উপদেষ্টা মোস্তফা সরয়ার ফারুকী
‘মুক্তিযুদ্ধের চেতনা’ বলে বলে শব্দটিকে শেষ করে ফেলা হয়েছে
যুগান্তর প্রতিবেদন
প্রকাশ: ২১ নভেম্বর ২০২৪, ০৭:২৪ পিএম
১৯৭১ সালের মুক্তিযুদ্ধের নবায়ন ২০২৪ সালের ছাত্র-জনতার অভ্যুত্থানের মাধ্যমে হয়েছে বলে মন্তব্য করেছেন সংস্কৃতি উপদেষ্টা মোস্তফা সরয়ার ফারুকী।
বৃহস্পতিবার সচিবালয়ে নিজ দপ্তরে আয়োজিত এক সংবাদ সম্মেলনে ফারুকী এ মন্তব্য করেন। সংস্কৃতিবিষয়ক মন্ত্রণালয়ের সাতটি অগ্রাধিকার কার্যক্রম তুলে ধরতে এ সংবাদ সম্মেলন করা হয়।
সংস্কৃতি উপদেষ্টা বলেন, মুক্তিযুদ্ধের চেতনা বলে বলে শব্দটিকে শেষ করে ফেলা হয়েছে। স্বাধীনতার আসল চেতনা ছিল ‘আমি আমার মতো করে দেশটাকে গড়ব’। কিন্তু দুঃখজনক সত্য হলো, এটা ঘটেনি। এ কারণে ২০২৪ সালে অভ্যুত্থান হয়েছে।
ফারুকী বলেন, ২৪-এ বিপ্লব কেন হয়েছে? কারণ, স্বাধীনতার আসল চেতনা বাস্তবায়ন হয়নি। সাবেক পররাষ্ট্রমন্ত্রী এ কে আব্দুল মোমেন ভারত থেকে এসে বলেছিলেন, তিনি মোদি সরকারকে বলেছেন, আওয়ামী লীগ সরকারকে আবার ক্ষমতায় আনার জন্য। তার এমন কথা পুরোপুরি সার্কাস।
চলতি বছরের মধ্যে সংস্কৃতিবিষয়ক মন্ত্রণালয় ‘রিমেম্বারিং মনসুন রেভল্যুশন’ বাস্তবায়ন করবে বলে জানান উপদেষ্টা ফারুকী। তিনি বলেন, এই কার্যক্রমে বাংলাদেশের আট শীর্ষ নির্মাতা আট বিভাগে জুলাই অভ্যুত্থান নিয়ে আটটি ‘ভিজ্যুয়াল কনটেন্ট মেকিং’ কর্মশালা আয়োজন করবেন। এ ছাড়া জাতীয় কবি কাজী নজরুল ইসলামের গান নিয়ে তরুণদের জন্য জনপ্রিয় শীর্ষস্থানীয় শিল্পীদের একটি অ্যালবাম তৈরি করা হবে। দেশজুড়ে তারুণ্যের উৎসবে অংশ নেবে সংস্কৃতি মন্ত্রণালয়। তরুণ-তরুণীদের মধ্যে সাংস্কৃতিক জাগরণ সৃষ্টির লক্ষ্যে দেশব্যাপী প্রতিভা সন্ধান কর্মসূচি পালন করা হবে। বাংলা একাডেমি লেখকদের জন্য সৃজনশীল লেখালেখি কর্মশালার আয়োজন করবে।
সংবাদ সম্মেলনের শুরুতে বক্তব্য দেন কবি নজরুল ইনস্টিটিউটের নির্বাহী পরিচালক মো. লতিফুল ইসলাম শিবলী। তিনি বলেন, গত ১৫ বছরে রবীন্দ্রনাথ ঠাকুর ও বঙ্গবন্ধু—এই দুজনকে দেবতার রূপ দেওয়া হয়েছিল। তাদের মানুষের পর্যায় থেকে দেবতার কাতারে নিয়ে যাওয়া হয়েছিল। তাদের আবার মানুষের কাতারে নিয়ে আসা হবে।
কবি নজরুলকে নিয়ে কোনো কাজই করা হয়নি বলে অভিযোগ করেন লতিফুল ইসলাম। তিনি বলেন, কবি নজরুলকে নিয়ে ভবিষ্যতে প্রান্তিক পর্যায় পর্যন্ত অনুষ্ঠান করা হবে। কুয়াকাটায় নজরুল মঞ্চ করা হবে। রাজধানীর রবীন্দ্রসরোবরের অন্য পাশে বিদ্রোহী চত্বর করা হবে।
বিগত সরকার যা করেছে, বর্তমান সরকারও কি একই পথে হাঁটছে, সাংবাদিকের এমন প্রশ্নে বাংলাদেশ শিল্পকলা একাডেমির মহাপরিচালক সৈয়দ জামিল আহমেদ বলেন, বঙ্গবন্ধু ও রবীন্দ্রনাথকে ‘হিরো’ বানাতে গিয়ে অন্যদের অস্বীকার করা হয়েছে। গত ১৫ বছরে বঙ্গবন্ধু ও রবীন্দ্রনাথকে নিয়ে সব অনুষ্ঠান করা হয়েছে। অন্যদের স্বীকৃতি দেওয়া হয়নি। যার যা অবদান, এবার সবাইকে তার স্বীকৃতি দেওয়া হবে।