বলেন, ৭২-এর সংবিধান বাতিল করতে হবে। এটি বাতিল করা মানে মুক্তিযুদ্ধকে পুনঃপ্রতিষ্ঠা করা। ৭২-এর সংবিধানের পক্ষে যারা, তারা দিল্লির পক্ষের। আর যারা বিরোধী, তারা মুক্তিযুদ্ধের পক্ষে।

বিএনপিকে উদ্দেশ্য করে ফরহাদ মজহার বলেন, আপনারা জিয়াউর রহমানের বিরোধী রাজনীতি করছেন। যারা সত্যিকারের বিএনপি, তারা দিল্লির দালাল নয়। আপনাদের উচিত সংবিধান বাতিলের দাবি তোলা।

তিনি আরও বলেন, এই গণঅভ্যুত্থান সফল হতো না যদি খালেদা জিয়া নির্বাচন করবেন—এই নীতিতে অটল না থাকতেন। বিএনপি যদি খালেদা জিয়াকে সম্মান করে, তবে আজ ছাত্রদের সঙ্গে এসে দাঁড়ানো উচিত।

ফরহাদ মজহার বলেন, সেনাবাহিনী এখন রেফারির ভূমিকা পালন করছে। কারণ, ১/১১ এর অভিজ্ঞতা ছিল খুবই খারাপ। সেনাবাহিনী পুলিশের কাজ করতে চায় না; তারা ব্যারাকে ফিরতে চায়।

তিনি আরও বলেন, দেশের প্রকৃত শাসনক্ষমতা এখন আমলাদের হাতে। শেখ হাসিনার সবচেয়ে প্রিয় ছিল আমলারা। গণসার্বভৌমত্ব প্রতিষ্ঠা না করলে আমলাতন্ত্র ভাঙা সম্ভব নয়।

জাতীয় নাগরিক কমিটির যুগ্ম আহ্বায়ক সারোয়ার তুষার বলেন, আওয়ামী লীগ, দিল্লি ও বিএনপির বক্তব্য এখন এক হয়ে গেছে। দিল্লি ছয় মাস আগেও বাংলাদেশে নির্বাচন চায়নি। অথচ এখন তারা নির্বাচনের জন্য উতলা। দিল্লি কোনোভাবেই এখানে গণতন্ত্র চায় না।

তিনি আরও বলেন, বিএনপি এমন এক ফাঁদে পা দিচ্ছে- যার পরিণতি তারা এখনও বুঝতে পারছে না। দিল্লির অন্তরে আওয়ামী লীগ, মুখে বিএনপি। এটি বিএনপিকে বুঝতে হবে।

কক্সবাজার কমিউনিটি এলায়েন্সের সংগঠক মুহিব্বুল মুক্তাদিল তানিম বলেন, বাংলাদেশ কেবল নদীমাতৃক নয়, এটি সমুদ্রতীরবর্তী দেশও। বঙ্গোপসাগরের নাম যে দেশের নামে, সেই দেশ এক সময় সমুদ্রযাত্রায় অগ্রণী ভূমিকা পালন করেছিল। আজ আমরা সমুদ্রযাত্রায় অগ্রণী ভূমিকা রাখা মানুষের অধিকার ও ন্যায্যতার কথা বলছি।

জাতীয় নাগরিক কমিটির সদস্য এসএম সুজা উদ্দিন বলেন, লবণ চাষিদের ন্যায্যমূল্য নিশ্চিত করতে সরকারি সুরক্ষা ও পরিকল্পনা গ্রহণ এবং আন্তর্জাতিক বাজারে প্রতিযোগিতার সক্ষমতা বৃদ্ধি করা জরুরি। সঠিক নীতিমালা, গবেষণা ও ভূরাজনৈতিক সুযোগ কাজে লাগিয়ে লবণ শিল্পকে রপ্তানিমুখী খাতে রূপান্তর করা সম্ভব, যা দেশের অর্থনীতিতে নতুন দিশা আনবে।

অনুষ্ঠানে আরও বক্তব্য রাখেন- এবি পার্টির সহসভাপতি জাহাঙ্গীর কাসেম, শহর জামায়াতে ইসলামীর সভাপতি আব্দুল্লাহ আল ফারুক,  মেজর (অব.) মো. আহমেদ ফেরদৌস, ভাব বৈঠকীর মুখ্য সংগঠক মো. রুমেল প্রমুখ।

ভাব বৈঠকীর সংগঠক জাহিন ফারুক আমিনের তত্ত্বাবধানে সেমিনারটি সঞ্চালনা করেন তাজওয়ার কাসেম। অনুষ্ঠানের আয়োজক ছিল ভাব বৈঠকী পাঠচক্র সংগঠন। সহ-আয়োজক হিসেবে ছিল কক্সবাজার কমিউনিটি এলায়েন্স এবং জাতীয় নাগরিক কমিটি, কক্সবাজার।

সেমিনারে বক্তারা দেশের গণতন্ত্র প্রতিষ্ঠা, নতুন রাজনৈতিক ধারার প্রাসঙ্গিকতা এবং জনগণের অধিকার প্রতিষ্ঠার গুরুত্ব নিয়ে আলোচনা করেন। বঙ্গোপসাগরের ভূরাজনীতি এবং লবণ শিল্পের উন্নয়নে সঠিক পরিকল্পনার প্রয়োজনীয়তাও তুলে ধরা হয়।

Jamuna Electronics

Logo

সম্পাদক : আবদুল হাই শিকদার

প্রকাশক : সালমা ইসলাম