রিমান্ড শেষে কারাগারে সাবেক মেয়র আতিকসহ দুই পুলিশ কর্মকর্তা
যুগান্তর প্রতিবেদন
প্রকাশ: ২২ নভেম্বর ২০২৪, ০৭:৫৯ পিএম
ছবি: সংগৃহীত
রিমান্ড শেষে ঢাকা উত্তর সিটি করপোরেশনের সাবেক মেয়র আতিকুল ইসলামকে কারাগারে পাঠিয়েছেন আদালত। পাশাপাশি পুলিশের সাবেক কর্মকর্তা আলেপ উদ্দিন ও র্যাবের সাবেক কর্মকর্তা মহিউদ্দিন ফারুকীকে কারাগারে পাঠানো হয়েছে।
শুক্রবার পৃথক দুইটি মেট্রোপলিটন ম্যাজিস্ট্রেট আদালত এ আদেশ দেন।
এদিন পাঁচ দিনের রিমান্ড শেষে আতিককে আদালতে হাজির করে কারাগারে আটক রাখার আবেদন করেন তদন্ত কর্মকর্তা উত্তরা জোনাল টিমের পরিদর্শক মাহমুদুর রহমান। শুনানি শেষে ঢাকা মেট্রোপলিটন ম্যাজিস্ট্রেট মেহেদী হাসান তাকে কারাগারে পাঠানোর আদেশ দেন।
কারাগারে আটক রাখার আবেদনে বলা হয়, এ আসামিকে রিমান্ডে নিয়ে জিজ্ঞাসাবাদে মামলার ঘটনার বিষয়ে গুরুত্বপূর্ণ তথ্য পাওয়া গেছে, যা যাচাই-বাছাই প্রক্রিয়াধীন। প্রাথমিক তদন্তে জানা যায়, আতিকুল ইসলাম ঢাকা মহানগর উত্তর আওয়ামী লীগের উপদেষ্টা এবং ফ্যাসিস্ট সরকারের সমর্থনপুষ্ট ঢাকা মহানগর উত্তর সিটি করপোরেশনের সাবেক মেয়র ছিলেন। ঘটনার দিন ১৭ জুলাই এ আসামির নির্দেশে তার অধীনস্থ স্থানীয় ওয়ার্ড কাউন্সিলদের নেতৃত্বে অন্যান্য আসামিরা পরস্পর যোগসাজশে দেশীয় অস্ত্রশস্ত্রে সজ্জিত হয়ে ছাত্র-জনতার মিছিল বানচালের চেষ্টায় শান্তিপূর্ণ মিছিলে আন্দোলন চালিয়ে আসামিদের কাছে থাকা বৈধ-অবৈধ আগ্নেয়াস্ত্র দিয়ে এলোপাতাড়ি গুলি চালিয়েছে মর্মে প্রাথমিক তদন্তে তথ্য প্রমাণাদি পাওয়া গেছে। মামলার তদন্ত চলমান। এ অবস্থায় জামিন না দিয়ে তাকে কারাগারে আটক রাখার আবেদন করেন তদন্ত কর্মকর্তা।
পরে আদালত তাকে কারাগারে পাঠানোর আদেশ দেন।
গত ১৬ অক্টোবর রাতে রাজধানীর মহাখালী ডিওএইচএস এলাকা থেকে আতিককে গ্রেফতার করে মোহাম্মদপুর থানা পুলিশ। পরদিন মোহাম্মদপুর থানার পৃথক তিন হত্যা মামলায় জামিন নামঞ্জুর করে তাকে কারাগারে পাঠান আদালত।
এরপর বকুল মিয়া হত্যা মামলায় গত ১৩ নভেম্বর তার পাঁচ দিনের রিমান্ড মঞ্জুর করেন আদালত।এ মামলার অভিযোগ থেকে জানা যায়, বৈষম্যবিরোধী ছাত্র আন্দোলন চলাকালে ১৭ জুলাই উত্তরা পূর্ব থানাধীন আজমপুর বাসস্ট্যান্ডে বকুল মিয়া নামে এক ব্যক্তি গুলিবিদ্ধ হন। ১৯ জুলাই রাতে চিকিৎসাধীন অবস্থায় মারা যান বকুল মিয়া। এ ঘটনায় তার স্ত্রী মোছা. মনিকা আক্তার উত্তরা পূর্ব থানায় মামলা করেন।
পুলিশ কর্মকর্তা মহিউদ্দিন ফারুকী ও আলেপ উদ্দিন কারাগারে
এদিকে বৈষম্যবিরোধী ছাত্র আন্দোলনে রাজধানীর শনির আখড়ায় জোবায়ের ওমর খানের মৃত্যুর মামলায় রাঙ্গামাটি ট্রেনিং সেন্টারের সাবেক পুলিশ সুপার (এসপি) মহিউদ্দিন ফারুকী ও বরিশাল রেঞ্জের অতিরিক্ত পুলিশ সুপার আলেপ উদ্দিনকে কারাগারে পাঠানো হয়েছে।
ঢাকার মেট্রোপলিটন ম্যাজিস্ট্রেট বেগম আফনান সুমি তাদের কারাগারে পাঠানোর আদেশ দেন।
এদিন রিমান্ড শেষে তাদের আদালতে হাজির করা হয়। এরপর মামলার তদন্ত কর্মকর্তা যাত্রাবাড়ী থানার উপ-পরিদর্শক (এসআই) রাসেল সরদার কারাগারে পাঠানোর আবেদন করেন।জামিন চেয়ে আবেদন করেন আসামিপক্ষের আইনজীবীরা। উভয়পক্ষের শুনানি শেষে আদালত কারাগারে পাঠানোর আদেশ দেন।
গত ১৩ নভেম্বর রাতে বরিশাল মহানগর এলাকা থেকে আলেপ উদ্দিনকে গ্রেফতার করে বরিশাল ডিবি পুলিশ।পরের দিন তার দুই দিনের রিমান্ড মঞ্জুর করেন আদালত।
এদিকে ১৩ নভেম্বর মহিউদ্দিন ফারুকীর দুই দিনের রিমান্ড মঞ্জুর করেন আদালত। ওই দিন ভোরে রাঙ্গামাটি জেলার কাউখালী (বেতবুনিয়া) এলাকা থেকে মহিউদ্দিন ফারুকীকে গ্রেফতার করা হয়।
মামলার সূত্রে জানা গেছে, বৈষম্যবিরোধী ছাত্র আন্দোলনের সময় ৫ আগস্ট দুপুরে যাত্রাবাড়ীর শনিরআখড়া এলাকায় জোবায়ের ওমর খান গুলিবিদ্ধ হন।পরে তাকে স্যার সলিমুল্লাহ মেডিকেল কলেজ হাসপাতালে (মিটফোর্ট) নিয়ে গেলে কর্তব্যরত চিকিৎসক মৃত ঘোষণা করেন। এ ঘটনায় মামলা করেন জোবায়ের ভাই।