মানবাধিকার কমিশনে জাতিসংঘের ফ্যাক্ট ফাইন্ডিং প্রতিনিধিদল
সুষ্ঠু ও নিরপেক্ষ তদন্তে সহযোগিতার আশ্বাস
যুগান্তর প্রতিবেদন
প্রকাশ: ২৮ অক্টোবর ২০২৪, ১০:৪০ পিএম
জাতীয় মানবাধিকার কমিশনের চেয়ারম্যান ড. কামাল উদ্দিন আহমেদের সঙ্গে সাক্ষাৎ করেছে গণ-অভ্যুত্থানে সংঘটিত মানবাধিকার লঙ্ঘনের ঘটনা তদন্তে গঠিত জাতিসংঘের ফ্যাক্ট ফাইন্ডিং দলের প্রধান রোরি মুঙ্গভেনের নেতৃত্বে দুই সদস্যের প্রতিনিধি দল।
সোমবার দুপুরে কমিশন কার্যালয়ে সাক্ষাৎকালে সুষ্ঠু ও নিরপেক্ষ তদন্তের লক্ষ্যে জাতিসংঘের ফ্যাক্ট ফাইন্ডিং দলকে সর্বাত্মক সহযোগিতার আশ্বাস দেন কমিশনের চেয়ারম্যান। পাশাপাশি কমিশনকে শক্তিশালীকরণ এবং বর্তমান সীমাবদ্ধতা সম্পর্কে আলোচনা হয়। এ সময় কমিশনের সার্বক্ষণিক সদস্য মো. সেলিম রেজা, সচিব এবং ঊর্ধ্বতন কর্মকর্তারা উপস্থিত ছিলেন।
ছাত্র-জনতার বিক্ষোভ চলাকালে ও গণ-অভ্যুত্থান পরবর্তী সময়ে কমিশনে কী ধরনের অভিযোগ এসেছে এ বিষয়ে জানতে চায় জাতিসংঘের প্রতিনিধিদল। কমিশন চেয়ারম্যান তাদেরকে জানান, আন্দোলনের শুরু থেকেই কমিশন নিবিড়ভাবে পরিস্থিতি পর্যবেক্ষণ করে।
পাশাপাশি জুলাই মাসের প্রথম থেকে গণমাধ্যমে বিবৃতি দেওয়ার মাধ্যমে অহিংস আন্দোলনকে সমর্থন দিয়ে, তাদের দাবির ন্যায্যতা বিষয়ে একমত প্রকাশ করে সরকারসহ সব পক্ষকে শান্তিপূর্ণ সমাধানে এগিয়ে আসার আহ্বান জানিয়েছে।
এরপরই আন্দোলনে সহিংসতা ও প্রাণহাণির ঘটনায় গভীর শঙ্কা প্রকাশ করে মানবাধিকার লঙ্ঘনের প্রকৃত তথ্য অনুসন্ধানের লক্ষ্যে কমিশনের পরিচালক (অভিযোগ ও তদন্ত) এবং জেলা ও দায়রা জজের নেতৃত্বে ৫ সদস্যবিশিষ্ট কমিটি গঠন করেছে। তদন্ত কমিটি কাজের প্রয়োজনে বৈষম্যবিরোধী ছাত্র আন্দোলন চলাকালে আহত-নিহত শিক্ষার্থীদের পরিবার, হাসপাতালের চিকিৎসক, আন্দোলনকারী শিক্ষার্থী ও সমন্বয়কারীসহ মোট ১১৫ জনের সাক্ষ্য গ্রহণ করেছে। ইতোমধ্যে, কমিটি একটি বিস্তৃত তদন্ত প্রতিবেদন প্রণয়ন করেছে।
আলোচনাকালে মানবাধিকার কমিশনের সীমাবদ্ধতা সম্পর্কে জানতে চায় প্রতিনিধিদল। সম্প্রতি অন্তর্বর্তী সরকারের গঠিত গুম বিষয়ক কমিশনকে বিভিন্ন বাহিনী ও গোয়েন্দা সংস্থাসমূহের ওপর সব ধরনের তদন্তের এখতিয়ার দেওয়ার বিষয়টি উলেখ করে কমিশন চেয়ারম্যান বলেন, জাতীয় মানবাধিকার কমিশনকেও এ ধরনের এখতিয়ার দেওয়া হলে কমিশন আরও কার্যকর ভূমিকা পালন করতে পারত ও পারবে।
কমিশনকে অধিকতর শক্তিশালীকরণের সরকারের আমলে জাতীয় মানবাধিকার কমিশন আইন সংশোধনের প্রস্তাব দিলেও কোনো ফলপ্রসূতা আসেনি তাই বর্তমান অন্তর্বর্তী সরকারের কাছে এ ব্যাপারে সহসাই প্রস্তাবনা পাঠানো হবে। আইনের বিভিন্ন সীমাবদ্ধতা দূর করতে পারলে কমিশন শক্তিশালী হয়ে উঠবে। জাতিসংঘের প্রতিনিধিদল কমিশনকে শক্তিশালীকরণের প্রয়োজনীয়তা ও জাতীয় মানবাধিকার কমিশনের কার্যক্রম সম্পর্কে জাতিসংঘ মানবাধিকার কমিশনার ফলকার টুর্কের কাছে উপস্থাপন করবে বলে আশ্বাস দেয়।