Logo
Logo
×

জাতীয়

সুপারিশের আলোকে প্রজ্ঞাপন জারির দাবিতে সচিবালয়ে কর্মকর্তাদের অবস্থান

Icon

যুগান্তর প্রতিবেদন

প্রকাশ: ১৫ ডিসেম্বর ২০২৪, ১১:৪৬ এএম

সুপারিশের আলোকে প্রজ্ঞাপন জারির দাবিতে সচিবালয়ে কর্মকর্তাদের অবস্থান

অন্তর্বর্তী সরকারের গঠন করা কমিটির সুপারিশের আলোকে বিগত ১৭ বছর পদোন্নতিসহ নানাভাবে বঞ্চিত কর্মকর্তাদের ভূতাপেক্ষ পদোন্নতির প্রজ্ঞাপন জারির দাবিতে অবস্থান কর্মসূচি পালন করছে বৈষম্যবিরোধী  কর্মচারী ঐক্য ফোরাম।

সংগঠনের আহ্বায়ক এবিএম আবদুস সাত্তারের নেতৃত্বে তিন শতাধিক কর্মকর্তা এতে অংশ নেন। রোববার (১৫ ডিসেম্বর) সকাল ৮টা থেকে জনপ্রশাসন মন্ত্রণালয়ের সিনিয়র সচিব মো. মোখলেস উর রহমানের দপ্তরের সামনের বারান্দায় বসে পড়েন তারা। দাবি না হওয়া পর্যন্ত অবস্থান করবেন বলেও জানিয়েছেন কর্মকর্তারা।

সরেজমিনে দেখা যায়, বেলা সাড়ে ১১টার দিকে জনপ্রশাসন সচিব তাদের সঙ্গে কথা বলার জন্য দপ্তরের বাইরে বের হয়ে বঞ্চিত কর্মকর্তাদের তোপের মুখে পড়েন। বিক্ষুব্ধ বঞ্চিত কর্মকর্তাদের কেউ কেউ জনপ্রশাসন সচিবকে পদত্যাগ করতে বলেন। এ সময় উচ্চস্বরে সচিবের সঙ্গে কথা বলেন তারা।

জবাবে জনপ্রশাসন সচিব কর্মকর্তাদের বলেন, বঞ্চিত কর্মকর্তাদের ভূতাপেক্ষ পদোন্নতি দেওয়ার বিষয়ে প্রধান উপদেষ্টার দপ্তর থেকে তার কাছ থেকে কোনো ফাইল আসেনি। ওই ফাইল আসার সঙ্গে সঙ্গেই তিনি প্রয়োজনীয় প্রক্রিয়া সম্পন্ন করবেন।

এরপরও সচিবের ওপর চাড়াও হয়ে কথা বলতে থাকেন বঞ্চিত কর্মকর্তারা। পরে জনপ্রশাসন সচিব নিজের দপ্তরে ঢুকে পড়েন।

প্রসঙ্গত, ১৯৮৫ সালের বিসিএস ব্যাচের কর্মকর্তা তৌহিদুর রহমান উপসচিবের পদ থেকে অবসরে গিয়েছেন। তিনি বলেন, ‘আমি আমার ব্যাচের প্রথম ১০ জনের মধ্যে একজন ছিলাম। কিন্তু গত ১৬ বছরে আমাকে পদোন্নতি দেওয়া হয়নি। বঞ্চিত কর্মকর্তাদের ভূতাপেক্ষ পদোন্নতি দিয়ে প্রজ্ঞাপন জারি না করা পর্যন্ত আমরা জনপ্রশাসন সচিবের দপ্তরের সামনে অবস্থান করব।’

জানা যায়, বিগত আওয়ামী লীগ সরকারের আমলে অবসরে যাওয়া বঞ্চিত ৭৬৪ জন কর্মকর্তাকে ভূতাপেক্ষ পদোন্নতির সুপারিশ করে গত ১০ ডিসেম্বর প্রধান উপদেষ্টার কাছে সুপারিশ জমা দিয়েছে বঞ্চনা নিরসন কমিটি। সচিব পদে ১১৯ জন, গ্রেড-১ পদে ৪১ জন, অতিরিক্ত সচিব পদে ৫২৮ জন, যুগ্ম সচিব পদে ৭২ জন এবং উপসচিব পদে চারজন কর্মকর্তাকে ভূতাপেক্ষ পদোন্নতির সুপারিশ করা হয়েছে।

পরে নিজের দপ্তরে জনপ্রশাসন সচিব সাংবাদিকদের বলেন, ‘বঞ্চিত কর্মকর্তাদের পদমর্যাদা দিয়ে আর্থিক সুবিধা দেওয়া হবে। প্রধান উপদেষ্টার কার্যালয় থেকে এখনো এ বিষয়ে কোনো ফাইলপত্র পাঠায়নি। আমাদের এখানে ফাইল আসার পরে সেটি প্রসেস করতে একদিনের বেশি সময় নেব না।’

তবে সচিবের এ বক্তব্যেও আশ্বস্ত হতে পারেননি বঞ্চিত কর্মকর্তারা। কারণ গত ৫ আগস্ট বিগত সরকারের পতনের পর থেকে আন্দোলন করছেন বঞ্চিত এসব কর্মকর্তা। কিন্তু আশ্বাস দেওয়া হলেও চার মাসেও কোনো প্রতিফল দেখতে পাননি তারা। 

এমতাবস্থায় তাদের ভূতাপেক্ষ পদোন্নতি দিয়ে প্রজ্ঞাপন জারি না করা পর্যন্ত সচিবের দপ্তরের সামনে অবস্থান করার ঘোষণা দিয়েছেন তারা।

তাদের দাবিগুলো হলো- 

> ফ্যাসিবাদী সরকার কর্তৃক পদোন্নতি বঞ্চিত অবসরপ্রাপ্ত কর্মকর্তাদেরসহ সব স্তরের পদোন্নতি বঞ্চিত কর্মচারীদের প্রাপ্য আর্থিক সুবিধা ও জ্যেষ্ঠতাসহ ভূতাপেক্ষ পদোন্নতির ‘প্রজ্ঞাপন’ অবিলম্বে জারি করতে হবে।

 > ফ্যাসিবাদী আওয়ামী সরকার কর্তৃক নিয়োগপ্রাপ্ত সকল চুক্তিভিত্তিক নিয়োগ অবিলম্বে বাতিল করতে হবে এবং বর্তমান সরকার কর্তৃক চুক্তিভিত্তিক নিয়োগপ্রাপ্ত বির্তকিত কর্মকর্তার চুক্তিভিত্তিক নিয়োগ অবিলম্বে বাতিল করতে হবে।

> বর্তমানে কর্মরত সাবেক ফ্যাসিবাদী সরকারের দোসর, ছাত্র-জনতা হত্যায় জড়িত স্বেচ্ছাচারী, দুর্নীতিবাজ, বিভিন্ন রাজনৈতিক দলের নেতাদের নাম ভাঙিয়ে নিজেদের স্বার্থ চরিতার্থ করার কাজে লিপ্ত কর্মকর্তাকে অবিলম্বে প্রত্যাহারপূর্বক আইনের আওতায় আনতে হবে।

> দলবাজ, অদক্ষ ও সুবিধাভোগী কর্মকর্তাদের অপসারণ/অব্যাহতি প্রদান পূর্বক ৫ আগস্ট ২০২৪ তারিখের পর দীর্ঘদিনের বঞ্চিত কর্মরত যে সমস্ত কর্মকর্তা পদোন্নতি পেয়েও এখনো পদায়ন পাননি তাদের দ্রুত উপযুক্ত পদে পদায়ন করতে হবে।

> মাঠ প্রশাসনে কর্মরত বিতর্কিত জেলা প্রশাসককে প্রত্যাহার করে নিরপেক্ষ, সৎ, দক্ষ কর্মকর্তাকে পদায়ন করতে হবে। পূর্বের ফিট লিস্ট বাতিল করে স্বচ্ছ প্রক্রিয়ায় পুনরায় ফিট লিস্ট করতে হবে।

> বিগত সরকারের সময় যারা দলীয় বিবেচনায় পদোন্নতি পেয়েছে তাদের পদোন্নতি আদেশ বাতিল এবং আর্থিক সুবিধা প্রত্যাহার করতে হবে। বিদেশে ‘বেগম পাড়া’য় বাড়ি ক্রয়সহ অবৈধ সম্পদ অর্জনকারী কর্মকর্তাদের বিরুদ্ধে আইনানুগ ব্যবস্থা নিতে হবে।

Jamuna Electronics

Logo

সম্পাদক : আবদুল হাই শিকদার

প্রকাশক : সালমা ইসলাম