Logo
Logo
×

জাতীয়

জুলাই শহিদ স্মৃতি ফাউন্ডেশনকে নাগরিক কমিটির চিঠি

আহত ও শহিদ পরিবারকে সহায়তা প্রক্রিয়া নিয়ে উদ্বেগ

Icon

যুগান্তর প্রতিবেদন

প্রকাশ: ২২ জানুয়ারি ২০২৫, ১০:৪০ পিএম

আহত ও শহিদ পরিবারকে সহায়তা প্রক্রিয়া নিয়ে উদ্বেগ

জুলাই গণ-অভ্যুত্থানে আহত ব্যক্তি এবং শহিদ পরিবারের সদস্যদের সহায়তা পাওয়ার প্রক্রিয়া নিয়ে উদ্বেগ প্রকাশ করেছে জাতীয় নাগরিক কমিটি। এ নিয়ে সৃষ্ট সমস্যার সমাধান করে দ্রুত সহায়তা নিশ্চিত করতে বুধবার সংগঠনের যুগ্ম-আহ্বায়ক ও দপ্তর সেল সম্পাদক মনিরা শারমিনের স্বাক্ষরিত এক চিঠি জুলাই শহিদ স্মৃতি ফাউন্ডেশনের প্রধান নির্বাহী কর্মকর্তা বরাবর দেওয়া হয়েছে। 

এতে বলা হয়েছে, আমরা জুলাই অভু্যত্থানে আহত ব্যক্তি এবং শহিদ পরিবারের সদস্যদের পক্ষ থেকে কিছু জরুরি উদ্বেগ আপনার কাছে পৌঁছে দিতে এই চিঠি। উদ্বেগগুলোর মধ্যে রয়েছে, ফাউন্ডেশনের পক্ষ থেকে আর্থিক সহায়তা লাভে বিলম্ব ও দীর্ঘসূত্রতা, সাহায্য লাভের জন্য যে আবেদন করা হয় তার ফলাফল সম্পর্কে স্পষ্টতার অভাব, ফাউন্ডেশনের কর্মকর্তাদের মধ্যে সহানুভূতি ও পেশাদারিত্বপূর্ণ মনোভাবের অভাব এবং চিকিত্সাসেবা সম্পর্কিত অসন্তুষ্টি।'

চিঠিতে বলা হয়, ‘আমরা বেশ কিছু আহত ও শহিদ পরিবারের সদস্যের কাছ থেকে জানতে পেরেছি যে, মাসের পর মাস অপেক্ষা করেও তারা আর্থিক সহায়তা পাননি। কিছু ক্ষেত্রে কোনো স্পষ্ট ব্যাখ্যা ছাড়াই আবেদনকারীদের জানানো হয়েছে যে, তাদের আবেদন কার্যকর করা যাচ্ছে না এবং আবার আবেদন করতে হবে। এই ঘটনা আহত ও শহিদ পরিবারের জন্য হয়রানির শামিল। এই বিলম্বের কারণ এবং এ সমস্যা দ্রুত সমাধান করার জন্য কী কী পদক্ষেপ গ্রহণ করবেন তা সম্পর্কে আমরা বিস্তারিত জানতে চাই।'

চিঠিতে আরও বলেন, ‘অভু্যত্থানে আহত এবং শহিদ পরিবারের সদস্যদের সঙ্গে ফাউন্ডেশনের আচরণ নিয়ে উদ্বেগ রয়েছে। অনেকে আমাদেরকে জানিয়েছেন যে, ফাউন্ডেশনের হেল্পলাইনে ফোন করে কথা বলার সময়ে বা অফিসে এসে সরাসরি যোগাযোগের সময় অশোভন ও অবজ্ঞাপূর্ণ আচরণ পেয়েছেন। এটা কখনোই কাম্য নয়। সেবাদানের সময় সহানুভূতিপূর্ণ ও শ্রদ্ধাশীল আচরণ গুরুত্বপূর্ণ। তা নিশ্চিত করতে আপনার প্রতিনিধিদের কী ধরনের প্রশিক্ষণ প্রদান করা হয়েছে এবং কী ধরনের মনিটরিং ব্যবস্থা রয়েছে তা আমরা স্পষ্টভাবে জানতে চাই। অনেক আহত ব্যক্তি জানিয়েছেন যে, তাদের এমআইএস ভেরিফিকেশন তালিকায় নেই, যার ফলে তাদের সহায়তা পাওয়ার যোগ্যতা নিয়ে বিভ্রানি্ত, দীর্ঘসূত্রতা এবং উদ্বেগ সৃষ্টি হচ্ছে। এই বৈষম্য কী কারণে ঘটছে এবং কীভাবে এগুলো সমাধান করা হবে, সে বিষয়ে স্পষ্ট ব্যাখ্যা প্রার্থনা করছি।'

চিঠিতে বলা হয়, কিছু শহিদ পরিবার এখনো আর্থিক সহায়তা পায়নি। কারণ পরিবারের কোন সদস্য কী পরিমাণে আর্থিক সহায়তা পাবেন তা নিয়ে জটিলতা আছে। এ ধরনের সমস্যা দ্রুত সমাধান করা অত্যন্ত গুরুত্বপূর্ণ; যাতে পরিবারগুলো দীর্ঘ সময় অনিশ্চয়তার মধ্যে না থাকে। আমরা জানতে চাই, ফাউন্ডেশন কীভাবে এই আইনি চ্যালেঞ্জগুলো সমাধান করছে এবং কতদিনের মধ্যে সমাধান করছে। যারা বিদেশে চিকিত্সার জন্য হাসপাতাল থেকে রেফারাল লেটার পেয়েছেন, তাদের মধ্যে অনেকেই পরবর্তী প্রক্রিয়া সম্পর্কে জানেন না এবং তাদেরকে চিকিত্সকের পরামর্শ অনুযায়ী আদেৌ বিদেশে নেওয়া হবে কি না সে বিষয়ে নিশ্চিত নন। কয়েক মাস চলে যাওয়ার পরেও অনেকের বিদেশে যাওয়া অনিশ্চিত।

এছাড়াও বেশ কিছু আহত ব্যক্তি জানিয়েছেন, যারা আর্থিক সংকটের কারণে হাসপাতালে যেতে পারছেন না বা ওষুধ কেনার টাকা নেই। আমরা জানতে চাই, এ ধরনের পরিস্থিতির জন্য ফাউন্ডেশনের কাছে কী ধরনের সহায়তার ব্যবস্থা রয়েছে এবং এসব ক্ষেত্রে সহায়তা প্রদান ও সমন্বয়ের জন্য কোনো পরিকল্পনা আছে কি না। আমরা জানি যে, ফাউন্ডেশন চ্যালেঞ্জিং পরিস্থিতিতে অত্যন্ত গুরুত্বপূর্ণ কাজ করছে এবং আমরা আপনাদের ভূমিকা গুরুত্বের সঙ্গে স্বীকার করি। তবে এই উদ্বেগগুলোর দ্রুত সমাধান করা অত্যন্ত জরুরি। যাতে আমাদের দেশের জন্য যারা এত কিছু ত্যাগ করেছেন তাদের বিশ্বাস ও প্রত্যাশা বজায় রাখা যায়। আমরা আপনার অফিসে এসে দেখা করে এই বিষয়গুলো নিয়ে বিস্তারিত আলোচনা করার সুযোগ পাব বলে আশা করছি।

 

Jamuna Electronics

Logo

সম্পাদক : আবদুল হাই শিকদার

প্রকাশক : সালমা ইসলাম