Logo
Logo
×

জাতীয়

ফের সিন্ডিকেটের কবলে বিলাসবহুল লঞ্চের টিকিট

Icon

অনিকেত মাসুদ, বরিশাল

প্রকাশ: ১০ জানুয়ারি ২০২৫, ১১:১০ এএম

ফের সিন্ডিকেটের কবলে বিলাসবহুল লঞ্চের টিকিট

ফাইল ছবি

ঢাকা-বরিশাল নৌপথে রোটেশন প্রথায় দুর্ভোগ বেড়েছে যাত্রীদের। ফের সিন্ডিকেটের কবলে বিলাসবহুল লঞ্চের টিকিট। চাহিদার চেয়ে টিকিটের জোগান কম হওয়ার সুযোগে বরিশাল নৌবন্দর এলাকায় গড়ে উঠেছে একাধিক সিন্ডিকেট।লঞ্চ কর্মকর্তা-কর্মচারীও টিকিট কালোবাজারি সঙ্গে জড়িত। এতে যাত্রীদের দুর্ভোগ বেড়েছে। শতভাগ যাত্রী সেবা নিশ্চিতে রোটেশনের বিপক্ষে থাকলেও লঞ্চ মালিকদের সঙ্গে পেরে উঠছেন না বলে জানান বিআইডব্লিউটিএর এক কর্মকর্তা। 

জানা যায়, শীতে কুয়াশায় সড়ক পথে দুর্ঘটনায় অধিক ক্ষয়ক্ষতির আশঙ্কা এড়িয়ে নির্বিঘ্নে ঢাকায় যেতে বিলাসবহুল লঞ্চের কেবিনের টিকিটের কদর বেড়েছে। চাহিদা বৃদ্ধির সুযোগে একাধিক সিন্ডিকেট সক্রিয় হয়ে টিকিট কালোবাজারিতে বিক্রিরও অভিযোগ পাওয়া গেছে।

এসব সিন্ডিকেট যাত্রীদের কাছ থেকে হাতিয়ে নিচ্ছে দেড় থেকে দুইগুণ টাকা। যাত্রী চাপ বৃদ্ধি পেলেও প্রতিদিন বরিশাল নৌবন্দর থেকে রোটেশন পদ্ধতিতে দুটি লঞ্চ চলাচল করছে।

ফলে বিআইডব্লিউটিএ এ রোটেশন প্রথার বিরুদ্ধে থাকলেও তা ভাঙতে পারছে না লঞ্চ মালিকদের শক্ত অবস্থানের কারণে। রোটেশন প্রথায় লঞ্চ কম চলাচল করার সুযোগে সিন্ডিকেট চক্র বেশ কিছু লঞ্চের কর্মকর্তা-কর্মচারীদের যোগসাজশসহ বিভিন্ন কৌশলে টিকিট কালোবাজারি করছে। তাই রোটেশন প্রথা ভেঙে চাহিদা অনুযায়ী লঞ্চ সংখ্যা বৃদ্ধির পাশাপাশি কালোবাজারিদের আইনের আওতায় আনার দাবি জানিয়েছেন ভুক্তভোগী যাত্রীরা।

তথ্য মতে, শীত মৌসুমে কুয়াশার কারণে সড়ক পথে দুর্ঘটনায় হতাহত ও ক্ষয়ক্ষতির আশঙ্কা অধিক থাকে। অন্যদিকে নৌপথের চলাচলকারী অত্যাধুনিক অধিকাংশ লঞ্চে নির্বিঘ্নে গন্তব্যে পৌঁছে যাচ্ছে যাত্রীরা। শীতজনিত দুর্ভোগ এড়ানোর পাশাপাশি নির্ধারিত সময়ের মধ্যেই গন্তব্যে পৌঁছে যাওয়ায় স্বাভাবিকভাবেই অতীতের মতো লঞ্চের কেবিনের টিকিটের চাহিদা বেড়েছে। তারপরও বর্তমানে প্রতিদিন দুটি করে লঞ্চ ঢাকার উদ্দেশে ছাড়ছে। ফলে চাহিদার চেয়ে টিকিটের জোগান কম হওয়ার সুযোগে বরিশাল নৌবন্দর এলাকায় গড়ে উঠেছে একাধিক সিন্ডিকেট। এসব সিন্ডিকেটের সদস্যরা লঞ্চের একাধিক কর্মকর্তা-কর্মচারীর সহায়তায় টিকিট কালোবাজারি করছে। কিছু লঞ্চ থেকে টিকিট কালোবাজারি করতে ব্যর্থ হয়ে নগরীর স্বনামধন্য ব্যক্তিদের পরিচয়ে অগ্রিম টিকিট বুকিং করে নিচ্ছে চক্রটি। কালোবাজারে এসব টিকিট দুই থেকে তিনগুণ বেশি টাকায় সাধারণ যাত্রীদের কাছে বিক্রির একাধিক তথ্য পাওয়া গেছে। যাত্রীদের দুর্ভোগ লাঘবে বিআইডব্লিউটিএ লঞ্চের সংখ্যা বৃদ্ধি করতে চাইলেও লঞ্চ মালিকদের রোটেশন প্রথার কারণে তা বৃদ্ধি করতে পারছে না বলে জানিয়েছেন সংশ্লিষ্টরা।

যাত্রী মজিবর মোল্লা বলেন, স্ত্রী ও সন্তান নিয়ে ঢাকায় যেতে কাউন্টারে গিয়ে দেখি কেবিনের কোনো টিকিট নেই। পরে নদীবন্দরে গিয়ে বাধ্য হয়ে এক কালোবাজারির কাছ থেকে দ্বিগুণ দামে টিকিট কিনতে হয়েছে। কাউন্টারে টিকিট না থাকারও পরও কালোবাজারিরা টিকিট কোথায় পেল তা তদন্ত করা দরকার। এরপর তাদের বিরুদ্ধে কঠোর ব্যবস্থা নিতে হবে। পাশাপাশি যাত্রী সংখ্যা বৃদ্ধির সঙ্গে সঙ্গে রোটেশন ভেঙে লঞ্চের সংখ্যাও বৃদ্ধির দাবি জানান তিনি।

প্রিন্স আওলাদ লঞ্চের বরিশাল বুকিং অফিসের কর্মকর্তা অভিজিৎ বলেন, কালোবাজারিদের ঠেকাতে আমরা সতর্ক রয়েছি। কোনো যাত্রীকে একাধিক টিকিট দেওয়ার ক্ষেত্রে আমরা যাচাই করে নিচ্ছি। নাম প্রকাশে অনিচ্ছুক একটি লঞ্চের কর্মকর্তা বলেন, চাহিদা বৃদ্ধির সঙ্গে বেশ কিছু চক্র নগরীর স্বনামধন্য ব্যক্তিদের পরিচয়ে অগ্রিম টিকিট বুকিং দিচ্ছে। সেই টিকিট ন্যায্য দামের দ্বিগুণ বিক্রির একাধিক প্রমাণ পেয়েছি। এসব বিষয়ে জানতে একাধিক লঞ্চ মালিককে ফোন করা হলেও তাদের পাওয়া যায়নি।

বরিশাল বিআইডব্লিউটিএর এক কর্মকর্তা বলেন, কেবিনের চাহিদা বেশি থাকার পরও রোটেশন প্রথার কারণে বরিশাল থেকে প্রতিদিন দুটি করে লঞ্চ ঢাকায় যাচ্ছে। শতভাগ যাত্রী সেবা নিশ্চিতে রোটেশনের বিপক্ষে থাকলেও লঞ্চ মালিকদের সঙ্গে পেরে উঠছেন না বলে জানান তিনি।

বিআইডব্লিউটিএ’র উপপরিচালক ও বরিশাল নদীবন্দর কর্মকর্তা আব্দুর রাজ্জাক বলেন, যাত্রীদের সর্বোচ্চ সেবা নিশ্চিতে আমরা অবিরতভাবে কাজ করে যাচ্ছি। টিকিট সিন্ডিকেটের তথ্য পেলে আইনানুযায়ী কঠোর ব্যবস্থা নেওয়া হবে।

Jamuna Electronics

Logo

সম্পাদক : আবদুল হাই শিকদার

প্রকাশক : সালমা ইসলাম