প্রেস ব্রিফিংয়ে স্বাস্থ্য মন্ত্রণালয়ের বিশেষ সহকারী
আন্দোলনে আহতদের বিনামূল্যে ফাস্ট ট্র্যাক চিকিৎসা দেওয়ার নির্দেশ
যুগান্তর প্রতিবেদন
প্রকাশ: ২১ নভেম্বর ২০২৪, ০৬:৩২ পিএম
স্বাস্থ্য ও পরিবার কল্যাণ মন্ত্রণালয়ের বিশেষ সহকারী অধ্যাপক ডা. মো. সায়েদুর রহমান বলেছেন, আপনারা আগের দিনেও শুনেছেন, বাংলাদেশে বৈষমবিরোধী আন্দোলনে যারা আহত হয়েছেন তাদের সম্পূর্ণ বিনামূল্যে ফাস্ট ট্র্যাক চিকিৎসা সেবা দেওয়া হবে। দেশের সমগ্র হাসপাতালে এই নির্দেশনা দেওয়া হচ্ছে। সরকারি সমস্ত হাসপাতালে আহতরা সব ধরনের চিকিৎসা আজীবন বিনামূল্যে পাবেন।
বৃহস্পতিবার (২১ নভেম্বর) বেলা ১টায় জুলাই শহিদ স্মৃতি ফাউন্ডেশন ও স্বাস্থ্য মন্ত্রণালয়ের উদ্যোগে জুলাই শহিদ স্মৃতি ফাউন্ডেশন কার্যালয়ের সামনে জুলাই-আগষ্ট বিপ্লবে শহিদ ও আহত ছাত্রজনতার চিকিৎসা, পুনর্বাসন ও কর্মসংস্থান বিষয়ে সরকারের পরিকল্পনা নিয়ে অনুষ্ঠিত এক প্রেস ব্রিফিংয়ে তিনি এসব কথা বলেন।
ডা. সায়েদুর রহমান আরও বলেন, এছাড়া বিএসএমএমইউ হাসপাতালের কেবিন ব্লক মাল্টি ডিসিপ্লিনারি হাসপাতাল হিসেবে গ্রহণ করা হয়েছে। আহতদের যারা ঢাকার বিভিন্ন হাসপাতালে ছড়িয়ে ছিটিয়ে আছেন, তাদের স্ক্রিনিংয়ের মাধ্যমে প্রয়োজন অনুযায়ী বিএসএসএমইউর কেবিন ব্লকে যোগাযোগের অনুরোধ করা হচ্ছে। বিএসএমএমইউর স্পেশালাইজড হাসপাতালের নিচের তলাটি সম্পূর্ণ ডেডিকেটেড করা হয়েছে আহতদের আউট পেশেন্ট সার্ভিসের জন্য। পর্যায়ক্রমে সেখানে ফিজিওথেরাপি সেবা যুক্ত করা হবে।
তিনি আরও বলেন, এছাড়া সরকার উদ্যোগ নিচ্ছে রোবটিক্স ফিজিওথেরাপির জন্য। এজন্য যে সব যন্ত্রপাতি আছে তা বিএসএমএমইউ বা অন্য যেখানে সুবিধা হয় স্থাপন করা হবে। এই সেবা দেওয়ার জন্য প্রয়োজনে প্রাথমিক পর্যায়ে বিদেশ থেকে বিশেষজ্ঞ দল আনা হবে। দেশের সমগ্র হাসপাতাল ও বিশেষায়িত হাসপাতালগুলোকে একটি নেটওয়ার্কের আওতায় আনা হবে। আহতদের জন্য বিভাগীয় হাসপাতাল এবং বিশেষায়িত হাসপাতালগুলোতে ডেডিকেটেড বেড থাকবে এবং আহতরা ড্যাশবোর্ডে সহজেই দেখতে পারবেন কোথায় কোন সেবাটা পাওয়া যাবে। যারা চোখেও গুলিবিদ্ধ হয়েছেন তাদের চিকিৎসার জন্য বিদেশ থেকে বিশেষজ্ঞ ডাক্তার আনা হচ্ছে এবং যদি প্রয়োজন হয়, উন্নত চিকিৎসার জন্য বিশেষজ্ঞদের পরামর্শ অনুযায়ী বিদেশে সুনির্দিষ্ট হাসপাতালে আহতদের পাঠানো হচ্ছে। আপনার ইতোমধ্যে জেনেছেন বাংলাদেশ থেকে বেশ কয়েকজনকে বিদেশ পাঠানো হয়েছে।
আহতদের মানসিক ট্রমা বা আঘাতের বিষয়ে ডা. সায়েদুর রহমান বলেন, আন্দোলনে আহতদের মানসিক ট্রমা বা আঘাতের বিষয়ে চিকিৎসার জন্য ইনস্টিটিউট অফ মেন্টাল হেলথে একটি কেন্দ্রীয় স্থাপনা স্থাপন করা হবে এবং দেশের সরকারি বেসরকারি যারা এ সম্বন্ধে অভিজ্ঞ আছেন, তাদের এই নেটওয়ার্কের আওতায় যুক্ত করা হবে। সেখানে টেলি মেডিসিনের মাধ্যমে স্ক্রিনিং হবে এবং ইন পার্সন আহতদের কাউন্সিলিয়ের মাধ্যমে সেবা দেয়া হবে।
আহতদের বিদেশে পাঠানো নিয়ে স্বাস্থ্য ও পরিবার কল্যাণ মন্ত্রণালয়ের বিশেষ সহকারী বলেন, এটা নিয়ে মানুষের মধ্যে কনফিউশন আছে, বিভ্রান্তি আছে। এটা আমরা স্পষ্ট করতে চাই, বাংলাদেশ সরকারের পক্ষ থেকে আমরা স্পষ্ট করতে চাই, যার যার প্রয়োজন ও উন্নত চিকিৎসা পাওয়ার সম্ভাবনা আছে বাংলাদেশ সরকারের পক্ষ থেকে সর্বোচ্চ চেষ্টা করা হচ্ছে। আপনারা ইতোমধ্যে জেনেছেন রোগি এয়ার অ্যাম্বুলেন্সের মাধ্যমে শিফ্ট করা হয়েছে। আজকেও একজন যাবেন। গতকালও একজন গিয়েছেন। যখনই যার প্রয়োজন সেই রোগীদেরকে উন্নত চিকিৎসা নিশ্চিত হওয়ার সাথে সাথে সুনিদিষ্ট পদ্ধতি মেনে সেই হাসপাতাল থেকে সুপারিশের ভিত্তিতে একটি বিশেষজ্ঞ টিমের মাধ্যমে স্বাস্থ্য ও পরিবার ও কল্যাণ মন্ত্রণালয় থেকে তাদেরকে বিদেশে হাসপাতালে পাঠানোর সব রকম ব্যবস্থা করা হচ্ছে। এছাড়াও দীর্ঘমেয়াদী পুনর্বাসনে ব্যবস্থা করা হচ্ছে।
এ সময় জুলাই শহিদ স্মৃতি ফাউন্ডেশনের সাধারণ সম্পাদক ও বৈষম্যবিরোধী ছাত্র আন্দোলনের অন্যতম সমন্বয়ক সারজিস আলম এবং প্রধান নির্বাহী কর্মকর্তা মীর মাহবুবুর রহমান স্নিগ্ধ উপস্থিত ছিলেন।