রিকশাচালক বেশে আন্দোলনে নিষিদ্ধ ছাত্রলীগ নেতা! ধরা পড়লেন যেভাবে
খিলক্ষেত (ঢাকা) প্রতিনিধি
প্রকাশ: ২৪ নভেম্বর ২০২৪, ০৯:২৪ পিএম
হাইকোর্টের আদেশ প্রত্যাহারসহ ১১ দফা দাবি আদায়ে গত কয়েকদিন থেকে রাজধানীর বিভিন্ন স্থানে সড়ক অবরোধ করে বিক্ষোভ ও সমাবেশ করছেন রিকশাচালকরা।
তবে এই আন্দোলনকে ভিন্নখাতে নিতে রিকশাচালকদের
বেশে নিষিদ্ধ ছাত্রলীগকর্মীরাও অংশ নিয়েছেন। শ্রমিক লীগের নেতাকর্মীদেরও এই আন্দোলনে
যোগ দেওয়ার অভিযোগ পাওয়া গেছে। তারা সবাই মাস্ক
পরে ছদ্মবেশ ধারণের চেষ্টা করেন।
রোববার রিকশাচালকদের সঙ্গে পরিচয় গোপন
করে আন্দোলনে অংশ নিলে গণমাধ্যমকর্মীদের কাছে দুজন হাতেনাতে ধরা পড়েন।
এদিকে রিকশালকের বেশে মাস্ক পরে আন্দোলনে
অংশ নেওয়া এক ছাত্রলীগ নেতার পরিচয় প্রকাশ হয়েছে। এ ঘটনার একটি ভিডিও সামাজিক যোগাযোগমাধ্যমে
ভাইরাল হয়েছে।
ভিডিওতে দেখা যাচ্ছে, আন্দোলনে অংশ নেওয়া
ওই ছাত্রলীগ নেতা নিজেকে একজন শিক্ষার্থী হিসেবে পরিচয় দিয়ে কথা বলছেন।
সাংবাদিকদের তিনি বলেন, ‘আমরা অনেক শিক্ষিত।
ছাত্রসমাজ আজকে রিকশা চালায়। লোক লজ্জার ভয়ে আমরা বলতে পারি না। আমার পাশে যিনি আছেন
তিনি তিতুমীর কলেজের ছাত্র তিনিও রিকশা চালান।
আমিও রিকশা চালাই’।
গণমাধ্যমের সঙ্গে কথা বলার একপর্যায়ে ছাত্রলীগের
ওই নেতাকে মাস্ক খুলতে বলা হয়। কিন্তু তিনি কোনোভাবেই মাস্ক খুলতে চাচ্ছিলেন না। পরে
বাধ্য হয়ে মাস্ক খুলে নিজেকে খিলক্ষেত ৪৩নং ওয়ার্ড ছাত্রলীগের সহ-সভাপতি হিসেবে পরিচয়
দেন এবং তার নাম আশরাফুল বলে জানান।
ভিডিওটি প্রকাশের পর আমাদের প্রতিনিধি
খোঁজ নিয়ে জানতে পারেন, আশরাফুল খাঁন খিলক্ষেতের ৪৩নং ওয়ার্ড ছাত্রলীগের সহ-সভাপতি।
তার বাসা খিলক্ষেতের পাতিরা পশ্চিম পাড়া। বাবার নাম জিলানি। গ্রামের বাড়ি ময়নসিংহের
শেরপুরের গজনী এলাকায়। তিনি আমিরজান কলেজের ছাত্র ছিলেন।
স্থানীয় ছাত্রলীগের একটি সূত্র যুগান্তরকে
জানায়, আশরাফুলের বাড়ি শেরপুরে। এখানে ভাড়া থাকলেও তিনি কৌশলে ছাত্রলীগের পদ বাগিয়ে নিয়েছেন।
আরেকটি ভিডিওতে রিকশাচালকদের আন্দোলনে
অনেক শ্রমিক লীগের নেতাকর্মীকেও দেখা গেছে। তারা সবাই মাস্ক পরেছিলেন। গণমাধ্যমকর্মীদের
দেখা মাত্রই তারা আড়ালে চলে যাওয়ার চেষ্টা করেন।
এ সময় তাদের পরিচয় জানতে চাইলে আন্দোলনে
অংশ নেওয়া একজন বলেন, আমরা শ্রমিক লীগ। শ্রমিকদের
দাবি আদায়ে আন্দোলনে এসেছি।
ঘটনাস্থলে থাকা রাইহান নামের এক সাংবাদিক
বলেন, রিকশাচালকদের চেহারা দেখলেই বোঝা যায়।
প্রথম চেহারা দেখে সন্দেহ হয়। পরে তাদের পরিচয় জানতে চাইলে আড়ালে চলে যায়। বক্তব্য
নেওয়ার জন্য মাস্ক খুলতে বললেও তারা কেউ খুলতে রাজি হননি। এতে আরও বেশি সন্দেহ হয়।