Logo
Logo
×

জাতীয়

রাজধানীতে সেমিনারে ভূমি সচিব

অবৈধ দখল বালুমহাল উচ্ছেদে অভিযান চলছে

Icon

যুগান্তর রিপোর্ট

প্রকাশ: ১৯ ডিসেম্বর ২০২৪, ০১:৫৯ এএম

অবৈধ দখল বালুমহাল উচ্ছেদে অভিযান চলছে

প্রতীকী ছবি।

ভূমি মন্ত্রণালয়ের সিনিয়র সচিব এএসএম সালেহ আহমেদ বলেছেন, সরকার পরিবর্তনের পর বালুমহাল ও দখল কারবারের মহোৎসব চলেছে। এখন এটা কমে এসেছে। সারা দেশে যৌথ অভিযান চলছে। বালু ও অবৈধ দখল উচ্ছেদে জোর দেয়া হয়েছে। এনিয়ে আমরা বেশ কয়েকটি মন্ত্রণালয়ের সঙ্গে বৈঠক করব। ভূমি উদ্ধারের এখনই উপযুক্ত সময় বলেও আমরা মনে করি। বুধবার তেজগাঁও ভূমি ভবনে আয়োজিত ভূমি ব্যবস্থাপনা সংস্কার বিষয়ে স্টেকহোল্ডার সেমিনারে তিনি এসব কথা বলেন। 

সেমিনারে ঝামেলামুক্ত ভূমি নাগরিক সেবা ও জনবান্ধব ভূমি সেবা নিশ্চিতকরণের লক্ষ্যে একগুচ্ছ সংস্কার পরিকল্পনার কথা তুলে ধরে ভূমি মন্ত্রণালয়। এসব পরিকল্পনা বাস্তবায়ন হলে ভূমি সেবা আরও সহজ, আধুনিক ঝামেলাহীন হবে বলে প্রত্যাশা মন্ত্রণালয়ের।

ভূমি সচিব বলেন, ভূমি নিয়ে সমস্যা অনেক। এই সমস্যা যেমন বাড়বে, সমাধানও চলতেই থাকবে। এ নিয়ে আমাদেরও হতাশা, ব্যর্থতা আছে। মানুষ যেভাবে প্রত্যাশা করে সে তুলনায় সমস্য অতি অল্প। এই অল্প সময়ে মানুষের প্রত্যাশা অনুযায়ী সফল হতে পারিনি। এখানে অনেক পক্ষ জড়িত। তবে প্রত্যেক এলাকায় ভূমি সংস্কারে আমরা একটা গাইডলাইন দিয়েছি। ক্ষমতাচ্যুত সরকারের কাজের সঙ্গে সাধারণ মানুষের কোনো জনসম্পৃক্ততা ছিল না জানিয়ে সালেহ আহমেদ বলেন, জনগণকে তাদের ন্যায্য কথা বলতে দেয়নি। সব কাজ থেকে দূরে রাখা হয়েছে। ২০২৪ বাংলাদেশের জন্য একটা মাইলফলক উল্লেখ করে তিনি বলেন, মাঠপর্যায়ের কাজগুলো নিয়ে ছাত্রসমাজের ভূমিকা রাখার ওপর গুরুত্বারোপ করা হচ্ছে।

ভূমি সংস্কার বোর্ডের চেয়ারম্যান এজেএম সালাহ উদ্দিন নাগরী বলেন, ভূমি সংস্কার বোর্ড ভূমি সংস্কারের সঙ্গে কতটা সম্পৃক্ত তা দেখা দরকার। ২৩টি বিষয়ে কাজ করে ভূমি সংস্কার বোর্ড। এর ৪টি ছাড়া বাকি ১৯টিতে খুব গভীরে গিয়ে কাজ করার সুযোগ নেই। ভূমি নিয়ে দেশে অগণিত আইন, তারপরও জটিলতা কাটছে না। প্রয়োজনে সংযোজন-বিয়োজন করে ভূমি সেবা নিশ্চিত করতে হবে। তিনি বলেন, দেশের মানুষ এখনও সিএস, আরএস, বিএস বোঝে না। বিদেশে থাকা একজন মানুষ তার সামান্য জমি বিক্রি করতে লাখ লাখ টাকা খরচ করে দেশে আসতে হয়। এর সমাধান বের করা উচিত। পাওয়ার অব অ্যাটর্নি সহজ করা দরকার। 

অতিরিক্ত সচিব এমদাদুল হক চৌধুরী বলেন, কেস ম্যানেজমেন্ট সিস্টেমের মাধ্যমে হয়রানিমুক্ত মিসকেস সেবা আমরা বাস্তবায়ন করব। সেই সঙ্গে ভূমি বিষয়ক পৃথক অভিযোগ ব্যবস্থাপনার মাধ্যমে জনগণকে মানসম্মত ভূমি সেবা প্রদানের উদ্যোগ নেওয়া হয়েছে। ভূমি সেবায় কল সেন্টার ১৬১২২ সপ্তাহে ৭ দিন ২৪ ঘণ্টা চালু আছে। তিনি আরও বলেন, দেশব্যাপী ভূমি জরিপ পরিকল্পনা তৈরি এবং বাস্তবায়ন করতে আমরা চেষ্টা করে যাচ্ছি। সেইসঙ্গে আমরা জলধারা সংস্কার ও সংরক্ষণ করব। আমাদের প্রচারণা ও প্রশিক্ষণের ঘাটতি রয়েছে, সেদিকেও নজর দিচ্ছি। প্রচারণার মাধ্যমে ভূমি সেবা আরও সহজ করব। সেই সঙ্গে ভূমি আপিল বোর্ডের বিধিমালা সংশোধনেরও উদ্যোগ নেওয়া হয়েছে। ভূমি সেবা সহজ করতে বেসরকারি আমিন, সার্ভেয়ারদের প্রশিক্ষণের ব্যবস্থা করে সহজভাবে সেবা জনগণের কাছে পৌঁছে দিতে চাই। ভূমি মন্ত্রণালয়ের অতিরিক্ত সচিব আব্দুর রউফ বলেন, স্থানীয় জমির পরিমাপকারী আমিনদের লাইসেন্স দেওয়া দরকার। এতে নাগরিক সেবা বৃদ্ধি পাবে। সরকারি আমিনের ওপর চাপ কমবে। অনুষ্ঠানে গণপূর্ত মন্ত্রণালয়ের প্রতিনিধি বলেন, ভূমি অফিসগুলো সংস্কার কাজ কারা করবে-গণপূর্ত মন্ত্রণালয় নাকি ভূমি এটা নিয়ে একটা দোটানা আছে। সংস্কার করতে ইঞ্জিনিয়ার দরকার। কিন্তু ভূমি মন্ত্রণালয়ের কোনো ইঞ্জিনিয়ার নেই। এজন্য ভূমি ভবনগুলো সংস্কারে গণপূর্তকে কাজে লাগানো উচিত। 

পার্বত্য চট্টগ্রামবিষয়ক মন্ত্রণালয়ের প্রতিনিধি বলেন, পার্বত্য এলাকার অধিকাংশ জমির রেকর্ড গেজেট হয়নি। জরিপ করতে গেলে নানা বাধা আসে, সংঘর্ষ হয়। সরকারিভাবে অধিগ্রহণ, আবাসন কাজ করতে গেলে সমস্যা হচ্ছে। এখন যেহেতু জরিপ সহজ সেহেতু তা সম্পন্ন করে ওপেন সোর্সে ছেড়ে দিলে আর সমস্যা হবে না। সেমিনারে ভূমি মন্ত্রণালয়ের বিভিন্ন মন্ত্রণালয়, সংস্থা ও অংশীজনের প্রতিনিধিরা অংশগ্রহণ করেন। অনুষ্ঠানে বিভিন্ন বিশ্ববিদ্যালয়ের ছাত্র প্রতিনিধিরাও অংশ নিয়ে তাদের মত তুলে ধরেছেন।

Jamuna Electronics

Logo

সম্পাদক : আবদুল হাই শিকদার

প্রকাশক : সালমা ইসলাম