আন্তর্জাতিক সেমিনারে বক্তারা
একীভূত রাষ্ট্রেই ফিলিস্তিন সমস্যার সমাধান হবে
যুগান্তর প্রতিবেদন
প্রকাশ: ০২ নভেম্বর ২০২৪, ১০:৪৩ পিএম
ফিলিস্তিন ও ইসরাইল মিলে এক রাষ্ট্র গঠনের মাধ্যমে মধ্যপ্রাচ্যে ফিলিস্তিন সমস্যার স্থায়ী সমাধান হতে পারে। এক্ষেত্রে রাজনৈতিক ঐকমত্যের বিকল্প নেই। বাংলাদেশের লড়াই এবং ফিলিস্তিনের লড়াই এক ও অভিন্ন। এখানেও মানুষ সাম্রাজ্যবাদের বিরুদ্ধে লড়াই করছে।
শনিবার জাতীয় প্রেস ক্লাবের মওলানা আকরাম খাঁ হলে বাংলাদেশ কংগ্রেস আয়োজিত ‘ফিলিস্তিন-ইসরাইল সংকট : সমাধান কোন পথে’ শীর্ষক আন্তর্জাতিক সেমিনারে বক্তারা এসব কথা বলেন। তারা বলেন, জাতিসংঘের তত্ত্বাবধানে আদি ফিলিস্তিন ভূখণ্ডে ‘জেরুজালেম’ বা ‘কেনান’ নামে একটি গণতান্ত্রিক স্বাধীন রাষ্ট্র গঠন করতে হবে। যেখানে মুসলিম ও ইহুদিরা মিলেমিশে বসবাস করবে।
তারা আরও বলেন, ফিলিস্তিনিদের মুসলিম হিসাবে নয়, মানুষ হিসাবে বিবেচনা করে তাদের স্বাভাবিকভাবে বেঁচে থাকার ব্যবস্থা করতে হবে। ফিলিস্তিনের প্রতি জাতিসংঘ বা বিশ্বের পরাশক্তিগুলো সঠিক দায়িত্ব পালন করছে না। এমনকি মুসলিম বিশ্বের সবাই নিজেদের স্বার্থ নিয়ে ব্যস্ত। মুসলিম দেশগুলোকে ঐক্যবদ্ধ হয়ে ফিলিস্তিন সমস্যার সমাধানে উদ্যোগী হতে হবে। তবে যুদ্ধ বা সংঘাতের মাধ্যমে নয়, ফিলিস্তিন-ইসরায়েল সমস্যার সমাধান হতে হবে রাজনৈতিক ও কূটনৈতিকভাবে।
সেমিনারে জ্যেষ্ঠ আইনজীবী মোহসীন রশিদ বলেন, গাজা উপত্যকায় কয়েক হাজার টন বোমা নিক্ষেপ করেছে ইসরাইল। সেখানে নির্বিচারে নারী ও শিশুদের হত্যা করা হচ্ছে। এ পর্যন্ত প্রায় ৫০ হাজার মানুষকে হত্যা করা হয়েছে। কিন্তু এ নিয়ে আরব লীগ, ওআইসির কোনো মাথাব্যথা নেই। একমাত্র ইরান তাদের পক্ষে দাঁড়িয়েছে।
লেখক ও রাজনৈতিক বিশ্লেষক ফরহাদ মজহার বলেন, ফিলিস্তিনে মুসলিম-ইহুদি লড়াই হচ্ছে না, সেখানে সাম্রাজ্যবাদের বিরুদ্ধে লড়াই হচ্ছে। সেই লড়াই আমাদের ছাত্র-জনতা ৫ আগস্ট শুরু করেছে। আমাদের লড়াইটা আন্তর্জাতিক লড়াই থেকে ভিন্ন কিছু নয়। আমাদের লড়াই ইরানের লড়াই থেকেও ভিন্ন কিছু নয়। আমরা লড়ছি মার্কিন সাম্রাজ্যবাদী শক্তির বিরুদ্ধে। যারা ইন্ডাস্ট্রিয়াল কিলিং করছে। তাদের কোনো অর্থনীতি নেই, তাদের একমাত্র অর্থনীতি হলো যুদ্ধাস্ত্র বিক্রি করা। তিনি বলেন, আওয়ামী লীগ বলত খেলা হবে। কিন্তু তরুণরা দেখিয়েছে খেলা কাকে বলে। এই লড়াই শেষ হবে বাংলাদেশ ও ফিলিস্তিনি জনগণের মুক্তির মধ্য দিয়ে।
সভাপতির বক্তৃতায় বাংলাদেশ কংগ্রেসের চেয়ারম্যান অ্যাড. কাজী রেজাউল হোসেন বলেন, মানুষ সভ্যতার চরম শিখরে উঠলেও ফিলিস্তিনিদের প্রতি ইসরাইলের বর্বরতা মানবসভ্যতাকে প্রশ্নবিদ্ধ করেছে। দশকের পর দশক মানবেতর জীবন-যাপন করা ফিলিস্তিনিদের দুঃখ কেউ দেখে না।
বাংলাদেশ কংগ্রেসের মহাসচিব অ্যাড. মো. ইয়ারুল ইসলামের সঞ্চালনায় সেমিনারে আরও বক্তৃতা করেন, সাবেক বিচারপতি আব্দুস সালাম মামুন, বাংলাদেশ মুসলিম লীগের চেয়ারম্যান অ্যাডভোকেট মোহসীন রশীদ, সাবেক সিনিয়র সচিব ও কূটনীতিক মসয়দ মান্নান, সাবেক ক‚টনীতিক মেজর জেনারেল (অব.) আমসাআ আমিন, রাজশাহী বিশ্ববিদ্যালয়ের আরবি বিভাগের অধ্যাপক ড. ইফতিখারুল আলম মাসউদ, ইসলামি চিন্তাবিদ ড. মুহাম্মদ ঈসা শাহেদী, বাংলাদেশ লেবার পার্টির চেয়ারম্যান ডা. মোস্তাফিজুর রহমান ইরান, গণমুক্তিজোটের চেয়ারম্যান ড. শাহরিয়ার ইফতেখার ফুয়াদ, জাতীয় হিন্দু মহাজোটের চেয়ারম্যান অ্যাডভোকেট গোবিন্দচন্দ্র প্রামাণিক, বাংলাদেশ গণআজাদী লীগের সভাপতি মোহাম্মদ আতা উল্লাহ খান, গণঅধিকার পরিষদের সদস্য সচিব মো. ফারুক হাসান, এবি পার্টির কেন্দ্রীয় নেতা ব্যারিস্টার সানী আব্দুল হক প্রমুখ।