সেন্টমার্টিন ও পার্বত্যাঞ্চল ভ্রমণে নিষেধাজ্ঞা প্রত্যাহারের দাবি
যুগান্তর প্রতিবেদন
প্রকাশ: ২৪ অক্টোবর ২০২৪, ১০:৪১ পিএম
সম্প্রতি সরকারের নেওয়া সেন্টমার্টিন বিষয়ক সিদ্ধান্তের প্রতিবাদ এবং পার্বত্য অঞ্চলে নিষেধাজ্ঞা বাতিলের দাবি জানিয়েছে পর্যটন শিল্পের বাণিজ্য সংগঠন ট্যুর অপারেটরস এসোসিয়েশন অব বাংলাদেশ (টোয়াব)।
একইসঙ্গে সংগঠনটি ট্যুর অপারেটর সেবার উপর ভ্যাট প্রত্যাহার এবং ট্যুর অপারেটর ও ট্যুরগাইড আইনের বিধিমালায় উল্লেখিত জামানত বাতিল ও বিভিন্ন অসংগতি দূরীকরণের দাবিও জানায়।
বৃহস্পতিবার জাতীয় প্রেসক্লাবের আবদুস সালাম হলে আয়োজিত এক সংবাদ সম্মেলনে এসব দাবি জানানো হয়।
সংবাদ সম্মেলনে টোয়াবের সভাপতি মো. রাফেউজ্জামান বলেন, আমাদের প্রবল আপত্তি সত্বেও সেন্টমার্টিনে রাত্রিযাপন ও পর্যটক যাতায়াত সীমিত করার সিদ্ধান্ত নিয়েছে সরকার। সরকারের পক্ষ থেকে বলা হয়, নভেম্বর মাসে সেন্টমার্টিনে কোনো পর্যটক রাত্রিযাপন করতে পারবেন না। আর ডিসেম্বর ও জানুয়ারি মাসে দিনে সর্বোচ্চ দুই হাজার পর্যটক সেন্টমার্টিন ভ্রমণ করতে পারবেন এবং রাত্রিযাপন করতে পারবেন। আর ফেব্রুয়ারি মাসে সেন্টমার্টিনে সরকার পর্যটক যাতায়াত বন্ধ রাখবে পরিষ্কার পরিচ্ছন্নতার জন্য।
তিনি বলেন, এই সিদ্ধান্তের ফলে করে পর্যটন শিল্প ব্যাপক ক্ষতিগ্রস্থ হবে এবং সাধারণ উদ্যোক্তারা সর্বশান্ত হয়ে যাবে। সেন্টমার্টিনে প্রায় ১০ হাজার মানুষ বাস করে। এরা সবাই পর্যটনের উপর নির্ভরশীল। সেন্টমার্টিনে পর্যটন বন্ধ হলে এরা সবাই বেকার হয়ে যাবে। সেই সাথে উদ্যোক্তাদের আর্থিক বিনিয়োগ এখন ঝুঁকির মুখে পড়বে। শুধু তাই নয়, পার্বত্য অঞ্চলে নিষেধাজ্ঞার কারনেও পর্যটন ক্ষতিগ্রস্থ হচ্ছে এবং উদ্যোক্তাদের ব্যাপক ক্ষতি হচ্ছে।
তিনি বলেন, ট্যুর অপারেটরদের নিবন্ধন সংক্রান্ত নতুন গেজেটে কিছু নিয়ম ও শর্তাবলী উল্লেখ করা হয়েছে, যা মেনে চলা আমাদের জন্য অত্যন্ত কঠিন। বিধিমালায় দেখা যায় ট্যুর অপারেটর ও ট্যুর গাইড (নিবন্ধন ও পরিচালনা) লেইসেন্স আবেদনের ক্ষেত্রে ৫০ হাজার টাকা নিবন্ধন সনদ ফি, ১০ লক্ষ টাকা ব্যাংক স্থিতির সার্টিফিকেট ও ৩ লক্ষ টাকা জামানত প্রদান করতে হবে যা ট্যুর অপরেটরদের জন্য সম্ভবপর নয়। এতে করে অদূর ভবিষ্যতে বাংলাদেশের পর্যটন শিল্পকে এগিয়ে নিতে নতুন উদ্দোক্তারা নিরুৎসাহিত হবে।
এসময় ট্যুর অপারেটর সেবার উপর ১৫ শতাংশ মূসক ধার্য করার ফলে প্যাকেজ মূল্য তথা ট্রাভেল কস্ট বৃদ্ধি পাচ্ছে উল্লেখ করে তিনি বিকাশমান পর্যটন শিল্পের স্বার্থে ট্যুর অপারেটরদের সেবার উপর মূসক আরোপ রহিতকরার দাবিও জানান।
এছাড়াও সংবাদ সম্মেলনে টোয়াবের পক্ষ থেকে সেন্ট মার্টিনে পরিবেশের ভারসাম্য রক্ষা ও সিঙ্গেল ইউজ প্লাস্টিক ব্যবহার কঠোরভাবে বন্ধ করে রাত্রিযাপনসহ যাবতীয় বিধি-নিষেধ ব্যাতিরেকে পর্যটন চালু রাখা, টেকনাফ থেকে সেন্ট মার্টিন ভ্রমণে বিকল্প পথ তৈরী করা, ট্যুর অপারেটর ও ট্যুর গাইড (নিবন্ধন ও পরিচালনা) লাইসেন্স ও নবায়ন ফি ও ব্যাংক স্থিতি কমানো ও জামানত বাতিল, ট্যুর অপারেটর সেবার উপর মূসক প্রত্যাহার, সারা বছরব্যাপী সুন্দরবনে পর্যটকবহী জাহাজ চলাচল চালু রাখা, পার্বত্য অঞ্চলে নিষেধাজ্ঞা প্রত্যাহর ও পর্যটকদের জন্য পারমিশন গ্রহণ সহজীকরণ করার দাবিও জানানো হয়।
এসময় সংবাদ সম্মেলনে ট্যুর অপারেটর অ্যাসোসিয়েশন অব বাংলাদেশ (টোয়াব) সহ পর্যটন শিল্পের সঙ্গে জড়িত অন্যান্য সংগঠনের নেতৃবৃন্দ উপস্থিত ছিলেন।