স্বৈরাচারের দোসরদের ব্যাপারে নাটকের দলগুলোকে সিদ্ধান্ত নিতে হবে
যুগান্তর প্রতিবেদন
প্রকাশ: ০৪ নভেম্বর ২০২৪, ০৬:১৬ পিএম
‘দেশ নাটক’ প্রযোজিত ‘নিত্যপুরাণ’ নাটকের প্রদর্শনী বন্ধ করা নিয়ে নিজেদের অবস্থান পরিষ্কার করেছে শিল্পকলা একাডেমি। সোমবার (৪ নভেম্বর) প্রধান উপদেষ্টার প্রেস উইংয়ের ফেসবুক পেজে প্রকাশিত একাডেমির প্রেস বিজ্ঞপ্তিতে বলা হয়েছে, অন্তর্বর্তীকালীন সরকার সর্বাবস্থায় জনগণের, শিল্পচর্চার ও সাংস্কৃতিক প্রতিষ্ঠানের নিরাপত্তা নিশ্চিতে বিশ্বাস করে। তবে কোনো দলের ভেতরে বিতর্কিত কেউ যদি থাকে, তাদের ব্যাপারে দলের পক্ষ থেকেই সিদ্ধান্ত নিতে হবে।
গত শনিবার (২ নভেম্বর) শিল্পকলা একাডেমির জাতীয় নাট্যশালায় ‘নিত্যপুরাণ’ নাটকের প্রদর্শনী চলাকালে একদল লোক শিল্পকলার গেটে জড়ো হন। দেশ নাটকের সদস্য এহসানুল আজিজ বাবুর বিরুদ্ধে অন্তর্বর্তী সরকারের বিরুদ্ধাচরণের অভিযোগ করে তাকে তাদের হাতে তুলে দিতে বলেন বিক্ষুব্ধরা।
এ সময় পরিস্থিতি বেগতিক দেখে নাটকের প্রদর্শনী বন্ধ করে দেন একাডেমির মহাপরিচালক সৈয়দ জামিল আহমেদ।প্রদর্শনী বন্ধের ব্যাখ্যা দিয়ে বিবৃতিতে শিল্পকলা একাডেমি বলেছে, ‘পরিস্থিতি নিয়ন্ত্রণের বাইরে চলে যাবার উপক্রম হলে তখন অভিনয়শিল্পী ও দর্শকদের নিরাপত্তার কথা ভেবে ‘দেশ’ নাটকের সদস্যদের সঙ্গে কথা বলে দর্শকের নিকট দুঃখপ্রকাশ করে প্রদর্শনী বন্ধ করার সিদ্ধান্ত নেওয়া হয়।’
নাট্যচর্চায় যেন বিঘ্ন না ঘটে সে ব্যাপারে সরকারের সচেষ্ট ভূমিকার কথা উল্লেখ করে প্রেস বিজ্ঞপ্তিতে বলা হয়েছে, ‘বাংলাদেশের হাজার বছরের নাটকের ইতিহাস আছে। নাটকের মাধ্যমেই সমাজের ত্রুটি বিচ্যুতি ও বিকল্প ধারণা তুলে ধরা সম্ভব। তাই যারা নাটক করতে চায় তাদের নাটক করতে দিতে হবে। নাটক দেখেই দর্শক বিবেচনা করবে তাদের নাটক তারা গ্রহণ করবে কি না। মতাদর্শ ও শিল্পকলার হাজার মালভূমির এই বাংলাদেশে সকল দলের নাটক করার বিষয়ে বাংলাদেশ শিল্পকলা একাডেমির সার্বিক সহযোগিতা রয়েছে।’
তবে এক্ষেত্রে নাটকের দলগুলোর প্রতি বিশেষ নির্দেশনাও দিয়েছে একাডেমি। কোনো নাটকের দলে স্বৈরাচারের মতাদর্শ লালনকারী কেউ থাকলে তাদের ব্যাপারে দলগুলোকে সিদ্ধান্ত নেওয়ার তাগিদ দিয়ে বিবৃতিতে বলা হয়েছে, ‘জুলাই বিপ্লবোত্তর বাংলাদেশে কোনো ব্যক্তির কারণে নাটকের দল যেন ক্ষতিগ্রস্ত না হয় সে প্রচেষ্টা সাংস্কৃতিক সংগঠন বা নাটকের দলের থাকা উচিত। কোনো দলের ভেতরে বিতর্কিত কেউ যদি থাকে, যারা জুলাই গণঅভ্যুত্থানকে অস্বীকার করে এবং স্বৈরাচারীর দোসর হয়ে ফ্যাসিস্ট সরকারের কার্যক্রমকে এখনো সমর্থন করে তাহলে দলের পক্ষ থেকেই তাদের বিষয়ে সিদ্ধান্ত নিতে হবে। বর্তমান অন্তর্বর্তীকালীন সরকার বা বাংলাদেশ শিল্পকলা একাডেমি এসব গণহত্যার দোসর বা সমর্থনকারীদের তিরস্কার করে, নিন্দা জানায়।’
প্রসঙ্গত, দেশ নাটকের সদস্য এহসানুল আজিজ বাবুর বিরুদ্ধে অন্তর্বর্তী সরকারের প্রধান উপদেষ্টাসহ বেশ কয়েকজন উপদেষ্টার ছবি বিকৃত করে ফেসবুকে পোস্ট করার অভিযোগ রয়েছে। সমালোচনার মুখে পড়ে নিজের ফেসবুক প্রোফাইল থেকে বিকৃত ছবি সম্বলিত পোস্টটি সরিয়ে নিয়েছেন তিনি।