নিত্যপণ্যের মূল্যবৃদ্ধি রোধে প্রতিযোগিতা কমিশনের সংস্কার দাবি
![Icon](https://cdn.jugantor.com/uploads/settings/icon_2.jpg)
যুগান্তর প্রতিবেদন
প্রকাশ: ২৭ অক্টোবর ২০২৪, ০৯:৫২ পিএম
![নিত্যপণ্যের মূল্যবৃদ্ধি রোধে প্রতিযোগিতা কমিশনের সংস্কার দাবি](https://cdn.jugantor.com/assets/news_photos/2024/10/27/competition-commission-671e61c02dd7c.jpg)
নিত্যপণ্যের মূল্যবৃদ্ধিতে জড়িতদের বিরুদ্ধে আইনের যথাযথ প্রয়োগে প্রতিযোগিতা কমিশনের আইনি কাঠামোর সংস্কার দাবি করেছেন আইন বিশেষজ্ঞরা।
রোববার আদালত চত্বরে এক সংবাদ সম্মেলনে তারা এ দাবি করেছেন।
আইনি কাঠামোর সংস্কার বিষয়ে সুপ্রিম কোর্টের আইনজীবী ব্যারিস্টার নাজিয়া কবির বলেন, সত্যিকার অর্থে স্বচ্ছতা ও ন্যায়বিচার প্রতিষ্ঠা নিশ্চিত করার উদ্দেশ্যে প্রতিযোগিতা কমিশন আইন ২০১২ এর ৩৭ (২) ধারা অবিলম্বে বাতিলপূর্বক প্রতিযোগিতা আইন, ২০১২ সংস্কার করা জরুরি। তা না হলে কমিশনের ও সরকারের উপর জনগণের এবং অংশীজনদের আস্থার সংকট বাড়বে।
কমিশনের সাবেক পরিচালক খালিদ এ নাসের বলেন, প্রতিযোগিতা কমিশনের গুরুত্বপূর্ণ কাজ হলো বাজার এনালাইসিস করা। কেন নিত্যপণ্যের দাম বৃদ্ধি হলো, এর পেছনে কী কী কারণ থাকতে পারে, সেটা খুঁজে বের করা। কিন্তু দুঃখজনক হলেও সত্য প্রতিযোগিতা কমিশনে বাজার গবেষণা করার জন্য একজন অর্থনীতিবিদও নাই। আবার এ কমিশনে একজন আইন বিশেষজ্ঞ নাই। আমি মনে করি, প্রতিযোগিতা কমিশনকে যথাযথ ভূমিকা রাখতে হলে এখানে অর্থনীতিবিদ প্রয়োজন। আইনি কাঠামো স্বচ্ছ করা প্রয়োজন।
এ বিষয়ে প্রতিযোগিতা আইন বিশেষজ্ঞ ব্যারিস্টার হামিদুল মিসবাহ বলেন, আমি মনে করি দেশের ও জনগণের বৃহত্তর স্বার্থে প্রতিযোগিতা কমিশনকে আইনে উল্লেখিত পন্থায় পুনর্গঠন করতে হবে এবং কার বিরুদ্ধে মামলা করতে হলে বা শাস্তি দিতে হলে তা আইন মেনে করতে হবে। মামলার কার্যক্রম ভুলভাবে পরিচালনা করা বন্ধ করতে হবে, যা এখনও কমিশন করে আসছে। আর তা না হলে বিনিয়োগকারীরা বিনিয়োগ করা হতে বিরত থাকবে, যাতে করে বাজারে পণ্যের যোগানে ঘাটতি দেখা দেবে ও বাড়তে থাকবে পণ্যের মূল্য, অস্থিতিশীল হবে বাজার। আর এর খেসারত দিতে হবে দেশের জনগণ ও অর্থনীতিকে।
তিনি বলেন, প্রতিযোগিতা কমিশনকে সংস্কার করে নতুন রূপে গঠন ও আইনসম্মতভাবে কার্যাবলী সম্পাদন নিশ্চিতকরণে জাতীয় স্বার্থে হাইকোর্ট বিশেষ দিকনির্দেশনামূলক আদেশ প্রদান করতে পারে। প্রয়োজনে আমরা বিষয়ে হাইকোর্টের দৃষ্টিতে আনবো।
উল্লেখ্য, গত ২২ অক্টোবর খামারিদের ডেকে নিয়ে একটি সভা করেন বাংলাদেশ প্রতিযোগিতা কমিশন। সভায় কমিশনের সদস্য হাফিজুর রহমান বলেন, আমরা সিন্ডিকেট ভাঙবোই। আপনাদের সহযোগিতা আমাদের প্রয়োজন। যদি সহযোগিতা না করেন, তাহলে প্রতিযোগিতা কমিশনের ক্ষমতা আছে আপনাদের বড় অঙ্কের শাস্তি দেওয়ার।
এ সময় বাংলাদেশ ব্রিডারস এসোসিয়েশনের সভাপতি মাহবুবুর রহমান কমিশনের সদস্যদের উদ্দেশে বলেন, মামলা দিয়ে আপনারা পোলট্রি কোম্পানিগুলোকে এতো হ্যারাসমেন্ট করেছেন যে বিনিয়োগের পরিবেশ এখন নেই। মামলাগুলো আপনাদের প্রত্যাহার করা উচিত।
বাংলাদেশ ব্রিডারস এসোসিয়েশন এর সাবেক সভাপতি কাজী জাহিন হাসান বলেন, ডিমের বাজারে প্রতিদিন কয়েক হাজার উৎপাদনকারী ও পাইকারি বিক্রেতারা বেচাকেনা করে। এতো সংখ্যক লোক যখন একটা বাজারে বেচাকেনা করে সেই বাজারে কোনো সিন্ডিকেট থাকতে পারে না। ডিমের বাজার একটা প্রতিযোগিতাপূর্ণ বাজার। প্রতিযোগিতাপূর্ণ বাজারে সিন্ডিকেট কাজ করতে পারে না। বড় খামারিগুলো মোট ডিমের চাহিদার ২০% উৎপাদন করে, আর বাকি ৮০% উৎপাদন করে প্রান্তিক ছোট খামারিগুলো। বন্যা, গরম ও অতিবৃষ্টির কারণে অনেক প্রান্তিক খামার ধ্বংস হয়ে গেছে। এতে করে ডিমের উৎপাদন হ্রাস পেয়েছে। চাহিদার তুলনায় বাজারে ডিমের যোগান কম। তা ছাড়া মুরগীর খাদ্যের মূল্যও বৃদ্ধি পেয়েছে। কাজী জাহিন হাসান আরও বলেন, আপনারা দয়া করে একজন কমিশনে একজন অর্থনীতিবিদকে নিয়োগ দিয়ে বাজারটাকে বিশ্লেষণ করেন, তাহলে কোথায় সমস্যা আপনারা বুঝতে পারবেন।